1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লাদাখে মৃত্যু বাঙালি জওয়ানের

১৭ জুন ২০২০

তাঁর বাড়ি বীরভূম জেলার বেলগড়িয়া গ্রামে। নাম রাজেশ ওঁরাও। ভারত-চীন সংঘাতের বলি হলেন এই বঙ্গসন্তান। আজই তাঁর দেহ কফিনবন্দি হয়ে ঢোকার কথা গ্রামে।

https://p.dw.com/p/3duRj
ছবি: DW/H. Joshi

এই বছরই বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন রাজেশ ওঁরাও এর বাবা-মা। কিন্তু অবিবাহিত বোনের বিয়ে না দিয়ে তিনি কিছুতেই বিয়ে করতে চাইছিলেন না। শেষ পর্যন্ত অবিবাহিতা বোনের বিয়ে দেওয়া হলো না রাজেশের। লাদাখের গালওয়ানে চীনা সেনার হাতে মরতে হয়েছে রাজেশকে।

আনন্দবাজার জানাচ্ছে, বীরভূম জেলার মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়ায় রাকেশের গ্রাম শোকস্তব্ধ। বাবা সুভাষ ওঁরাও চাষ করেন। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শয্যাশায়ী। মা বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। বাবা সুভাষ ওঁরাও বলেছেন, তাঁর একটাই শান্তি, ছেলে লড়াই করে মারা গিয়েছে। যতক্ষণ পাল্টা জবাব না দেওয়া হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত তাঁর বেদনা ঘুচবে না।

গরিব পরিবার। আগে মাটির বাড়ি ছিল। রাজেশের টাকায় পাকা বাড়ি হয়েছে। রাজেশ প্রতি রোববার ফোন করতেন। গত রোববার ফোন আসেনি। তার আগের সপ্তাহে বলেছিলেন, পরিস্থিতি ভালো নয়। কবে ফোন করতে পারবেন জানেন না। ফোন এসেছে মঙ্গলবার। রাজেশের কাছ থেকে নয়। সেনাবাহিনীর তরফে। প্রথমে খবর দেওয়া হয়, রাজেশ গুরুতর আহত। তারপর মৃত্যুর খবর। সত্যিই ফোনটা আর করতে পারলেন না রাজেশ।

বাড়িতে এলেই কাশ্মীরের গল্প করতেন। লড়াইয়ের গল্প। কাশ্মীরের সৌন্দর্যের গল্প। সেই গল্পও অসমাপ্ত থেকে গেল। বিদায় নিতে হলো রাজেশকে। পাঁচ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে চাকরি করছিলেন। অনেক আশা ছিল, পরিবারকে দাঁড় করাবেন। সেই ইচ্ছেও পূর্ণ হলো না।

মারা গিয়েছেন রাজেশের রেজিমেন্টের কম্যান্ডিং অফিসার কর্নেল সন্তোষ বাবুও। তাঁর বদলি হয়ে গিয়েছিল। বেশ কিছুদিন আগেই তাঁর লাদাখ ছেড়ে চলে আসার কথা। হয়নি, প্রথমে করোনা ও পরে চীনের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকায়। এর মধ্যে হায়দরাবাদে তাঁর নতুন বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। স্ত্রী ও বাচ্চাদের দিল্লি থেকে সেখানে পৌঁছবার কথা। তিনিও দিন গুনছিলেন কবে যাবেন সেখানে।

রোববার তিনি ফোন করেছিলেন বাবা-মাকে। বলেছিলেন, পরিস্থিতি দেখে তিনিও উদ্বিগ্ন। প্রবল উত্তেজনা রয়েছে। বাবা-মা বলেছিলেন, সাবধানে থাকতে। সন্তোষ বলেছিলেন, তিনি সাবধানে থাকবেন।

কিন্তু কাজটাই এমন যে সাবধানে আর থাকা হয়নি। মঙ্গলবার পরিবারের কাছে ফোন যায় তাঁর মারা যাওয়ার খবর নিয়ে।

বাবা পি উপেন্দ্র একই সঙ্গে শোকার্ত ও গর্বিত। তিনি বলেছেন, ''আমি নিজে সেনাবাহিনীতে যেতে চেয়েছিলাম। পারিনি। তাই চেয়েছিলাম ছেলে সেনাতে যোগ দিক। আত্মীয়রা মানা করেছিল। কিন্তু আমি বলেছিলাম, সেনাতে যোগ দিয়ে দেশসেবা করুক সন্তোষ। আমি গর্বিত, ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে।''

জিএইচ/এসজি(আবাপ, এএনআই, এনডিটিভি)