দুই মাসেরও একটু কম সময়ে দেড় কোটিরও বেশি মানুষকে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেয়া শেষ করেছে ব্রিটেন৷ দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়ে গেছে পাঁচ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে৷ করোনায় এ পর্যন্ত মোট এক লাখ ১৭ হাজার মানুষ মারা গেলেও মোট মৃতের সংখ্যার দিক থেকে তারা এখন বিশ্বে পঞ্চম৷ তাদের আগে আছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মেক্সিকো এবং ভারত৷ এছাড়া সংক্রমণের হারও ধীরে ধীরে কমছে ব্রিটেনে৷ ফলে লকডাউন তুলে নিয়ে অর্থনীতির চাকাকে সচল করা এবং স্কুল খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে জনসনের ওপর চাপ দিয়ে যাচ্ছেন বিরোধী দলের সাংসদ এবং ব্যবসায়ীরা৷
কিন্তু ৮ মার্চ থেকে সব স্কুল খুলে দেয়া হবে কিনা জানতে চাওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী শুধু বলেছেন খুব ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেবেন, কারণ, তাড়াহুড়ো করে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি নিলে আবার বিপর্যয় নেমে আসতে পারে ব্রিটেনের ওপর৷ লকডাউন তুলে নেয়ার প্রশ্নেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তার একই জবাব- সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা দূরে রাখতে যা করণীয় তা নিশ্চিত করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি৷
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি এসব বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন বরিস জনসন৷ সোমবার গুরুত্বপূর্ণ এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আগাম ধারণা দিতে গিয়ে বরিস জনসন বলেছেন, ‘‘আমরা সতর্কভাবে এমন এক পথ ধরতে চাইবো যে পথ থেকে আর ফিরতে না হয়৷ সংক্রমণের হার দেখে যদি মনে হয়, বর্তমান পরিকল্পনা থেকে আরেকটু সরতে হবে, অথবা যদি মনে হয় আরো ধীরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাহলে কোনো দ্বিধা না করে আমরা তা-ই করবো৷’’
এসিবি/কেএম (রয়টার্স)
-
বিদায়, ‘লকডাউন হিরো’ ক্যাপ্টেন টম!
যে কারণে শিরোনামে
গত বছর করোনা সংকট যখন যুক্তরাজ্যকে কাবু করে ফেলেছে, তখন দেশের স্বাস্থ্য কর্মীদের শ্রদ্ধা জানাতে এগিয়ে আসেন শতবর্ষী টম৷ তিনি জানান, এনএইচএসের কর্মীদের সহায়তায় অর্থ সংগ্রহ করতে নিজের বাগানে ১০০ বার হাঁটবেন তিনি৷ তাতে যে টাকা উঠবে, সব দেবেন স্বাস্থ্যকর্মীদের৷ বলেছিলেন,‘‘হিপের হাড় ভেঙে গেলেও আমি থামবো না৷’’ ওয়াকারের সাহায্যে হাঁটতে থাকেন প্রতিদিন৷
-
বিদায়, ‘লকডাউন হিরো’ ক্যাপ্টেন টম!
ব্যাপক সাড়া
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস)-এর জন্য নিজের বাগানে হেঁটেই তিন মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা) অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন তিনি৷ সারা বিশ্ব থেকে অনেক মানুষ অর্থ দান করেন টমের অভিনব ডাকে৷
-
বিদায়, ‘লকডাউন হিরো’ ক্যাপ্টেন টম!
মারা গেলেন ক্যাপ্টেন টম
‘ক্যাপ্টেন টম’ পাঁচ বছর ধরে ক্যান্সারের সাথে লড়াই করেছেন৷ ১০০ বছর বয়েসি টম মঙ্গলবার করোনা সংক্রমণজনিত নিউমোনিয়ায় ভুগে লন্ডনের বেডফোর্ড হাসপাতালে মারা গেলেন৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়া এই সাবেক ক্যাপ্টেন করোনাকালে তার মানবিকতার, অদম্য মনের জোরের জন্য গোটা বিশ্বের নজর কাড়েন৷
-
বিদায়, ‘লকডাউন হিরো’ ক্যাপ্টেন টম!
টমের জন্য শোক ও শ্রদ্ধা
করোনাকালে টম বিশ্বকে শিখিয়েছিলেন মানবিকতা ও কৃতজ্ঞতার পাঠ৷ তার মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাজ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া৷ দেশের বাইরে থেকেও আসছে শোকবার্তা৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও তাকে স্মরণ করে টুইট করেছেন৷ উত্তর লন্ডনে টমের বাসার গেট ভরে যায় মানুষের পাঠানো ফুল ও বার্তায়৷
-
বিদায়, ‘লকডাউন হিরো’ ক্যাপ্টেন টম!
রানির বার্তা
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গত বছরই একশ বছর বয়সেও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি ওভাবে শ্রদ্ধা জানিয়ে অর্থ সংগ্রহ করা এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের অবদানের জন্য ক্যাপ্টেন টমকে নাইট উপাধি দিয়েছিলেন৷ ‘স্যার টম’ বিদায় নেয়ার পর পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে শোকজ্ঞাপন করেন ব্রিটেনের রানি৷
-
বিদায়, ‘লকডাউন হিরো’ ক্যাপ্টেন টম!
ক্যাপ্টেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা
ক্যাপ্টেন টম শুধু যুক্তরাজ্য নয়, বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও আলোচিত হয়েছেন একজন ‘লকডাউন হিরো’ হিসাবে৷ তাঁর কাজের প্রতি সম্মান জানাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সবাইকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় করতালির মাধ্যমে ক্যাপ্টেন টমের প্রতি তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাতে অনুরোধ করেন৷ ব্রিটিশ সংসদেও পালিত হয় টমের স্মৃতিতে এক মিনিট নীরবতা৷ প্রিমিয়ার লিগের খেলা চলাকালীন ফুটবল স্টেডিয়ামেও স্মরণ করা হয় তাঁকে৷
-
বিদায়, ‘লকডাউন হিরো’ ক্যাপ্টেন টম!
ক্যাপ্টেনের স্মৃতিতে...
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে অসংখ্যা মানুষ একসাথে হাততালি দিয়ে স্মরণ করেন ক্যাপ্টেনকে৷ শুধু রাজনীতিকরাই নন, এতে যোগ দেন সামরিক সদস্য, খেলোয়াড়, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও দেশের স্বাস্থ্যকর্মীরাও৷
-
বিদায়, ‘লকডাউন হিরো’ ক্যাপ্টেন টম!
বিদায়, ক্যাপ্টেন টম মুর
আপামর জনসাধারণের মধ্যে জনপ্রিয় ক্যাপ্টেন টমের স্মৃতিতে যুক্তরাজ্যের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সাজানো হয় শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের হোর্ডিঙে৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে লন্ডনের বিখ্যাত পিকলি সার্কাসের চৌমাথায় টাঙানো হোর্ডিং৷ সেখানে জ্বলজ্বল করছে ক্যাপ্টেন টমের হাসিমুখ৷