ফারাহ জাবিন শাম্মী লিখেছেন, ‘‘মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের সেই শিক্ষক জিনাতুন্নেসার কাছে যখনই কোনো বিষয়ে অভিভাবকরা অভিযোগ নিয়ে যেতেন তখন তার কাছ থেকে কোনো সমাধান পাননি কোনো অভিভাবক৷ বরং তিনি, যদি কারো স্কুল ভাল না লাগে তাদের সন্তান নিয়ে এই স্কুল থেকে চলে যাবার পরামর্শ দিতেন৷ আর সেদিনের ঘটনার পর বিচার চাইতে গেলে তিনি ফুল দেখলে ভোমরা আসবেই বলার পাশাপাশি মায়েদেরকে বলেন, আপনাদের বাসায় যখন হাজব্যান্ডরা কাজের মেয়েদের যৌন হয়রানি করে তখন কি কিছু করতে পারেন?''
এদিকে, প্রিপারেটরি স্কুলে পড়ছে এমন এক ছাত্রীর মা মুনিরা চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশ একটি আজব দেশ৷ অন্যায় দেখে চুপ করে থাকা আর মজা নেওয়া আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে৷ আর এর ফলে অন্যায় ক্রমশ বাড়ছে৷ মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল হচ্ছে তার জ্বলন্ত উদাহরণ৷ গত তিন বৎসর এই স্কুলটা অনাচারের নরক রাজ্যে পরিণত হয়েছে৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অহরহ৷ তার ওপর পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধের যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, সেটাও যথার্থ নয়৷ এছাড়া বিশ্বের মোট নারীর ৭ শতাংশ নাকি জীবনের যে কোনো সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
উন্নত বিশ্বের নারীরাও রেহাই পান না
ধর্ষণ শব্দটি শুনলেই মনে হয় এ ধরণের অপরাধ হয়ে থাকে শুধু অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে৷ আসলে কিন্তু মোটেই তা নয়৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই শতকরা ৩৩ জন মেয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়৷ এমনকি জার্মানির মতো উন্নত দেশের নারীরাও যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
ধর্ষিতা নারীরা জানাতে ভয় পান
জার্মানিতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত বা ধর্ষিত নারীদের সঠিক পদ্ধতিতে ‘মেডিকেল টেস্ট’-এর ব্যবস্থা করে, এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত স্ত্রী বিশেষজ্ঞ ডা. সোনিয়া পিলস বলেন, ‘‘ধর্ষণের শিকার নারী লজ্জায় এবং আতঙ্কে থাকেন৷ তিনি পুলিশের কাছে গিয়ে সে অভিজ্ঞতা বা ধর্ষক সম্পর্কে তথ্য জানাতে ভয় পান, কুণ্ঠা বোধ করেন৷ অনেকদিন লেগে যায় ধর্ষণের কথা কাউকে বলতে৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
ধর্ষককে ধরার জন্য দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষা
ধর্ষণের পর নারীদের কী করণীয় – এ বিষয়ে জার্মানির ধর্ষণ বিষয়ক নির্দেশিকায় কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ যেমন ধর্ষণের পর একা না থেকে কারো সাথে কথা বলা৷ গোসল, খাওয়া, ধূমপান, বাথরুমে যাওয়ার আগে, অর্থাৎ ধর্ষণের চিহ্ন মুঝে না যাবার আগে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো৷ এ পরীক্ষা করালে ধর্ষক কোনো অসুখ বা এইচআইভি-তে আক্রান্ত ছিল কিনা, তা জানা সম্ভব৷ নারীর শরীরে নখের আচড় বা খামচি থাকলে ধর্ষকের চিহ্ন সহজেই পাওয়া যায়৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
যাঁরা ধর্ষণের শিকার, তাঁদের জন্য জরুরি বিভাগ
ধর্ষক যেসব জিনিসের সংস্পর্শে এসেছে, অর্থাৎ অন্তর্বাস, প্যাড এ সব তুলে রাখুন৷ ছবিও তুলে রাখতে পারেন৷ নিজেকে দোষী ভাববেন না, কারণ যে ধর্ষণের মতো জঘণ্যতম কাজটি করেছে – সেই অপরাধী, আপনি নন৷ জার্মানির বেশ কয়েকটি শহরের হাসপাতালে যৌন নির্যাতন বিষয়ক আলাদা জরুরি বিভাগ রয়েছে৷ তাছাড়া ধর্ষণ সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে রয়েছে ‘গেভাল্ট গেগেন ফ্রাউয়েন’, যেখানে ২৪ ঘণ্টাই টেলিফোন করা যায়৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
গ্রুপ থেরাপি
যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার নারীদের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা সমাধানের জন্য জার্মানিতে রয়েছে গ্রুপ থেরাপি, যার সাহায্যে নারীরা আবার সমাজে সহজভাবে মিশতে পারেন এবং তাঁদের জীবনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাটি সহজে ভুলে যেতে পারেন৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
সবচেয়ে বেশি যৌন অপরাধ হয় বাড়িতেই
ভারতের কোথাও না কোথাও প্রতি ২২ মিনিটে একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে৷ তাই আদালতের নির্দেশে ভারতের পুলিশ বিভাগ এক সমীক্ষা চালিয়েছিল দিল্লির ৪৪টি এলাকায়৷ চলতি বছরের গত আট মাসে ২,২৭৮টি ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন এবং যৌন অপরাধের তদন্তের ফলাফলে দেখে গেছে: ১,৩৮০টি ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা হলেন পরিবারের লোকজন এবং পরিচিতজনেরা৷ অর্থাৎ নিজের বাড়িতেও মেয়েরা নিরাপদ নয়!
