মহাত্মা গান্ধীর জানা-অজানা তথ্য
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম জনক তিনি৷ তাঁর অহিংস সত্যাগ্রহের পথকে সম্মান জানিয়ে রবীন্দ্রনাথ প্রথম উচ্চারণ করেছিলেন ‘মহাত্মা’ শব্দটি৷ সেই তখন থেকেই আপামর বিশ্বের কাছে গান্ধী পরিচিত হন মহাত্মা গান্ধী নামে৷
জন্মের দেড়শ বছর
অহিংস আন্দোলনের প্রতীক, শান্তিকামী নেতা মহাত্মা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ১৮৬৯ সালের ২ অক্টোবর ভারতের গুজরাট রাজ্যের পরবনদার শহরে জন্মগ্রহণ করেন। জাতিসংঘ মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনটিকে অহিংসা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
মহাত্মা
৩০ জানুয়ারি, ১৯৪৮৷ এমনই এক শীতের বিকেল৷ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ছিলেন দিল্লির বিড়লা হাউসে৷ যাচ্ছিলেন সর্বধর্ম প্রার্থনাসভায়৷ ঠিক তখনই বিড়লা হাউসের বাগানে পরপর গুলি করে মহাত্মাকে হত্যা করেন নাথুরাম গডসে৷
দক্ষিণ আফ্রিকা সংযোগ
ব্যারিস্টারি পড়তে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন গান্ধী৷ প্রথম শ্রেণির টিকিট থাকা সত্ত্বেও তাঁকে উঠতে দেওয়া হয়নি ট্রেনে৷ বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েছিলেন৷ সেখানেই প্রথম সত্যাগ্রহ আন্দোলন৷ পরবর্তীকালে দক্ষিণ আফ্রিকাতেই চরমপন্থি আন্দোলন করে জেলে যান নেলসন ম্যান্ডেলা৷ জেলে বসে গান্ধীর জীবনী পড়েন তিনি৷ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ম্যান্ডেলা জানিয়েছিলেন, তিনি এখন গান্ধীর আদর্শে দিক্ষিত৷ অহিংসার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি৷
মার্কিন গণ আন্দোলন
অ্যামেরিকার গণ আন্দোলনের অন্যতম মানুষ মার্টিন লুথার কিং৷ ডক্টর কিং-ও বলেছিলেন, গান্ধীর আদর্শ তাঁকে ছুঁয়ে গিয়েছে৷ নিজেকে গান্ধীবাদী মনে করতেন তিনি৷ এর বহু পরে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও গান্ধীর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধার কথা জানিয়েছিলেন৷
গান্ধী আদর্শ
মতের মিল হয়নি অনেক বিষয়ে, কিন্তু গান্ধীর ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বিশ্বের বহু বিখ্যাত মানুষ৷ অ্যালবার্ট আইনস্টাইন থেকে রবীন্দ্রনাথ, জন লেনন থেকে হো চি মিন, অনেকেই গান্ধীর আদর্শকে নিজেদের পাথেয় করে তুলেছিলেন নিজ নিজ কাজে৷
গান্ধী এবং কংগ্রেস
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে এসে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেন গান্ধী৷ ঘুরে দেখেছিলেন গোটা দেশ৷ বোঝার চেষ্টা করেছিলেন মানুষের সমস্যা৷ এরপর কংগ্রেসে যোগ দেন৷ তাঁর নির্দেশেই স্বাধীনতার আন্দোলন করেছে জাতীয় কংগ্রেস৷ কিন্তু কোনোদিন কোনো পদ গ্রহণ করেননি গান্ধী৷ নিজের দলের সহিংস আন্দোলনের প্রেক্ষিতেও অনশনে বসেছেন একাধিকবার৷
দেশভাগ
দেশভাগের মূল্যে স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেননি গান্ধী৷ জাতীয় রাজনীতি থেকে অনেকটাই দূরত্ব তৈরি করেছিলেন সেই পর্বে৷ পায়ে হেঁটে তিনি তখন ঘুরে বেড়াচ্ছেন দাঙ্গা বিধ্বস্ত অঞ্চল৷ দাঙ্গা বন্ধ করার জন্য নোয়াখালি এবং কলকাতায় অনশনে বসেছিলেন৷
হে রাম
গান্ধীর নীতি এবং আদর্শের সঙ্গে বহু সময়েই একমত হতে পারেনি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি৷ তাঁর সর্বধর্ম সমন্বয়ের ভাবনাকে অনেকেই তীর্যক চোখে দেখেছিলেন৷ যার পরিণাম প্রাণ দিয়ে চোকাতে হয় গান্ধীকে৷ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের নেতা নাথুরাম গডসে গুলি করে হত্যা করেন জাতীর জনককে৷