1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু

২১ জুলাই ২০২০

করোনা পৌঁছে গিয়েছে ভারতের গ্রামেও। গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। জানিয়েছে আইসিএমআর এবং ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন।

https://p.dw.com/p/3fdQd
ছবি: Getty Images/AFP/N. Seelam

ভারতে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে মাসখানেক আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এ বার ভারতীয় মেডিক্যাল কাউন্সিল ও রিসার্চ (আইসিএমআর) সে কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করল। যা সমর্থন করেছে ভারতের মেডিক্যাল অ্যাসোশিয়েশনও। এর দুই দিনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানিয়ে দিল, সে রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও বলেছেন, তাঁর রাজ্যেও গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে।

গোষ্ঠী সংক্রমণ মানে কোনও জায়গায় একজন বা দুইজনের নয়, গোষ্ঠীর মধ্যেই করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। কেন ছড়াচ্ছে, তার কারণও অজানা। জেনে বুঝে কেউ কোনও করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসেননি, তাও করোনা হচ্ছে এবং এলাকার বেশিরভাগ লোকের মধ্যে দ্রুত ছড়াচ্ছে। সে জন্যই গোষ্ঠী সংক্রমণ খুবই চিন্তার কথা।

আইসিএমআর জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে ভারতে করোনার সংক্রমণ চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। সব চেয়ে বড় কথা, করোনা কেবল আর শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, তা গ্রামেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। এবং সে কারণেই আইসিএমআর এবং মেডিক্যাল কাউন্সিলের ধারণা গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর গোষ্ঠী সংঘর্ষ শুরু হওয়ার অর্থ, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে।

গত এপ্রিল মাসে প্রবীণ চিকিৎসক এবং ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির উপর বসে আছে ভারত। ঠিক মতো টেস্ট হচ্ছে না। টেস্ট হলেই বোঝা যাবে, আসল সংখ্যাটা অনেক বেশি। দেশে যে কোনও সময় গোষ্ঠী সংক্রমণ হতে পারে, সে কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সে কথাই সত্য বলে মেনে নিল আইসিএমআর। তাদের আশঙ্কা, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।

ঠিক কী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা? আইসিএমআর এর গাইডলাইন অনুযায়ী দেশে টেস্টের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়াতে হবে। বস্তুত আগের চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট হচ্ছে এখন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কেবলমাত্র অসুস্থ ব্যক্তিদের টেস্ট করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। কমিউনিটি ধরে ধরে পরীক্ষা করতে হবে। সব বয়সের সব ধরনের মানুষের পরীক্ষা করতে হবে। তাহলেই বোঝা যাবে গোষ্ঠীর ভিতর কতটা সংক্রমণ ছড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভারতের ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় সমস্যা হলো, এখানে প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যক্তি লক্ষণহীন। অর্থাৎ, শরীরে করোনা ভাইরাস থাকলেও তাঁদের কোনও উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। ফলে গোষ্ঠী ধরে ধরে পরীক্ষা না করলে আসল সংখ্যা বোঝা মুশকিল। আর ওই উপসর্গহীন ব্যক্তিদের মাধ্যমেই গোষ্ঠীর ভিতর দ্রুত ছড়াতে থাকবে করোনা।

বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা বলছেন, দ্রুত এই ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ না করলে আগামী এক মাসের মধ্যে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে দেশে। যে ভাবে গ্রামে পৌঁছে গিয়েছে করোনা, তা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। এর হাত থেকে বাঁচার একমাত্র রাস্তা টেস্ট, টেস্ট এবং টেস্ট। কয়েক মাস আগেই স্লোগান ছড়িয়ে দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)