1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজ্যের বহু হাসপাতালে এখনো সিভিক ভল্যান্টিয়ার

১৭ অক্টোবর ২০২৪

আরজি কর থেকে ২৯ জন সিভিক ভল্যান্টিয়ারকে সরিয়ে দিলেও বহু হাসপাতালে এখনো তারাই আছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে।

https://p.dw.com/p/4ltTj
কলকাতা পুলিশ
হাসপাতালের নিরাপত্তায় পুলিশছবি: Subrata Goswami/DW

আরজি কর মামলার ষষ্ঠ শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় নির্দেশ দিয়েছিলেন, হাসপাতাল এবং স্কুলের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় যেন সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের ডিউটি দেওয়া না হয়। রাজ্যকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

রাজ্য সরকারের সূত্র জানিয়েছে, পুজোর আগেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে কাজে পাঠানো হয়েছে পুলিশকর্মীদের। কিন্তু রাজ্যের অন্য হাসপাতালগুলি থেকে সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের এখনো সরানো সম্ভব হয়নি।

কেন এখনো সিভিক ভল্যান্টিয়ার

কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে গড়ে ২০ থেকে ৩০ জন করে সিভিক ভল্যান্টিয়ার কাজ করেন। মূলত হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্যই তাদের সেখানে বহাল করা হয়েছে। প্রতিটি হাসপাতাল থেকে ওই সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের সরিয়ে স্থায়ী পুলিশকর্মী নিয়োগ করার মতো পরিস্থিতি এই মুহূর্তে পুলিশে নেই বললেই চলে। কারণ রাজ্যে প্রায় ছয় হাজার পুলিশকর্মীর পদ শূন্য। বহুদিন ধরেই সেখানে কোনো নিয়োগ হচ্ছে না। ফলে সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের সরিয়ে পুলিশকর্মী নিয়োগ করার মতো জনবল নেই।

সে ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাকর্মীদের ওই জায়গায় ব্যবহার করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের সরানো যাচ্ছে না।

আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে। সাবেক আইপিএস অফিসার সন্ধি মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ''কেন দীর্ঘদিন ধরে পুলিশে নিয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছে। কেন ছয় হাজার পদে নিয়োগ হয়নি?'' বস্তুত, বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অনেক কম খরচে অস্থায়ী পদে সিভিক ভল্যান্টিয়ার নিয়োগ করে রাজ্য সরকার কাজ চালানোর চেষ্টা করছিল। সিভিক ভল্যান্টিয়ার দিয়ে পুলিশের শূন্যপদ পূরণের চেষ্টা চালানো হচ্ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর যা আর করা সম্ভব নয়।

এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের আইন-শৃঙ্খলাজনিত কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের হাসপাতাল, স্কুলের মতো সংবেদনশীল জায়গায় ডিউটি দেওয়া যাবে না। তাহলে এই লক্ষাধিক সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের কোন কাজে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে এখনো পর্যন্ত যে প্রধান অভিযুক্ত, সেই সঞ্জয় রায় একজন সিভিক ভল্যান্টিয়ার। ফলে প্রথম দিন থেকেই হাসপাতালে সিভিক ভল্যান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টেও এবিষয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওই নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে জানাতে বলা হয়েছে, কীভাবে সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের নিয়োগ হয়, তাদের যোগ্যতা কী, তাদের বেতন কত?

রাজ্য পুলিশের এক অফিসার ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, রাজ্যে পুলিশের যে সংখ্যা, তাতে প্রতিটি হাসপাতালে পুলিশকর্মী নিয়োগ করা প্রায় অসম্ভব। নতুন করে পুলিশ নিয়োগ করে তাদের ট্রেনিং দিয়ে তৈরি না করা পর্যন্ত সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।

বস্তুত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই আরজি কর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে। তার পাশাপাশি সেখান থেকে ২৯ জন সিভিক ভল্যান্টিয়ারকে সরিয়ে পুলিশকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু বাকি হাসপাতালগুলিতে এখনই তা করা সম্ভব নয়।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)