1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
উদ্ভাবনইটালি

রেড ফায়ার অ্যান্ট : সিসিলির আতঙ্ক হয়ে উঠছে যে পিঁপড়া

২৪ জুলাই ২০২৪

বিশ্বায়নের এই যুগে শুধু যে কোনো পণ্যই বিশ্বের অপর প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে না, উদ্ভিদ ও প্রাণীও অযাচিতভাবে ভিন দেশে উদয় হচ্ছে৷ ইটালির সিসিলি দ্বীপে এক মারাত্মক পিঁপড়ার আবির্ভাব দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/4ih1g
Feuerameise
ছবি: Colourbox/P. Chaisanit

মাত্র কয়েক মিলিটার দীর্ঘ হলেও অন্যতম আক্রমণাত্মক প্রজাতির পোকা হিসেবে রেড ফায়ার অ্যান্ট পরিচিত৷ কৃষি বিজ্ঞানী ফার্দিনান্দো কালদারেলা সিসিলির সাইরাকিউজ অঞ্চলে সেই পোকা পর্যবেক্ষণ করছেন৷ তিনি পিঁপড়ার বাসা দেখিয়ে বলেন, ‘‘এমন বাসার অর্থ এই জমির উপর পিঁপড়া ইতোমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে৷ সেগুলি গাছের নীচের শিকড় খেয়ে নেয় এবং চাষের জন্য উপকারী পোকামাকড়ের উপরেও হামলা চালায়৷''

ইউরোপীয় ইউনিয়নে এই পিঁপড়া আক্রমণাত্মক প্রজাতির লাল তালিকার শীর্ষে রয়েছে৷ আসলে ইউরোপের মাটিতে এমন পোকা থাকতে পারে না বলে ধারণা করা হলেও গত বছরের হেমন্তকালে বিজ্ঞানীরা তার সন্ধান পেয়ে চমকে উঠেছিলেন৷ সাইরাকিউজ অঞ্চলে সেই পিঁপড়া প্রথম চোখে পড়েছিল৷

তার এক বছর আগেই কিন্তু ফার্দিনান্দো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সে সময়ে কেউ তাঁর কথায় কান দেয়নি৷ ফার্দিনান্দো বলেন, ‘‘এই পিঁপড়া বেশ বড়৷ সেই প্রজাতির সম্প্রসারণ প্রতিরোধ করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল৷ এভাবে রেড ফায়ার অ্যান্ট নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতো৷ কারণ ব্রাজিল, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেও এই পিঁপড়ার প্রসার প্রতিরোধ করতে পারেনি৷ ফলে কৃষিক্ষেত্রের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে৷''

ব্রাজিলই এই প্রজাতির আদি নিবাস৷ সেই পোকা কীভাবে এবং ঠিক কবে যে সিসিলিতে পৌঁছালো, তা এখনো জানা যায়নি৷ ফার্দিনান্দো মনে করিয়ে দেন, ‘‘এখনো পর্যন্ত এই হামলা নিয়ে হইচই হচ্ছে না৷ তেমন বড় ক্ষতিও হয়নি৷ কিন্তু পিঁপড়ার বাসার সংখ্যা মারাত্মক হারে বেড়ে গেলে শস্য, ফল ও শা-কসবজির চাষের বিশাল ক্ষতি হবে৷''

ইটালিতে রেড ফায়ার পিঁপড়ার হানা

বিশেষ করে যেসব এলাকায় মাটিতে পানি দেওয়া হয়, সেখানে এই পিঁপড়া স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে৷ যেমন প্লেগ্রাউন্ড বা ব্যক্তিগত বাগান৷ কারমেন কারুসো প্রথম কামড় খেয়ে ব্যথা পেয়ে বুঝতে পেরেছিলেন যে, সেই পিঁপড়া মোটেই স্থানীয় প্রজাতির নয়৷ তাঁর গোলাপের বাগান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷ সেই নেতিবাচক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে কারমেন বলেন, ‘‘গোলাপপ্রেমি হিসেবে সেটা আমার কাছে মারাত্মক অভিজ্ঞতা৷ আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে৷ অনেক ভালোবাসা দিয়ে আমি গোলাপের যত্ন নেই৷ যখন দেখি, এই পিঁপড়া আমার সাধের গোলাপ নষ্ট করে দিচ্ছে, তখন মনে হয় তারা যেন আমাকেই আহত করছে৷ এখনো জানি না, আমি কীভাবে এগুলিকে বিদায় করবো৷''

সিসিলির আঞ্চলিক প্রশাসনও এই পিঁপড়া নির্মূল করতে চায়৷ সম্প্রতি ফরেস্ট অফিসার জানলুকা ফেরলিতোকে বিশেষ কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে৷ তিনি সার্দিনিয়া থেকে একটি যন্ত্র আনিয়েছেন৷ সেটির মধ্যে একটি পাম্প ১৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার বাস্প পিঁপড়ার বাসার মধ্যে চালনা করে৷ এভাবে সিসিলির মানুষ অযাচিত অতিথিদের বিদায় করতে চান৷

প্রথম পরীক্ষার প্রায় ছয় সপ্তাহ পর জায়গাটি পরীক্ষা করার পালা৷ ভালো করে দেখেশুনে জানলুকা বলেন, ‘‘একটা পিঁপড়া এখনো ছিল৷ কিন্তু আরো পিঁপড়া দেখা যাচ্ছে না৷ এটা একটা পিঁপড়ার বাসা৷ হতে পারে, সেগুলি সেখান থেকে এখানে চলে এসেছে৷ এগুলিই রেড ফায়ার অ্যান্ট৷''

রেড ফায়ার অ্যান্ট ধ্বংস করতে ফার্দিনান্দো ইতোমধ্যে নিজেই এক পদ্ধতির সন্ধান করেছেন৷ তিনি সডাস্টের সঙ্গে পিঁপড়ার তরল বিষ মিশিয়ে তাতে চিনিও যোগ করেন৷

গুস্তাফ হোফার/এসবি