1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাথা নত করব না: রায়হান কবির

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২২ আগস্ট ২০২০

মালয়েশিয়ায় ২৯ দিন আটক থাকার পর রায়হান কবির দেশে ফিরে ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘আমি প্রবাসীদের নির্যাতনের কথা বলে আটক হয়েছিলাম৷ আমাকে চাপ দিয়েও নত করতে পারেনি৷ ন্যায়ের পক্ষে আমি কথা বলবই৷’’

https://p.dw.com/p/3hLPq
Bangladesch, Der bangladeschische Migrant Rayhan Kabi kehrt zu seiner Familie aus Malaysia zurück
ছবি: Mujibul Haque Polash

রায়হান শুক্রবার গভীর রাতে মালয়েশিয়া থেকে ঢাকা আসেন৷ শনিবার ভোরে তিনি নারায়ণগঞ্জে তার গ্রামের বাড়িতে যান৷ ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া৷ কিন্তু তাকে আটকের পর তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি দেশটির পুলিশ, যে কারণে তাকে মুক্তি দেয়া হয়

শনিবার বিকেলে রায়হান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি ২৯ দিন কারাগারে ছিলাম, আমাকে রিমান্ডে নেয়া হয়৷ আমাকে কোনো শারীরিক নির্যাতন করা না হলেও আমার ওপর প্রচন্ড মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয়৷’’

রায়হান জানান, তারা বারবার তার কাছে জানতে চেয়েছেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রবাসীদের নির্যাতনের কথা আল জাজিরাকে বলেছেন কিনা৷ তার সাথে কোনো রাজনৈতিক দল বা কোনো গ্যাং-এর যোগাযোগ আছে কিনা৷ তদন্ত কর্মকর্তারা তার সব ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ফোন, ফেসবুক, হোয়াসআ্যাপ পরীক্ষা করেছে৷ বাংলাদেশের কেউ তাকে প্রভাবিত করেছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখেছে৷ কিন্তু এ ধরনের কোনো যোগাযোগই তারা পায়নি৷ মালয়েশিয়া সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কিনা সে বিষয়েও তার কাছে জানতে চাওয়া হয়৷

রায়হান কবির

রায়হান জানান, ‘‘আমি মালয়েশিয়াতে পড়াশোনার সময় স্টুডেন্ট অর্গানাইজার হিসেবে কাজ করেছি৷ বাংলাদেশিদের মধ্যে আমিই প্রথম যে প্রবাসীদের নির্যাতনের কথা তুলে ধরি৷ আল জাজিরা আমার সাথে যোগাযোগ করায় আমি তাদের সাক্ষাৎকার দিয়েছি৷ প্রবাসীদের সাথে তারা যা করে তাই বলেছি৷ সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে৷ প্রবাসীরা নানা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে৷ কোনো অসত্য কথা বলিনি৷ আর আমি সব সময় ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেই যাব৷’’

রায়হান এখন অবশ্য তার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত৷ কোনো অপরাধ না করলেও তাকে মালয়েশিয়া থেকে বহিস্কার করা হয়েছে৷ তিনি চাকরি হারিয়েছেন৷ এই অন্যায় আচরণের প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ চান তিনি৷ ‘‘কিন্তু কার কাছে চাইব?,'' প্রশ্ন তার৷

রায়হানরা দুই ভাই-বোন৷ তার বাবা মো. শাহ আলম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘রায়হানকে মালয়েশিয়া পাঠাতে আমার তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে৷ পড়াশোনা শেষে একটি চাকরিও পেয়েছিল৷ এখন তো আর কিছু নাই৷ আমার ছেলে ফিরে এসেছে তাতেই আমি খুশি৷ তারপরও সরকারে কাছে আমার আবেদন তারা যেন রায়হানের জন্য কিছু একটা করে৷’’ তিনি জানান, রায়হান আটক হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি৷

গত ৩ জুলাই ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট' শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে আল-জাজিরা ৷ প্রতিবেদনে  মালয়েশিয়া সরকার মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (এমসিও)-এর মাধ্যমে মহামারির সময়ে অভিবাসীদের প্রতি যে বৈষম্যমূলক আচরণ করে তা তুলে ধরা হয়৷ সেখানে রায়হান কবিরের একটি সাক্ষাৎকারও দেখানো হয়৷ এরপর মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ রায়হানকে খুঁজতে থাকে৷ তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ও তার ছবি প্রকাশ করা হয় তথ্য দেয়ার জন্য৷ ২৪ জুলাই রায়হানকে আটক করে পুলিশ

শরীফুল হাসান

রায়হান জানান, তাকে আটকের পর সেখানে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে৷ তারা এখন বিশ্বকে দেখাতে চাইছে যে প্রবাসীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে না৷ কারাগারের অবস্থারও উন্নতি হয়েছে৷

তার মুক্তির জন্য দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন চাপ সৃষ্টি করে৷ ব্রাকের অভিবাসন বিভাগের প্রধান শরিফুল হাসানও সক্রিয় ছিলেন রায়হানের মুক্তির জন্য৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ছাড়া মালয়েশিয়া আর কোন দেশের নাগরিকদের হাতে হাতকড়া পড়াতে পারে? রায়হান কোনো অপরাধ করেনি তারপরও তাকে কারাগারে থাকতে হয়েছে৷ এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন৷ সরকারের উচিত এই বিষয়টি দেখা৷ কোনো দেশ চাইলে অন্য কোনো দেশের নাগরিকদের তার দেশ থেকে বহিস্কার করতে পারে৷ কিন্তু তার তো কারণ থাকতে হবে৷ রায়হানের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ নেয়া উচিত৷ নেপালের মত দেশ অভিবাসীদের পাশে দাঁড়াতে পারলে বাংলাদেশ কেন পারবে না!’’

তবে এইসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরই কথা বলতে রাজি হয়নি৷

২০১৯ সালের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান