1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত-ইইউ সামিটে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে

১৫ জুলাই ২০২০

বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈঠকে। ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিতি থাকবেন মোদী।

https://p.dw.com/p/3fLJ5
ফাইল চিত্রছবি: Reuters/Handout/India's Press Information Bureau

বহু অপেক্ষার পর বুধবার শুরু হচ্ছে ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সামিট। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে। আলোচনা হতে পারে করোনাকালীন বাণিজ্য এবং চীনের অবস্থান নিয়ে। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই বৈঠক হওয়ার কথা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও ভারতের তরফ থেকে থাকবেন ই কমার্স মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল।

গত মার্চ মাসে এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ব্রাসেলসে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে তখনকার মতো বৈঠক বাতিল করা হয়। কোনও কোনও বিশেষজ্ঞের মতে, সে সময় বৈঠক বাতিল হওয়ার আরও একটি কারণ ছিল দিল্লি দাঙ্গা। শেষ পর্যন্ত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেই বৈঠক হবে সাব্যস্ত হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সূত্র জানিয়েছে, এ বারের বৈঠকে ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার কথা হয়েছে ভারতের। কিন্তু নানা কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। মার্চ মাসের বৈঠকের আগেও এই বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক মহলে নানা আলোচনা হয়েছিল। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে ইইউ-র সূত্র জানাচ্ছে, একটি বিষয় নিয়ে খানিক আশঙ্কিত হয়ে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলেছেন। চীনের অসংখ্য অ্যাপ দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মোদী বিদেশী ব্র্যান্ড ছেড়ে দেশীয় ব্র্যান্ডের দিকে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন। সম্প্রতি গ্লোবাল সামিটেও ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর আত্মনির্ভর ভারতের প্রসঙ্গ তুলেছেন। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিনিয়োগ ভারত কী ভাবে গ্রহণ করবে, তা নিয়ে নানা মহলে নানা জল্পনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্র অবশ্য জানাচ্ছে, চীনের অ্যাপ নিষিদ্ধ করার সঙ্গে বিনিয়োগের কোনও সম্পর্ক নেই।

ডয়চে ভেলেকে কেন্দ্রীয় সরকারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বৈঠকে চীনের প্রসঙ্গও উত্থাপন করবে ভারত। ভারতীয় উপমহাদেশে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ভাবে চীন আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করতে পারে ভারত। অন্য দিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি লাদাখে ভারত-চীন সংঘাত নিয়ে ওয়াকিবহাল ইইউ। চীনের বয়ানও তাদের কাছে আছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে তারাও নিজেদের অভিমত প্রকাশ করতে পারে। এ ছাড়াও বিশ্ব বাণিজ্যে চীনের অবস্থান নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। বস্তুত, করোনা-কালে অ্যামেরিকা এবং চীনের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ত হয়েছে। ফলে বিশ্ব রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সে কারণেই এ দিনের বৈঠকেও বিষয়গুলি আলোচনায় উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

করোনা পরিস্থিতি নিয়েও বৈঠকে দীর্ধ আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গোটা বিশ্ব জুড়ে যে ভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে এবং তার জেরে অর্থনীতি যে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সূত্র জানাচ্ছে, ইইউ এবং ভারতের মধ্যে একটি রোড ম্যাপ তৈরি হতে পারে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত করোনা এবং অর্থনীতি নিয়ে কী কী করা সম্ভব তার উপরেই তৈরি হতে পারে রোড ম্যাপটি।

পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে বৈঠকে। সূত্র জানাচ্ছে, মহাসাগরীয় সুরক্ষা, প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা বিষয়েও বৈঠকে জরুরি আলোচনা হতে পারে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলদস্যুদের সঙ্গে যুদ্ধে এর আগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে ইইউ। বিশেষ করে পশ্চিম ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইইউ যথেষ্ট শক্তিশালী। সে কথা মাথায় রেখেই দুই পক্ষ কোনও নতুন চুক্তি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সিবিআই এবং ইউরোপোলের মধ্যে একটি চুক্তি সই হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, রয়টার্স)