1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এনজিওগুলোর কাজ খতিয়ে দেখছে সরকার

৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

​​​​​​​ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওগুলোকে যেসব শর্তে কার্যক্রম চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা থেকে সরে তারা অন্য কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ সরকার৷

https://p.dw.com/p/3P3f9
Myanmar Rohingya "Refugee Boy"
ছবি: Reuters/A. Abidi

শর্ত ভেঙে যেসব এনজিওর অন্য কাজে লিপ্ত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যাবে সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আবদুস সালাম জানিয়েছেন৷

এনজিও ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে দুই হাজার ৪৮৬টি এনজিও কাজ করছে, এরমধ্যে দুই হাজার ২৩২টি দেশি এবং ২৫৪টি বিদেশি৷

এই  ব্যুরোর উপপরিচালক ও রোহিঙ্গা বিষয়ক সেলের ফোকাল পয়েন্ট আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বৃহস্পতিবার ডয়চে ভেলেকে জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৮৯টি এনজিও কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদান নিয়েছে, এর মধ্যে ৫৫টি বিদেশি৷ কক্সবাজারে বর্তমানে দেশি-বিদেশি ৯৩টি এনজিও কাজ করছে৷

সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তিনটি এনজিওর প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে৷ ছয়টি এনজিওকে কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে৷

এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক আবদুস সালাম বৃহস্পতিবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের সময়কার ঘটনা নিয়ে জেলা প্রশাসক প্রতিবেদন দিয়েছেন৷ কেউ (এনজিও) নগদ টাকা দিয়েছে, কেউ গেঞ্জি বিতরণ করেছে৷ এনজিওগুলোকে এসব না করতে সব সময় নিষেধ করা হয়েছে৷ যত প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তার গাইডলাইনেও এসব বলা আছে৷

‘‘এই ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আরেকটু ভেতরে খতিয়ে দেখব অন্য এনজিওগুলো কতটুকু কপ্লায়েন্স, কতটুকু কী করেছ, আমাদের লিগ্যাল নির্দেশনা প্রতিপালন করছে কি না, তা যাচাই করছি৷''

জেলা প্রশাসক ছাড়াও শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনাররে কার্যালয়ের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানান আবদুস সালাম৷

তিনি বলেন, ''শুরু থেকে মিয়ারমারের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে) বিভিন্নভাবে ৪১টি এনজিওর বিরুদ্ধে তথ্য পেয়েছিলাম৷ ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে ছয়টির কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি এবং বাকিগুলোকে শর্ত সাপেক্ষ কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর পর দুটি এনজিওর বিরুদ্ধে রিপোর্ট পাওয়া গেছে৷ সম্প্রতি তিনটি এনজিওর সব কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে, এখন পর্যন্ত নয়টি এনজিওর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে৷''

আবদুস সালাম বলেন, ‘‘এনজিওগুলোর যে কাজ করার কথা ছিল তা থেকে সরে গিয়ে অন্য কাজ করছে বলে একটা পারসেপশন বা ধারণা তৈরি হয়েছে৷ পাবলিক পারসেপশন, সোশ্যাল পারসেপশন, সবকিছু মিলে একটা পারসেপশন তৈরি হয়েছে যে তারা মূল কাজের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ সবকিছু মিলিয়ে আমরা খতিয়ে দেখছি আসল ঘটনা কী৷ যারা ভিন্নধর্মী কাজ করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট পেলে অবশ্যই লিগ্যাল অ্যাকশন নেব৷ যারা সঠিকভাবে কাজ করছে তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই৷''

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি৷ গত ২ সেপ্টম্বর প্রত্যাবাসন কমিশনারের দায়িত্ব থেকে ওএসডি হয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে সংযুক্তি পাওয়া এই কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন জানিয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান৷

রোহিঙ্গাদের জন্য ধারালো অস্ত্র তৈরির অভিযোগ ওঠায় মুক্তি কক্সবাজার নামে একটি এনজিওর ছয়টি প্রকল্প সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷

প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারে ফিরে না যান এনিয়ে কিছু এনজিও তাদের ইন্ধন যোগাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷

এছাড়া ক্যাম্পের মধ্যে রোহিঙ্গাদের বিশাল সমাবেশ আয়োজনে অর্থ করা দিয়েছে এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে কি না, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তাও তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি৷

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান সম্প্রতি ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, কিছু কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের বোঝাচ্ছে তারা যেন নিজ দেশে না যায়৷ এনজিওরা বোঝাচ্ছে, নাগরিকত্বসহ কিছু শর্ত পূরণ না হলে যেন তারা না ফিরে যায়৷ কমিটি এসব এনজিওদের কাজ মনিটরিং করে তাদের চিহ্নিত করতে বলেছে৷''

রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা দেশি-বিদেশি এনজিওর কর্মকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকেও প্রশ্ন উঠেছিল৷ ওই কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তখন বলেছিলেন, ''কিছু এনজিও সেখানে ইল মোটিভ নিয়ে কাজ করছে বলে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে৷''

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তে ছুটতে থাকে৷ দুই বছরে এই সংখ্যা সাত লাখ ছাড়িয়েছে৷ তাদের আশ্রয় দেওয়া হয় কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে; সেখানে আগে আসা আরও চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে৷

শহীদুল ইসলাম/কেএম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য