উগ্রপন্থী এক মুসলিম যুবকের হাতে রাজধানী প্যারিসে শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের পর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঠেকাতে কঠোর হয় ফ্রান্স সরকার৷ ছয় মাসের জন্য উত্তর পূর্ব প্যারিসের প্যানটিন মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ এ সময় দেশটির একটি মুসলিম এনজিও বন্ধ করে সরকার৷
সরকার জানায়, মসজিদটি নিহত শিক্ষকের স্কুলের এক ছাত্রের বাবার করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে যেখানে শ্রেণিকক্ষে ইসলামের নবী মোহাম্মদের কার্টুন দেখানোয় ঐ শিক্ষককে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল৷ তাছাড়া মসজিদের এক ইমাম ইয়েমেনের কট্টরপন্থী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে বলে জানা গেছে৷
বন্ধ করে দেওয়ার সরকারি আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করে মসজিদ পরিচালনা কমিটি৷
এদিকে এনজিওটি বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে সরকার জানায়, উগ্রপন্থী মুসলিমদের সাথে সম্পর্ক এবং সন্ত্রাসবাদী হামলায় সমর্থন রয়েছে এর৷ তাছাড়া সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিংসাত্মক ও বৈষম্যমূলক বার্তা ছড়াচ্ছে৷ অভিযোগ অস্বীকার করে এনজিওটির পক্ষ থেকেও আদালতে আবেদন করা হয়৷
সরকারের এ পদক্ষেপের সমর্থন দিয়ে আদালত জানায়, সহিংস ও বৈষম্যমূলক বার্তা ছড়ানোয় এনজিওটিকে বন্ধ করে দিতে সরকারের আদেশ যুক্তিযুক্ত৷
একই যুক্তি দেখিয়ে মসজিদটি বন্ধে সরকারের পদক্ষেপের সমর্থন জানিয়েছে আদালত৷ মসজিদ কমিটির সদস্যদের মন্তব্য এবং তারা যে ধরনের বিষয়ে আলোচনা করে তা সহিংসতা ছড়াতে পারে বলে অভিমত আদালতের৷
আরআর/কেএম (এএফপি)
২৯ অক্টোবরের ছবিঘরটি দেখুন...
-
ফ্রান্সের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে যা আছে
চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা
সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দিহান ব্যক্তিরা নিজেদের শহর ছেড়ে অন্যত্র যেতে পারবে না এবং প্রয়োজন হলে তাদের নিয়মিত পুলিশের কাছে হাজিরা দিতে হবে৷ এরকম মানুষদের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় নিষিদ্ধও করা যাবে৷ বলাবাহুল্য, আগে সাধারণত জরুরি অবস্থায় এমন আইন প্রয়োগ করতে পারতো ফরাসি সরকার, যার অর্থ হচ্ছে, একজনকে কার্যত গৃহবন্দি করে রাখা৷
-
ফ্রান্সের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে যা আছে
ঘরতল্লাশি
শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের স্বার্থে যে-কারো ঘর তল্লাশি করতে পারবে কর্তৃপক্ষ৷ আগে জরুরি অবস্থার বাইরে এ ধরনের তল্লাশি অভিযান একজন বিচারকের আদেশক্রমে করা যেতো৷ এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারির পর প্রথম সাত মাসে ৩,৬০০ বাড়িতে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করা হয়৷ এর মধ্যে শুধুমাত্র ছয়টি তল্লাশির সময় সন্ত্রাসবাদের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল৷
-
ফ্রান্সের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে যা আছে
উপসনালয় বন্ধের ক্ষমতা
উগ্রবাদ বা বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে যে কোনো উপসনালয় বন্ধ করে দিতে পারবে কর্তৃপক্ষ৷ এর আগে ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থি ন্যাশনাল ফ্রন্টের নেতা মারিঁ ল্য পেন অভিযোগ করেছিলেন যে, তাঁদের উপর যুদ্ধ ঘোষণা করা উগ্র ইসলামপন্থার মোকাবিলায় ফ্রান্সের প্রচলিত আইন যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারছে না৷
-
ফ্রান্সের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে যা আছে
বন্দর এবং বিমানবন্দরে পরিচয়পত্র পরীক্ষা
বন্দর এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দশ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে যে কারো পরিচয়পত্র পরীক্ষা করতে পারবে নিরাপত্তা বাহিনী৷ সরকারের প্রস্তাবিত ড্রাফটে অবশ্য বিশ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে এ ধরনের পরীক্ষা চালুর প্রস্তাব করা হয়েছিল৷ কিন্তু অনুমোদিত আইনে সেটা কমিয়ে দশ বর্গকিলোমিটার করা হয়েছে৷
-
ফ্রান্সের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে যা আছে
পাবলিক ইভেন্ট ঘিরে নিরাপত্তা
সন্ত্রাসী হামলার কবলে পড়ার ঝুঁকি আছে এমন বড় পাবলিক ইভেন্টের নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থার মতো আইনি অধিকার পাবে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো৷ এই অধিকারের আওতায় তারা ভেন্যুর কাছাকাছি যে কোনো প্রপার্টিতে এবং সন্দেহভাজন যে কোনো মানুষকে তল্লাশি করতে পারবে৷ এছাড়া নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কর্মরত কোনো সরকারি কর্মী যদি উগ্র মতামত ধারণ করে, তাহলে তাকে বদলি বা চাকুরিচ্যুত করা যাবে৷