1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোদী মহান, ওষুধ পেয়ে বললেন ট্রাম্প

৯ এপ্রিল ২০২০

প্রথমে ছিল হুমকি। ওযুধ না পেলে অ্যামেরিকা প্রত্যাঘাত করবে। ভারত সেই ওষুধ পাঠানোর পরেই ডনাল্ড ট্রাম্প বললেন, 'মোদী মহান'। 

https://p.dw.com/p/3ag0u
ছবি: Getty Images/AFP/S. Loeb

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পপ্রথমে হুমকি দিয়েছিলেন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না পেলে ভারতের ওপর প্রত্যাঘাত করবে অ্যামেরিকা। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন হলো ম্যালেরিয়ার ওষুধ। কিন্তু এখন করোনার চিকিৎসায় তা ব্যবহার করে কিছুটা সুফল পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে। করোনা সংকটের সময়ে ভারত এই ওষুধের রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের হুমকির কাছে নতিস্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে দেন। বুধবারই গুজরাটের কারখানা থেকে ওষুধ নিয়ে তিনটি জাহাজ পাড়ি দিয়েছে অ্যামেরিকার উদ্দেশে।

এরপরই ট্রাম্প উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। হুমকির বদলে এখন কেবলই প্রশংসা। 'বন্ধু' নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, ''ভারত থেকে দুই কোটি ৯০ লাখ ওষুধ আসছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। উনি খুব ভালো মানুষ। মোদী মহান।'' এখানেই থেমে থাকেননি ট্রাম্প। এরপর টুইট করে বলেছেন, ''এই রকম নজিরবিহীন অবস্থায় বন্ধুদের মধ্যেও আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা দরকার। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ, ভারতীয়দের ধন্যবাদ। এই সাহায্যের কথা ভোলার নয়। এই লড়াইয়ে শুধু ভারতকেই  নয়, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়ে মোদী মানবতাকে সাহায্য করেছেন। নরেন্দ্র মোদী, আপনাকে ধন্যবাদ।''

এভাবেই হুমকি পরিণত হয়েছে প্রশংসায়। কারণ, ট্রাম্পের কথা শুনেছেন মোদী। কংগ্রেস সাংসদ ও কংগ্রেস নেতা শশী থারুর অবশ্য এরপর কিছুটা তির্যকভাবে টুইট করে বলেছেন, ''ভারত নিঃস্বার্থভাবে আপনাকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন পাঠাতে রাজি হলো, এরপর অ্যামেরিকার গবেষণাগারে যদি করোনার কোনও প্রতিষেধক তৈরি হয়, তখন আপনি তা এভাবেই ভারতকে দেবেন তো?''

তবে শুধু ট্রাম্পই নন, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারোও প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঢালাও প্রশংসা করেছেন। তিনিও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরির জন্য কাঁচামাল চেয়েছিলেন। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের অনুরোধও রেখেছেন মোদী। তারপরই বলসোনারো টুইট করে বলেছেন, ''আমাদের আরও সুখবর আছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমি সরাসরি কথা বলেছিলাম। শনিবারের মধ্যে আমরা হাউড্রক্সিক্লোরোকুইন বানাবার জন্য কাঁচামাল পেয়ে যাব। তা দিয়ে করোনা, ম্যালেরিয়া, বাতের রোগীদের চিকিৎসা করতে পারবো। ব্রাজিলের লোকেদের সময়োচিত সাহায্য করার জন্য ভারতের জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ।''

দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল অবশ্য বলেছেন, ''অ্যামেরিকা ও অন্য দেশকে দিয়েও ভারতের নিজের জন্য প্রচুর পরিমাণে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন মজুত থাকবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে আমাদের কোনও অসুবিধা হবে না।''

করোনা নিয়ে ভারতের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক জায়গায় চলে গিয়েছে। পাঁচ হাজার ৭৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১৬৬ জনের। কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিটি রাজ্যে করোনা হট স্পট চিহ্নিত করেছে, মানে যেখানে করোনার প্রকোপ বেশি। সেই জায়গাগুলি পুরোপুরি সিল করে দেওয়া হচ্ছে। বুধবার রাতে দিল্লির ২০টি এলাকা সিল করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া। এর মধ্যে নিজামুদ্দিনের দুইটি এলাকা, দিলশাদ গার্ডেন, পূর্ব দিল্লির কিছু এলাকা আছে। নয়ডায় ১৫টি এলাকা সিল করে দেওয়া হয়েছে।

সিল করা এলাকায় কেউ বাড়ির বাইরে পা দিতে পারবেন না। সরকারি কর্মী ছাড়া কেউ সেখানে ঢুকতে বা বেরতে পারবেন না। পুরো এলাকা বারবার জীবাণুমুক্ত করা হবে। লোকেদের করোনা পরীক্ষা করা হবে। সরকারই সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করবে। দোকানপাটও বন্ধ থাকবে। নয়ডায় সিল করা এলাকা সেক্টর ৪১ থেকে ডয়চে ভেলের সাংবাদিক আমির আনসারি জানিয়েছেন, ''কাল রাতে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। এমনিতেই হাউসিং সোসাইটিগুলির মাত্র একটি গেট খোলা। সেটাও সম্ভবত এ বার বন্ধ হয়ে যাবে।'' এ ছাড়া দিল্লিতে মাস্ক ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে পা রাখতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছে সরকার।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)