ভোটের আগে কংগ্রেসকে বিশাল অঙ্কের অর্থ পরিশোধের নোটিশ
২৯ মার্চ ২০২৪আয়কর দপ্তর জানিয়েছে, ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত কংগ্রেস যে রিটার্ন ফাইল করেছে, তা খতিয়ে দেখার পর সুদ ও জরিমানাসহ এই অর্থের পরিমাণ ধার্য করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারই দিল্লি হাইকোর্ট এই বিষয়ে কংগ্রেসের একটি আবেদন খারিজ করে দেয়। তারপরই আয়কর দপ্তর এই নোটিশ পাঠিয়েছে।
কংগ্রেসের বক্তব্য
কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেনের দাবি, ''আয়কর আইনের নিয়ম মেনে রিটার্ন দাখিল করা হয়েছে। আয়কর দপ্তর বলছে, আমাদের ১৪ লাখ টাকার ডোনেশনের ক্ষেত্রে বিধিলঙ্ঘন হয়েছে। তার জন্য ১৩৫ কোটি টাকা আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।''
মাকেনের বক্তব্য, ''আয়কর দপ্তর বিজেপিকে সাহায্য করছে। যে ধারায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সেইএকই বিষয়ে বিজেপি-র ক্ষেত্রে তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিজেপি চায়, কংগ্রেস আর্থিক দিক থেকে পঙ্গু হয়ে যায়।''
মাকেন বলেছেন, ''বিজেপি তাদের আয়কর রিটার্নে এক হাজারেরও বেশি মানুষের দেয়া ডোনেশনের কথা বলেছে। কিন্তু তাদের কোনো ঠিকানা দেয়া হয়নি। নিয়মানুসারে তারা ঠিকানা দিতে বাধ্য। মোট ৪২ কোটি টাকার ডোনেশনের ক্ষেত্রে কোনো ঠিকানা নেই। কিন্তু আয়কর সেটা দেখছে না। আর কংগ্রেসের ২৩ জন সাংসদ ও বিধায়ক ক্যাশে ডোনেশন দিয়েছিলেন, তার জন্য আমাদের ১৩৫ কোটি টাকা নিয়ে নেয়া হয়েছে।''
মাকেন বলেছেন, ''আমরা নিশ্চিত, আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পাবো।''
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের দাবি, ''নির্বাচনী বন্ড কেলেঙ্কারির হাত থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে কংগ্রেসের উপর এভাবে আয়কর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আর ভোটের আগে কংগ্রেসের কাছে যাতে প্রচার করার জন্য টাকা না থাকে, তার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা ট্যাক্স টেররিজম ছাড়া আর কিছু নয়।''
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিজেপি মুখপাত্র নলিন কোহলি বলেছেন, ''কংগ্রেস কিছু বলতে গেলেই টেররিজমের কথা বলে। এটা হলো ওদের নিজেদের তৈরি করা পরিস্থিতি। সব জেনেও তারা এতদিন তারা চুপচাপ বসেছিল। আয়কর দপ্তর আইন অনুসারে কাজ করে।''
কোহলি বলেছেন, '''কংগ্রেস তারপর দিল্লি হাইকোর্ট থেকে শুরু করে তিনটি জায়গায় আবেদন করেছে। সব খারিজ হয়ে গেছে। এখন তারা নিজেদের শহিদ হিসাবে দেখতে চায়। তারা পারলে আদালত থেকে ছাড় নিক। দেশের মানুষ যেভাবে কর দেয়, তাদেরও সেভাবে দিতে হবে। তারা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য করেনি। তারা ঘুমাচ্ছিল। এখন তারা মিথ্যা অভিযোগ করছে।''
তার দাবি, ''কংগ্রেস যে রিটার্ন ফাইল করেছিল, তার উপর এই নোটিশ দিয়েছে আয়কর কর্তৃপক্ষ। তারপর আয়কর ট্রাইবুন্যাল কংগ্রেসের অভিযোগ খারিজ করে দেয়.।''
এবার কী হবে?
অজয় মাকেন জানিয়েছেন, সোমবার তারা সম্ভবত সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানাতে চলেছেন। তিনি এই আশঙ্কাও করেছেন, যতদিনে কংগ্রেস ন্যায় পাবে, ততদিনে নির্বাচনপর্ব শেষ হয়ে যাবে।
তবে কংগ্রেস আদালতের মাধ্যমেই আয়কর নোটিশের মোকাবিলা করতে চাইছে।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, কংগ্রেসকে আয়কর নোটিশ দেয়া হয়েছে মানে এই নয় যে, কালই টাকাটা কংগ্রেসকে দিতে হবে। এটা নিয়ে মামলা হবে, আদালত তার রায় জানাবে। আর আয়কর দপ্তর একদিনে এই নোটিশ দেয়নি। তাদেরও একটা প্রক্রিয়া আছে। তবে ভোটের আগে এই আয়কর নোটিশ নিয়ে কংগ্রেস চাপে থাকবে। বিজেপি-র প্রচারে এটা বলার সুযোগ পাবে, কংগ্রেস কর ফাঁকি দিয়েছে। সেজন্যই কংগ্রেস কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন এদিন বিজেপি-র ফাইল করা রিটার্ন নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন।
জিএইচ/এসিবি(পিটিআই, এএনআই)