যাঁর বিতাড়ন ঠেকাতে চেয়েছিলেন সুইডিশ তরুণী
২৭ জুলাই ২০১৮বিমান ছাড়ার আগ মুহূর্তে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে যান এবং বলতে থাকেন বিমানে থাকা আফগানদের নামিয়ে না দেয়া পর্যন্ত তিনি বসবেন না৷ উল্লেখ্য, নিয়ম অনুযায়ী বিমানের সব যাত্রী বসে সিটবেল্ট না বাঁধা পর্যন্ত বিমান যাত্রা শুরু করতে পারে না৷
পুরো ঘটনাটি ফেসবুক লাইভে শেয়ার করেন এরসন৷ তাঁর প্রতিবাদের কারণে বিমানে থাকা এক আফগান নাগরিককে নামিয়ে আনা হয়৷ সেই সঙ্গে নামিয়ে দেয়া হয়েছিল এরসনকেও৷
সুইডিশ এই তরুণী অবশ্য দু'জন আফগান নাগরিকের বিতাড়ন ঠেকানোর পরিকল্পনা করেছিলেন৷ এদের একজনের বয়স ৫০-এর মতো, আরেকজন ২৬ বছর বয়সি ইসমাইল খাওয়ারি৷ তবে বিমানে শুধু ৫০ বছর বয়সি ব্যক্তিটি ছিলেন, ইসমাইল খাওয়ারি ছিলেন না৷
জানা গেছে, খাওয়ারির মা ও দুই বোন সুইডেনে থাকেন৷ তাঁরাই খাওয়ারির বিতাড়ন ঠেকাতে এরসনের সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন৷ এরসন ও তাঁর সহকর্মীরা খবর পেয়েছিলেন যে, দুই আফগান ব্যক্তিকে গথেনবুর্গ বিমানবন্দর থেকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে প্রথমে ইসতান্বুল, পরে কাবুল পাঠানো হবে৷ সেজন্য এরসন ঐ ফ্লাইটের টিকিট কেটেছিলেন৷ কিন্তু পরে জানা যায়, ইসমাইল খাওয়ারি ঐ ফ্লাইটে ছিলেন না৷ তাঁকে পরদিন স্টকহোম থেকে কাবুল পাঠানো হয়৷
২৬ বছর বয়সি ইসমাইল খাওয়ারি কাবুলে কাউকে চেনেন না৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি জানান, তিনি আফগানিস্তানে জন্মেছেন, কিন্তু কোথায় তা জানেন না৷ কারণ ছয় বছর বয়সে পরিবারসহ তিনি ইরানে পালিয়ে যান৷ সেখানে ছিলেন ২০ বছর৷ এরপর সুইডেনে চলে যান৷ সেখানে তাঁর আশ্রয়ের আবেদন তিনবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে৷ এরপর তিনি জার্মানিতেও এসেছিলেন৷ কিন্তু সুবিধা হবে না ভেবে আবারও সুইডেন ফিরে গিয়েছিলেন৷ সেখানেই বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করে পুলিশ৷ এরপর শেষ আটমাস ধরে ছিলেন একটি বিতাড়ন কেন্দ্রে৷ সেখানে আশ্রয় পাওয়াদের সঙ্গে গরুর মতো ব্যবহার করা হতো বলে ডয়চে ভেলেকে জানান ইসমাইল খাওয়ারি৷
কাবুলে কাউকে চেনেন না বলে এখন কোথায় যাবেন তা জানেন না তিনি৷
কাবুলে পৌঁছানোর পর এলিন এরসনের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে পারেন ইসমাইল খাওয়ারি৷ তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে না চিনলেও তাঁর উদ্যোগের জন্য এরসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি৷
আব্দুল বারি হাকিম/জেডএইচ