রাশিয়ার উপর আরো নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪আগামী শনিবার ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে৷ এই সময়কালে রাশিয়া ইউক্রেনের উপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে না পারলেও প্রবল চাপ বজায় রেখেছে৷ বিশেষ করে মার্কিন সহায়তা থমকে যাওয়ায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সম্প্রতি গোলাবারুদ ও অস্ত্রের অভাবে বেকায়দায় পড়েছে৷ এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার উপর আরো নিষেধাজ্ঞা চাপানোর তোড়জোড় চলছে৷
শনিবার শিল্পোন্নত দেশগুলির গোষ্ঠী জি-সেভেনের শীর্ষ নেতারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকে বসছেন৷ সেখানে মস্কোর উপর জি-সেভেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হবে৷ জি-সেভেনের বর্তমান সভাপতি দেশ ইটালির পক্ষ থেকে ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমা জগতের অবিচ্ছেদ্য সহায়তার দাবি করা হয়েছে৷ পশ্চিমা জগত ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, এমন ‘রটনা' অস্বীকার করছে জি-সেভেন৷ উল্লেখ্য, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক সহায়তায় বিলম্বের কারণে যুদ্ধক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে৷ সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে রাশিয়া হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে৷
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী শুক্রবার রাশিয়ার উপর আরো এক দফা নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ঘোষণা করতে চলেছেন৷ বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির মৃত্যু ও দুই বছর ধরে ইউক্রেনের উপর হামলার দায়ে এই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি মঙ্গলবার জানান৷ হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালাইভান বলেন, নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও শিল্পক্ষেত্রের একাধিক পণ্য যোগ করা হবে৷ সে দেশের অর্থনৈতিক রাজস্বের কিছু উৎসও বন্ধ করা হবে৷ এক মার্কিন কর্মকর্তার মতে, ইউক্রেনের যুদ্ধের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞার নতুন প্যাকেজের প্রস্তুতি আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল৷ নাভালনির মৃত্যুর কারণে সেই পদক্ষেপ আরো জোরালো করা হচ্ছে৷
রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে সমন্বয় করে চলেছে বাইডেন প্রশাসন৷ এর আওতায় সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দাগিরি সংক্রান্ত উপ মন্ত্রী ব্রায়ান নিলসন চলতি সপ্তাহে ইউরোপ সফর করছেন৷ জার্মানি, বেলজিয়াম ও ফ্রান্সে তিনি নতুন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন৷ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা খাতে উৎপাদন কমাতে এমনকি তৃতীয় কোনো দেশের উপরেও সহায়তার দায়ে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে৷
দুই বছর ধরে যাবতীয় পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া যেভাবে অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম, গোলাবারুদ উৎপাদন বাড়িয়ে ইউক্রেনের উপর লাগাতার হামলা চালিয়ে আসছে৷ সে দেশের অর্থনীতিও নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা মোটামুটি সামলে উঠেছে৷ পশ্চিমা বিশ্বের বাইরে তেল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদের রপ্তানির মাধ্যমে রাশিয়ার আয়ের পথও খোলা আছে৷ ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশ থেকে মস্কো এমনকি অস্ত্রও আমদানি করছে৷ এমন পরিস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)