1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্যমেক্সিকো

মেডিকেল টুরিজমের পীঠস্থান হয়ে উঠছে মেক্সিকোর এক শহর

৩০ জুলাই ২০২৪

দেশের মধ্যে চিকিৎসার মান, ব্যবস্থাপনা বা খরচে অসন্তুষ্ট হয়ে অনেক রোগী বিদেশে চিকিৎসা করাতে যান৷ মেক্সিকোর এক শহর অ্যামেরিকা ও অন্যান্য দেশের মেডিকেল টুরিস্টদের পীঠস্থান হয়ে উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/4iukF
Mexiko | Medizintourismus in Los Algodones an der Grenze zu den USA
ছবি: Robyn Beck/AFP/Getty Images

ড. উরতাদো বিদাল আসলে সিনালোয়ার মানুষ৷ কিন্তু টিহুয়ানা শহরে ‘মেডিকাল টুরিজম'-এর টানে প্রায় আট বছর আগে তিনি সেখানে চলে যান৷ সে সময়ে প্লাস্টিক সার্জেন হিসেবে সপ্তাহে বড়জোর এক থেকে দুইজন রোগী তাঁর কাছে আসতেন৷ এখন প্রতিদিনই এমনটা দেখা যায়৷ প্রায় সবাই বিদেশি, মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের মানুষ৷ পেরু, আর্জেন্টিনা ও মধ্য অ্যামেরিকার দেশ থেকেও রোগী আসেন৷ কারণ তিনি শুধু অপারেশন করেন না, রোগীদের পরিবহণ ও থাকার ব্যবস্থাসহ সম্পূর্ণ প্যাকেজ দেন৷ সেই পরিষেবা সম্পর্কে ড. বিদাল বলেন, ‘‘আমরা নিজস্ব চালক পাঠিয়ে রোগীদের সান দিয়েগো বিমানবন্দর অথবা লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে নিয়ে আসি৷ চালক তাঁদের হোটেলে পৌঁছে দেন৷ সেখান থেকে তাঁরা আমাদের দফতরে এসে অপারেশনের পরিকল্পনা করেন৷''

করোনা মহামারির পর থেকে টিহুয়ানা শহরে ‘মেডিকাল টুরিজম' তিন গুণ বেড়ে গেছে৷ এই খাত মেক্সিকোর বাহা কালিফোর্নিয়া রাজ্যে বছরে প্রায় ২৫০ কোটি ডলার এনে দিচ্ছে৷ সেই রাজ্যে বছরে যে প্রায় ৪৫ লাখ পর্যটক আসেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই মেডিকাল টুরিস্ট৷

জন হেডরিচের মতো মানুষকে লস অ্যাঞ্জেলেসের তুলনায় এখানে অপারেশেনের জন্য ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ কম ব্যয় করতে হয়৷ শুধু তাই নয়, রোগীর দেখাশোনা ও চিকিৎসার মানও নাকি অ্যামেরিকার তুলনায় ভালো৷ আজ তিনি ফেসলিফটিং ও আইলিড লিফট করাতে সেখানে এসেছেন৷ নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জন বলেন, ‘‘অ্যামেরিকায় আমাকে অপেক্ষা করতে হয়৷ তারা এমন ভাব করে, যেন তোমার উপকার করছে৷ এখানে বিষয়টা ভিন্ন৷ আমি আগেও দাঁতের চিকিৎসার জন্য টিহুয়ানায় এসেছিলাম৷ খুব ভালো ফল পেয়েছিলাম, খরচও কম হয়েছিল৷ তবে আমার কাছে ব্যক্তিগত যত্ন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷''

মেক্সিকোয় মেডিকেল টুরিজম

টিহুয়ানায় মেডিকাল টুরিজম বছরে প্রায় ১২ শতাংশ হারে বেড়ে চলেছে৷ কিন্তু গত বছরের শুরুতে একটা ধাক্কা এসেছিল৷ সীমান্তবর্তী এই শহরে নিরাপত্তার সমস্যার কারণে রোগীরা ভয়ে দূরে থাকছিলেন৷ তাছাড়া মেক্সিকোর মুদ্রা পেসোর বিনিময় মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অ্যামেরিকানদের জন্য ব্যয়ের মাত্রাও বেড়ে গিয়েছিল৷

জেনারেল প্র্যাকটিশনর হিসেবে আব্রাহাম সানচেস সমস্যার উৎস চিহ্নিত করে সমস্যার সন্ধান করেছিলেন৷ তাছাড়া তিনি তুরস্ক, কলম্বিয়া ও কোস্টা রিকার মতো দেশ থেকেও প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করেছিলেন৷ ড. সানচেসের মতে, ‘‘ল্যাটিন অ্যামেরিকার এই দেশগুলি এস্থেটিক সার্জারির ক্ষেত্রে মূলত ব্যয়ের নিরিখে প্রতিযোগিতায় নেমেছে৷ তারা অবিশ্বাস্য মূল্যে অপারেশনের সুযোগ দিচ্ছে৷ মেক্সিকোয় আমাদের আরেকটি সমস্যা হলো, ডলারের তুলনায় পেসো অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে৷''

তা সত্ত্বেও টিহুয়ানায় মেডিকাল টুরিজমের রমরমা এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে৷ যেমন একটি ভবনে একই ছাদের নীচে সব কিছুই রয়েছে৷ থাকার ব্যবস্থা, কনসাল্টেশন, অপারেশন থিয়েটার, হাসপাতাল, রেস্তোরাঁ, মনোরঞ্জন – সবই রয়েছে৷

মেডিকাল টুরিস্টদের প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ সহজ ব্যবস্থা রেখেছে৷ শুধু লাল ফিতের ফাঁস আরো কমানো প্রয়োজন বলে মনে করেন আৎসিম্বা বিলেগাস৷ তিনি বাহা কালিফোর্নিয়া রাজ্যে মেডিকাল টুরিজম সংগঠনের কর্ণধার৷ আৎসিম্বা বলেন, ‘‘বাহা কালিফোর্নিয়ার মেডিকাল টুরিজম শিল্পজগতের পরেই প্রধান আয়ের উৎস৷ ডেলোয়াট কনসাল্টিং কোম্পানির এক গবেষণা অনুযায়ী আগামী পাঁচ বছরে ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির প্রত্যাশা রয়েছে৷ এর অর্থ, রোগির ঢল বাড়তে চলেছে৷ সেইসঙ্গে এই খাতে বিনিয়োগও বাড়বে৷''

এভাবে টিহুয়ানা এক সময়ে মেডিকাল টুরিজমের ক্ষেত্রে বিশ্বের রাজধানী হয়ে উঠতে পারে৷

আইটর সায়েজ/এসবি