লাবিবা-লামিসাকে নতুন জীবন দিলেন ৩৮ চিকিৎসক
২২ মার্চ ২০২২সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক দলের প্রধান এবং হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আশরাফ-উল হক জানান, সোমবার শিশু দুটির যোনীদ্বার ও মলদ্বার প্রথমে পৃথক করা হয়৷ শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা এটা করেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওদের যোনীদ্বার, পায়ুপথ ও প্রস্রাবের রাস্তা একসঙ্গে জোড়া লাগানো ছিল৷ ওগুলোর ক্ষতি না করে পৃথক করা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল৷ আমরা সেটা সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছি৷’’ তাদের জোড়া মেরুদণ্ড আলাদা করাও চ্যালেঞ্জের ছিল বলে জানান তিনি৷
অধ্যাপক আশরাফ-উল হক কাজল বলেন, ‘‘ওদের মেরুদণ্ড নীচের দিকে জোড়া লাগানো ছিল৷ স্পাইনাল কর্ডে যদি আঘাত লাগে, তাহলে স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে, এটা নিয়ে খুব ভয় ছিল৷ কিন্তু নিউরোসার্জনদের দল ওই অস্ত্রোপচারও সফলভাবে শেষ করেছেন৷’’
অস্ত্রোপচারকে ‘সফল’ দাবি করার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অধ্যাপক আশরাফ বলেন, ‘‘সফল বলছি, কারণ, দুটো বাচ্চা পৃথক হওয়ার পর তারা পা নাড়তে পারছে৷ যদি পা নাড়তে না পারতো, তাহলে আমরা বুঝতাম তাদের স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তারা দুজন পঙ্গু হয়ে যেতে পারতো৷’’
সকাল ৮টায় অস্ত্রোপচার শুরুর পর বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে শিশু দুটোকে আলাদা করা হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু তারপরও অনেক কাজ বাকি৷ আমরা ৮টা ২০ মিনিটে সব কাজ শেষ করতে সক্ষম হই৷ প্রথমে জ্ঞান ফেরে শিশু লাবিবার৷’’
এই অস্ত্রোপচারটি ১৩ ডিসেম্বর শিশুদের দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচারের সময় না করার কারণ জানাতে গিয়ে অধ্যাপক আশরাফ বলেন, ‘‘ওই দিন পৃথক করলে শিশু দুটির যোনীদ্বার বা পায়ুপথের মতো জটিল বিষয়গুলো আঘাতপ্রাপ্ত হতো৷’’
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার যদুনাথপুর গ্রামের লাল মিয়া-মনুফা বেগমের সন্তান লাবিবা-লামিসা৷ তাদের জন্ম ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল৷ জন্মের নয় দিন পর রংপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়৷ সেসময় তাদের এক দফা অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকেরা এক বছর পর আবার নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন৷ গত ১৩ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেলে তাদের দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচারের তিন মাস পর সোমবার তৃতীয় দফা অস্ত্রোপচার করে আলাদা করা হলো শিশু দুটিকে৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
গত বছরের ছবিঘরটি দেখুন...