রাজধানী ঢাকায় ফুলের ব্যবসা
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়ে আসা ফুল প্রতিদিন বিক্রি হয় রাজধানী ঢাকায়। মূলত শাহবাগ এবং আগারগাঁও ফুলের বাজার থেকেই পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে এ বেচাকেনা হয়ে থাকে। ছবিঘরে ঢাকার ফুলের বিস্তারিত...
ফুলের উৎস
ঢাকার শাহবাগ ও আগারগাঁওয়ের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, যশোরের গদখালি, সাভারের গোলাপগ্রাম প্রভৃতি জায়গা থেকে ঢাকার বাজারগুলোতে ফুল আসে৷
ফুলেল সকাল
ঢাকার সবচেয়ে বড় ফুল বেচাকেনার বাজার শাহবাগে প্রতিদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতারা ভিড় জমান । সকাল ৮টার আগেই এ পাইকারি বাজারের বেচা-কেনা মোটামুটি শেষ হয়ে যায়।
গোলাপের চাহিদা
ঢাকার শাহবাগের পাইকারি ফুল বিক্রেতা মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, অন্যান্য ফুলের চাহিদা ভালো থাকলেও সবচেয়ে বেশি চাহিদা গোলাপ ফুলের। এ কারণে দোকানদাররা গোলাপেই বেশি লগ্নি করেন।
‘নকল’ ফুলের কদর
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে প্লাস্টিকের ফুল আসায় এবং সেই ফুলের দাম কম হওয়ায় সত্যিকারের ফুলের চাহিদা এখন অনেক কম। স্টেজ সাজানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে প্লাস্টিকের ফুলই বেশি কাজে লাগে এখন।
নানা বর্ণের ফুল
ঢাকার পাইকারি ও খুচরা ফুলের বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, সেখানে দেশি গোলাপ, চায়নিজ গোলাপ, জারবেরা, রজনীগন্ধা, বেলি, গাঁদা, পদ্মসহ বিভিন্ন তরতাজা ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
নারীরাও আছেন ফুলের ব্যবসায়
ঢাকার শাহবাগে গোলাপ ফুলের ব্যবসা করেন পঞ্চাশোর্ধ্ব জুলেখা বেগম। তিনি জানান, তার স্বামীও এখানে ফুল বিক্রি করেন। তার মতো আরো অনেক নারীই এখানে ফুল বিক্রির সাথে জড়িত বলে জানান তিনি।
ফুলের দাম
শাহবাগের পাইকারি ফুলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পিস লাল গোলাপ ২ টাকা, পদ্ম ১০ টাকা, রজনীগন্ধা ৬ টাকা, গোলাপ কলি ১ টাকা, চায়না গোলাপ মিক্স ৪ টাকা, গাঁদা ফুলের প্রতিটি মালা ১৫ টাকা আর কাঠ বেলি ৩০০ টাকা বান্ডেল দরে বিক্রি হচ্ছে।
দামি ফুল পদ্ম
পাইকারি ফুল বিক্রেতা মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, তার জানা মতে ঢাকায় সবচেয়ে দামি ফুল এখন পদ্ম। দুই রকম পদ্ম পাওয়া যায় - লাল ও সাদা। পাইকারিতে প্রতিটি পদ্ম ১০ টাকায় বিক্রি হয়।
ভ্রাম্যমাণ ফুল বিক্রেতা
ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে কথা হয় আকলিমা আক্তারের সঙ্গে। কোথায় সে ফুল বিক্রি করে- জানতে চাইলে আকলিমা বলে, “সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পার্কে এবং বিকালের পর থেকে বিজয় সরণীর ট্রাফিক সিগনালে ফুল বিক্রি করি। এতে দৈনিক ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়৷”
চাহিদা অনুযায়ী দাম
ঢাকার আগারগাঁওয়ের খুচরা ফুল বিক্রেতা মোঃ আকবর আলী জানান, বিশেষ দিন ও চাহিদাভেদে ফুলের দামের তারতম্য হয়। যে গোলাপ তারা পাইকারিতে কেনেন ২টাকা দরে, ভ্যালেনটাইন্স ডে’র মতো দিনগুলোতে সেই একই ফুল ১৫-২০ টাকা দরে কিনতে হয়।
খুচরা দোকানে দাম বেশি
ঢাকার শেওড়াপাড়ার ফুল বিক্রেতা হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ‘‘পাইকারি দরে যে পরিমাণে ফুল কিনি, তার অনেকটাই অবিক্রিত থেকে যায়। এই ক্ষতি পোষাতে আমাদের খুচরা পর্যায়ে দাম একটু বেশি রাখতে হয়।’’
ফুলে রাসায়নিক
ঢাকার শাহবাগ, আগারগাঁও, মিরপুরসহ একাধিক ফুলের খুচরা দোকানে ঘুরে দেখা যায়, সেখানে পদ্ম ফুলগুলোতে রাসায়নিক স্প্রে করে তোড়া বানানো হয়েছে। মানুষের চাহিদা এবং পদ্মফুলের দাম বেশি হওয়ায় ক্ষতি পোষাতে ফুলে রাসায়নিক দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন ফুল বিক্রেতারা।
বিশেষ দিবসে ফুলের বাড়তি কদর
একুশে ফেব্রুয়ারি, জাতীয় শোক দিবস, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন, পহেলা বৈশাখের মতো বছরের বিশেষ দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা এবং দাম দুটোই বেড়ে যায়।
ফুলের স্থায়ী বাজার নেই
রাজধানীর শাহবাগ ও আগারগাঁওয়ে দুটি পাইকারি ফুলের বাজার রয়েছে৷ কিন্তু দুটি বাজারই অস্থায়ী। বাজার সম্প্রসারণে ঢাকায় ফুলের একটি স্থায়ী পাইকারি বাজার স্থাপনের দীর্ঘদিনের দাবি ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীদের।
নতুন ফুলের বাজার
সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ থেকে ঢাকার শাহবাগ ও আগারগাঁওয়ের পাশাপাশি ফুলের আরেকটি পাইকারি বাজার চালু হয়েছে গাবতলীতে।