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
সঠিক বিচার চাই
২০১৩ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দিল্লিতে গণধর্ষণ ঘটনার পর, ভারতে ঘটা করে বিচার বিভাগীয় কমিশন বসিয়ে ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ দমনে আইন-কানুন ঢেলে সাজানো হয়৷ শাস্তির বিধান আরো কঠোর করা হয়৷ কিন্তু তাতে যৌন অপরাধের সংখ্যা না কমে বরং বেড়েছে৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
বাংলাদেশে ধর্ষণের শিকার
বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১১ সালে ৬২০ জন, ২০১২ সালে ৮৩৬ জন, ২০১৩ সালে ৭১৯ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ মাত্র ছ’মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৩১টি এবং এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮২ জন৷ তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে অপহরণ করে ধর্ষণ এবং পরে হত্যার ঘটনাও অনেক বেড়েছে৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
নারীর পোশাকই কি ধর্ষণের জন্য দায়ী?
বাংলাদেশের একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘বাংলাদেশের নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেপরোয়াভাবে, বেপর্দায় চলাফেলার কারণে ধর্ষণের শিকার হন৷’’ পুলিশের কর্মকর্তার দাবি, ধর্ষণের দায় প্রধানত নারীদের৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘বখাটে ছেলেরা তো ঘোরাফেরা করবেই৷’’ এ কথা শুধু পুলিশ কর্মকর্তার নয়, ভারত-বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাই এরকম৷ ধর্ষণ বন্ধ করতে এই মধ্যযুগীয় চিন্তা, চেতনার পরিবর্তন প্রয়োজন৷
-
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
ছোট বেলা থেকে সচেতন করতে হবে
ধর্ষণ সম্পর্কে ছোটবেলা থেকে সঠিক ধারণা দিলে স্বাভাবিকভাবে ধর্ষণের সংখ্যা কমবে৷ তাছাড়া পাঠ্যপুস্তকেও বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷ ধর্ষিতা নারীকে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়, সে সম্পর্কেও সচেতনতা দরকার৷ অনেকে যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন৷ গোটা সমাজও নারীকেই দোষ দিয়ে থাকে৷ ডাক্তারি বা মনস্তাত্ত্বিক সাহায্য ছাড়াও প্রয়োজন পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সমাজের বন্ধুবৎসল আচরণ৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
গত বৎসর কেমিস্ট্রি শিক্ষক নিয়াজী স্যার-এর মুখোশ খুলে দিল এক ছাত্রী৷ নবম শ্রেণির এক ছাত্রী যৌন হয়রানির সাক্ষ্য প্রমাণসহ হাজির করাতে নিয়াজী স্যার চাকুরিচ্যুত হয়৷ মেয়েটি পেরেছিল কারণ মেয়েটির বাবা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ছিল৷''
এরপর সদ্য ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানির ঘটনা প্রসঙ্গে মুনিরা চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘৫ই মে ৪ নং গেটের সাথে প্লে-গ্রাউন্ডে স্কুলের এক সুইপারের সহায়তায়, স্কুলের কাজে যে শ্রমিকরা কাজ করে তাদেরই একজন শ্রমিক ওর মুখ চেপে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিদের রুমে নিয়ে গিয়েছিল৷ মেয়েটি ফিরে এসে ওদের বলেছিল, জানো আমাকে ডাকাত আর গুন্ডা ধরেছিল, আমি মেরে পালিয়ে এসেছি৷ এদিকে বাচ্চারা টিচার আসলে বলে, কিন্তু টিচার ধমক দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়৷ রবিবার দিন স্কুল থেকে ফিরে ছোট্ট মেয়েটি জানায় ওকে বেশ কয়েকবার টিচাররা ডেকে নিয়ে গিয়েছিল৷ তখন ওকে ধমক দিয়ে বলেছে ও নাকি এইসব মিথ্যা কথা বানিয়ে বলছে এবং আর যেন এইসব না বলে৷ আমার মেয়ে হয়তো এই স্কুল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে কিন্তু হাজারও মেয়ে আছে ওরা আমাদেরই সন্তান৷ ওদের পাশে আমরা না দাঁড়ালে কে দাঁড়াবে?''
