'বিচার পেতে আলোর পথে' কলকাতা, আবার রাতদখল
জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধে রাতে ঘরের আলো বন্ধ রেখে বাইরে মোমবাতি নিয়ে প্রতিবাদ দেখালো কলকাতা।
'বিচার পেতে আলোর পথে'
জুনিয়র ডাক্তাররা আরজি করে 'বিচার পেতে আলোর পথে'-র প্রতিবাদে অংশ নেন। সেখানে যোগ দেন সাধারণ মানুষও। যোগ দিয়েছিলেন মৃত চিকিৎসকের বাবা-মা এবং পরিবারের মানুষরাও। ফুল, মালা, প্রতীকী ছবি দিয়ে ছোট মঞ্চের চারপাশে জ্বলতে লাগলো মোমবাতি, যা আসলে প্রতিবাদের আগুন। প্রতিবাদের আলো ছড়িয়ে গেল চারদিকে।
নির্যাতিতার বাবা-মায়ের অভিযোগ
প্রশ্ন তুললেন নির্যাতিতার বাবা-মা। বললেন, ''কেন পুলিশ টাকা দিতে চেয়েছিল? হাসপাতাল কী করে বললো, মেয়ে আত্মহত্যা করেছে? মেয়ের মুখ দেখতে কেন সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগলো? সাতটার মধ্যে করা এফআইআর নথিভুক্ত হতে কেন পৌনে বারোটা বাজলো? কেন পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করলো?'' উত্তর চেয়েছেন তারা। জবাব চান সাধারণ মানুষও।
কেন দাহ করতে এত চাপ?
নির্যাতিতার বাবা বলেছেন, তারা দেহ রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের চাপে দাহ করতে বাধ্য হন। দাহ করার অর্থ জোর করে পুলিশ দেয়। তার মেয়ে জানলো, বাবা দাহ করার অর্থও দিতে পারলো না। তারপর ডিসি নর্থ অফিসে টাকা দিতে চান। নেননি তারা। সাদা কাগজে সই করানোর চেষ্টা করেন। কাগজ তারা ছিঁড়ে ফেলে দেন। মা বলেন, ''অপরাধীরাও আমার মতো রাতে নিদ্রাহারা হোক।''
প্রতিবাদের আলোয়
বুধবার কলকাতার প্রায় প্রতিটি প্রান্তে ছিল এই প্রতিবাদের আলো। মানুষ রাস্তায় নেমে মোমবাতি হাতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বাড়ির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে রেখেছেন। আরজি করের চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যা এবং তারপরের ঘটনা তাদের এতটাই নাড়া দিয়েছে যে, সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন। তাদের এই প্রতিবাদের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো দেশে।
হেডলাইট বন্ধ রেখে
প্রতিবাদে নিজের মতো করে অংশ নিচ্ছেন সকলেই। গাড়ি চালকেরাও হেডলাইট বন্ধ রেখে গাড়ি চালিয়েছেন। বরানগরের এই ছবি কলকাতার অনেক জায়গায় দেখা গেছে। প্রতিবাদের ফলে রাস্তায় যানজট হলেও কেউ বিরক্ত হচ্ছেন না। বরং গাড়ি থেকেই তারা বলছেন 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'।
আরজি করের সামনে
আরজি কর হাসপাতালের সামনে তখন শুধু মানুষের ভিড় আর মোমবাতির প্রতিবাদের আলো। জুনিয়র ডাক্তারদের ডাকে সাড়া দিয়ে তারা রাস্তায় নেমেছেন। তারা ন্যায় চান। তারা চান, অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা বন্ধ হোক। ন্যায় পাক নির্যাতিতা।
শ্যামবাজারের মোড়ে
উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়। সেখানে রাতে মোমবাতি রাস্তায় রেখে প্রতিবাদ হলো। সেই প্রতিবাদে সামিল হলেন সকলেই। এমনকি নিজের ছোট্ট বাচ্চাকে নিয়ে মোমবাতি জ্বালালেন এই মানুষটি।
জ্বালাও আলো
মানুষরা বাড়ির বাইরে এসে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রাস্তায় নেমেছেন মা-বোনেরা। তাদের মোমবাতির আলোয় অন্ধকার দূর করার আহ্বান শুনেছে পশ্চিমবঙ্গ।
উৎসারিত আলোয় প্রতিবাদের মুঠি
দমদমের ছবি। মোমবাতির আলোর সঙ্গে প্রতিবাদী হাত। এটাই দেখিয়ে দিচ্ছে মানুষের ক্ষোভের আগুন কীভাবে জ্বলছে। অন্যায়ের প্রতিবাদে ন্যায় পেতে তারা রাস্তায় নেমেছেন।
প্রতিবাদের ভাষা
কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র দেখা গেছে এই ছবি। আলোয় আলোয় প্রতিবাদের ছবি। পাড়ায় পাড়ায় এভাবেই প্রতিবাদ হয়েছে। ন্যায়ের দাবিতে প্রতিবাদ।
আগুনের পরশমণি
এভাবেই বুধবার রাতে আগুনের পরশমণি জ্বলে উঠলো পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে। ন্যায়ের দাবি আরো জোরালো হলো। মানুষের প্রতিবাদ আরো তীব্র হলো।