যে উটপাখিরা বোঝে মানুষের মন
বেলজিয়ামের এই উটপাখিগুলোর কথা শুনলে অবাক হয় সবাই৷মানুষ দেখলে তেড়ে আসে না, বরং হেলেদুলে কাছে এসে আলিঙ্গনের জন্য গলা বাড়িয়ে দেয়- এ-ও সম্ভব? ছবিঘরে থাকছে এমন বন্ধুবৎসল উটপাখিদের কথা...
ওরা ‘মনের মানুষ’ খোঁজে
বেলজিয়ামের কালমাহুট শহরের এক প্রাণী আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে এমন মিষ্টি স্বভাবের নয়টি উটপাখি৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর হিংস্র পাখি হিসেবে পরিচিত হলেও এখানকার উটপাখিরা একেবারেই সেরকম নয়৷ এই উটপাখিরা মানুষকে শুধু ভালোবাসে না, কোনো মানুষকে পছন্দ না হলে নীরবে দূরে চলে যায়৷দেখে মনে হয় যেন ভালোবাসার মানুষদের উষ্ণতায় কিছুক্ষণ থাকতে চেয়েছিল, কিন্তু তেমন মানুষ না পাওয়ায় ওরা ফিরে যাচ্ছে৷
কালমাহুটের অন্যরকম এক আশ্রয়কেন্দ্র
প্রাণী পুষলেও অনেকে প্রাণীদের পর্যাপ্ত যত্ন নেন না৷ বেলজিয়াম সরকার তখন অবহেলিত প্রাণীদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখে৷ কালমাহাটির এই আশ্রয়কন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ওয়েন্ডি আড্রিয়ান্স বেশিরভাগ প্রাণী সেভাবে পেলেও প্রথম উটপাখির ছানাটি তিনি কিনেছিলেন এক মাংস বিক্রির দোকান থেকে৷তার পাসিয়েহোভ আশ্রয়কেন্দ্র এখন নয়টি উটপাখি, একটা ঘোড়া, একটা গাধা, ১৪টি ছাগলএবং বেশ কিছু কুকুর, হাঁস-মুরগি এবং শূকরের নিরাপদ ঠিকানা৷
প্রধান আকর্ষণ উটপাখি
বেলজিয়ামের এই আশ্রয়কেন্দ্রে অনেকেই আসেন প্রাণীদের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটিয়ে মন ভালো করতে৷অটিজম, অর্থাৎ আত্মসংবৃতি বা আত্মলীনতাগ্রস্ত মানুষদের, এমন কি বিষন্নতায় ভুগছেন বা কোনো নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছেন এমন মানুষদেরও থেরাপির জন্য পাঠানো হয় এমন আশ্রয়কেন্দ্রে৷ওয়েন্ডি আড্রিয়ান্সের প্রাণী আশ্রয়কেন্দ্রে অনেকেই আসেন ব্ল্যাঙ্কেট বিছিয়ে শুয়ে বা বসে আদুরে উটপাখিদের উষ্ণ সাহচর্যে কিছুটা সময় কাটাতে৷
‘এমন উটপাখি আর কোথাও নেই’
সাবেক কর্পোরেট এক্জিকিউটিভ ওয়েন্ডির কর্মস্থল এবং ভালোবাসার জগত এখন এই আশ্রয়কেন্দ্র৷ এখানকার উটপাখিদের বিষয়ে তার বক্তব্য খুব স্পষ্ট, ‘‘সারা বিশ্বে শুধু এখানকার উটপাখিরাই মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করে৷’’ সত্যিই তো, ব্ল্যাঙ্কেট বিছিয়ে বসলে দূর থেকে ওরা দেখবে, ধীরে ধীরে কাছে এসে আলিঙ্গনের জন্য গলাটা বাড়িয়ে দেবে, শুয়ে পড়বে এমনভাবে যেন মনে মনে বলছে, ‘‘আমায় জড়িয়ে ধরো!’’ এমন উটপাখি আর কোথায় আছে?
তারকাদের দর্শনী
আশ্রয়কেন্দ্রের কোনো কোনো উটপাখির ওজন ১৭৫ কিলোগ্রামের মতো৷এত বিশালদেহী বন্ধুসুলভ পাখিদের কিন্তু বিনে পয়সায় দেখা যায় না৷ বিশ্বখ্যাত তারকাদের মতো তাদেরও দেখতে হয় দর্শনীর বিনিময়ে৷ এক দর্শনের মূল্য ৬৫ ইউরো (৭১ ডলার)৷