এসব ঘটনা বন্ধে সবাইকে প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে গোলাম মোর্তজা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আমাদের ভাবনাটা এমন হয়েছে যে, আমরা একটি মহাকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে বাস করছি৷ সব অন্যায় প্রতিকারের দায়িত্ব রাষ্ট্রের উপর ছেড়ে দিয়েছি৷ প্রতিবাদ বিষয়টিই ভুলে যাচ্ছি৷ ইয়াসমিন ধর্ষণ-হত্যার বিচার হতো না, যদি না উত্তাল আন্দোলন হতো৷ শামসুননাহার হলে অবমাননার প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীরা ওভাবে খেপে না উঠলে, ইতিহাসের অন্যতম নিকৃষ্ট ভিসি আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী বিদায় নিত না৷ বর্ষবরণের দিনের যৌন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে মার খেল ছাত্র ইউনিয়নের নেতা কর্মীরা৷ পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হলো নারী কর্মী৷ ভিসিও উদ্বেগহীন নিশ্চুপ থেকে, এত বড় অন্যায় চাপা দেয়ায় সহায়তা করে, রেহাই পেয়ে গেলেন৷
-
ছোট পোশাক পরাই কি ধর্ষণের কারণ?
যুগের সাথে পোশাক
যুগে যুগে পোশাকের ধরনে পরিবর্তন এসেছে৷ আদিমকালে ছিল পশুর চামড়া, গাছের ছাল আর এখন রয়েছে নানা ধরনের পোশাক৷ বর্তমানে দেশ, সংস্কৃতি, সমাজ ব্যবস্থা, কাজের ধরন, অনুষ্ঠান, পছন্দ ও ফ্যাশানের ভিত্তিতে বহু ধরনের পোশাক পরে থাকেন নারীরা৷
-
ছোট পোশাক পরাই কি ধর্ষণের কারণ?
শরীর প্রদর্শন মানেই কি ধর্ষককে আমন্ত্রণ?
ভারতে বেশিরভাগ ধর্ষণ মামলায় দেখা গেছে, ধর্ষিতা সালোয়ার কামিজ বা শাড়ি পরেছিলেন৷ অর্থাৎ যাকে বলা হয় ভারতীয় নারীর আদর্শ পোশাক, সে ধরনের পোশাকই তাঁরা পরেছিলেন৷ অর্থাৎ এ জরিপ থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, শরীর প্রদর্শন না করে বা তথাকথিত ‘আধুনিক’ পোশাক না পরেও শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছেন নারীরা৷
-
ছোট পোশাক পরাই কি ধর্ষণের কারণ?
আইনের ভয় নেই
২০১৩ সালে এক জরিপে দেখা গেছে যে, এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোতে প্রতি চারজনের মধ্যে একজন পুরুষ জীবনে অন্তত একবার কোনো নারীকে ধর্ষণ করেছে৷ এর মধ্যে বেশিরভাগ পুরুষকেই কোনো আইনি ঝামেলা পোহাতে হয়নি৷
-
ছোট পোশাক পরাই কি ধর্ষণের কারণ?
ধর্ষণ যখন বিনোদনের মাধ্যম
ভারতের উত্তর প্রদেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে৷ এর কারণ হিসেবে পুলিশ নারীদের উপর পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব, মেয়েদের মোবাইল ব্যবহার ও ছোট পোশাক পরিধানকে উল্লেখ করেছে৷ নারীদের নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ পুলিশ বলেছে, সেখানকার পুরুষরা তাদের বিনোদনের অভাব পূরণ করছে ধর্ষণের মাধ্যমে৷
-
ছোট পোশাক পরাই কি ধর্ষণের কারণ?
