1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রিগেড নিয়ে উদ্দীপনা তুঙ্গে

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

একদা শত্রু বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস এবার বঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা করেছে৷ রবিবার তাদের যৌথ ব্রিগেড সমাবেশ৷ ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে৷

https://p.dw.com/p/3px2R
২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত একটি ব্রিগেড প্যারেড
২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় আয়োজিত একটি ব্রিগেড প্যারেডছবি: Debajyoti Chakraborty/NurPhoto/picture alliance

পশ্চিমবঙ্গে বামশাসনের সেই সময়ে বছরে অন্তত একটা ব্রিগেড সমাবেশ হতো নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি জাহির করার জন্য৷ বিশাল সব মিছিল বের হতো কলকাতা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে৷ মিছিল আসতো বিভিন্ন জেলা থেকে৷ ব্রিগেড ছাপিয়ে সেই জনসমাবেশ ছড়িয়ে পড়তো গোটা শহর জুড়ে৷ কিন্তু বামেদের সেই প্রভাব, প্রতিপত্তি আর নেই৷ এখন তারা ৬–৭%-এর চেয়ে বেশি ভোট পায় না৷ একদা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনি জোটের কারণেও সমালোচিত হচ্ছে বামেরা৷ যদিও রাজনীতিতে আগের ‘বন্ধু' এখন ‘শত্রু’, কিংবা আগের ‘শত্রু’ এখন বন্ধুর দৃষ্টান্ত আরো আছে৷ এ প্রসঙ্গে তৃণমূল আর বিজেপির অতীত সম্পর্কের বিষয়টিও আলোচনায় তুলে আনেন অনেকে৷

অবশ্য সমালোচনা সত্ত্বেও কংগ্রেস আর বামফ্রন্ট তাদের অবস্থানে অটল, যে বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস আদতে একই মুদ্রার দুটি পিঠ৷ ওদিকে তৃণমূলের কটাক্ষ, বিজেপির সুবিধে করে দিতেই বাম–কংগ্রেস মিলে বিরোধী ভোট কাটার খেলায় নেমেছে৷ এই পরিস্থিতিতে, ভোটের আগে প্রথম ব্রিগেড সমাবেশ রবিবার৷

বাম কর্মী-সমর্থকরা এবার নানাভাবে চেষ্টা করছেন ব্রিগেডের সভার প্রচারপর্ব থেকেই মানুষকে পাশে পাওয়ার৷ পুরনো দিনের বাম কর্মীরা যেমন নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নজর কাড়তেন, এবারও সেই উদ্যোগ কলকাতা শহরে এবং বিভিন্ন জেলায় চোখে পড়ছে৷ সময়ের দাবি মেনে আধুনিকতা এসেছে সেই প্রচারে৷ বিদেশি কায়দায় ‘‌ফ্ল্যাশ মব’ ‌দিয়ে আকৃষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে মানুষকে৷ বামফ্রন্টের বড় শরিক দল সিপিআইএম–এর যিনি এই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম প্রধান হোতা, সেই সুদীপ সেনগুপ্ত যদিও বললেন, আজ বলে নয়, প্রতিবারই তাঁদের জনসভায় এবং তার প্রচারের সময় নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ওরা করেন৷ তবে এই প্রথম, এই কাজে তারা সোশাল মিডিয়াকেও কাজে লাগাচ্ছেন৷ ফলে বেশি মানুষের চোখে পড়ছে৷ তিনি বললেন, ‘‌‘‌প্রত্যেকটি সমাবেশ, প্রত্যেকটি নির্বাচনের আগে, সাধারণত বামপন্থিরাই এটা করে, আমাদের অনেক নতুন নতুন গান হয়, নতুন কবিতা লেখা হয়, অনেক প্রবন্ধ লেখা হয়৷ কিন্তু তার প্রচারটা আমরা পাই না৷ যে কারণে আমরা ঠিক করেছিলাম, এবার আমরা নিজেরাই বিকল্প ব্যবস্থা করে নেবো৷’’

ঠিক করেছিলাম, নিজেরাই বিকল্প ব্যবস্থা করে নেব: সুদীপ সেনগুপ্ত, বাম সাংস্কৃতিক কর্মী

তবে রাস্তায় নেমে কাজ করতে অসুবিধে হচ্ছে, যেহেতু সরকার, বা পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না৷ জানালেন সুদীপ সেনগুপ্ত৷ একমাত্র কলকাতার যাদবপুর, যেখানকার বিধায়ক বামফ্রন্টের, সেখানে বৃহস্পতিবার থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়েছে৷ ফ্ল্যাশ মবের মাধ্যমে নবীন বাম কর্মীরা ব্রিগেডের সভায় আসার যে ডাক দিয়েছেন, সোশাল মিডিয়া বাহিত হয়ে তা ছড়িয়েছে রাজ্যের সর্বত্র এবং রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও৷ আরো অন্তত ২০টি গান একইভাবে ছড়ানো হয়েছে ব্রিগেড সমাবেশের প্রচারে৷ ঠিক কতজন লোক আশা করছেন উদ্যোক্তারা?‌ সিপিএম–এর কলকাতা জেলা কমিটির হিসেব, অন্তত তিন লক্ষ লোক তো হবেই৷ ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড জুড়ে লাউডস্পিকারই বসছে ৭০০–র কাছাকাছি৷

এদিকে ৭ মার্চ কলকাতা আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তিনিও ব্রিগেডে জনসভা করবেন৷ বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, সেই সভায় অন্তত সাত লক্ষ লোকের সমাবেশ ঘটানোর চেষ্টা করছে তারা৷ বাম-কংগ্রেসের সভা জনসংখ্যায় না হোক, উদ্যম এবং উদ্দীপনায় তাকে টেক্কা দিতে পারে কিনা, সেদিকেই এখন নজর রয়েছে সবার৷