নারীদের দাবিয়ে রাখার হাতিয়ার
রাস্তা, অফিস বা যে কোনো পাবলিক প্লেসে পুরুষের যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন নারীরা৷ বিশেষ করে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ হওয়ায় নারীদের দাবিয়ে রাখতে পুরুষরা ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে৷
-
ছোট পোশাক পরাই কি ধর্ষণের কারণ?
পরিচিতদের দ্বারাই বেশি ধর্ষণ
২০১৩ সালে ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর রিপোর্ট বলছে, সে বছর ১০০ জন ধর্ষণের শিকার নারীর মধ্যে ৯৮ জন এমন ব্যক্তিদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছেন, যারা তাঁদের পরিচিত৷ আদালতে যেসব মামলা ওঠে, বা গণমাধ্যমে যেসব ঘটনা প্রকাশ পায় সেগুলো বেশিরভাগই বাইরের লোকের হাতে৷ ফলে পরিচিত ব্যক্তি দ্বারা ধর্ষণের ব্যাপারটি ধামাচাপা পড়ে যায়৷
-
ছোট পোশাক পরাই কি ধর্ষণের কারণ?
যৌন নিগ্রহ সর্বত্র
ভারতে জন্মের আগে ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ বেআইনি হলেও, খুব সাধারণ ঘটনা৷ ফলে পৃথিবীর আলো দেখতে পাওয়া মেয়েদের সংখ্যা এত কম যে, সমাজে নারী-পুরুষের অনুপাতে হেরফের হয়৷ এছাড়া বাল্যবিবাহ, কম বয়সে মা হওয়া, সন্তান জন্ম দিতে গিয়েও মৃত্যুবরণ করছেন নারীরা৷ পরিবারের ভেতরেও চলে যৌন নির্যাতন এবং ধর্ষণ৷ এরপরও কি আপনারা ধর্ষণের জন্য পোশাককে দায়ী করবেন?
লেখক: অমৃতা পারভেজ
মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের শিশু নিপীড়নের ঘটনাও চাপা দিয়ে দেয়া যেত, অশ্লীল বক্তব্যের প্রতীক অধ্যক্ষও অক্ষতই থেকে যেত যদি না অভিভাবকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে না আসতেন৷ আজ আপনার পাশের বাড়ির শিশু নিপীড়নের শিকার হয়েছে, কাল আপনার শিশু হবে না, এটা ভাবার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই৷ ইসমত পুলিশের হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছে, এরপর আপনার মেয়েও পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাবে না৷ সুতরাং ভুলে যাওয়া সেই প্রতিবাদের পথে আপনাদের নামতেই হবে৷ এর কোনো বিকল্প নেই৷ কোনো সরকার আপনার সাহায্যে এগিয়ে আসবে না, যদি না বাধ্য করতে পারেন৷''
ওয়াহিদ ইবনে রেজা লিখেছেন, ‘‘যে দেশের ঐতিহ্যের একটি অনুষ্ঠানে, হাজার হাজার মানুষের সামনে, দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে একদল অমানুষ ২০টির উপর শ্লীলতাহানি ঘটায় এবং তারপর আইন শৃঙ্খলা ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান সেটাকে নিছক দুষ্টুমি বলে উড়িয়ে দেয়, অনেক মানুষ আবার মেয়েদের ঘাড়ে দোষ চাপায়, এমনকি সেই ১১ বছরের মেয়েটিরও নাকি দোষ ছিল- সেই দেশে স্কুল শিক্ষক (!) তো ক্লাস ফাইভ আর ক্লাস ওয়ান এ পড়া মেয়েদের মধু বলবেনই! গতকালকেই একজনকে দেখলাম চলন্ত বাসে ধর্ষণ নিয়ে আমাদের দেশের একটা নিউজ শেয়ার করতে৷ মনে হচ্ছে আর ঢাকাতে নেই, দিল্লিতে আছি৷ আমাদের জাগতে আর কত দেরি পাঞ্জেরি?''
টুইটারে তানভীর আহমেদ বাংলাদেশের এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার সংবাদটি শেয়ার করেছেন৷
অনিরুদ্ধ হোম রায় বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম এর একটি খবর শেয়ার করেছেন, যেখানে নারীদের হয়রানির বিরুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়নের বিক্ষোভের কথা বলা হয়েছে৷
নামিয়া আক্তার বাংলাদেশে নারীদের উপর যৌন হয়রানির বিষয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন শেয়ার করে সবার সেটা পড়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন৷
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: জাহিদুল হক