1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বিচক্ষণতা’ দেখালেন সুইজারল্যান্ডের মানুষ

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করতে দক্ষিণপন্থি দলের এক উদ্যোগ বানচাল করলেন সুইস ভোটাররা৷ ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কের আরও উন্নতির পথ খুলে গেল৷ ইইউ এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3j5NI
ছবি: Alessandro Della Valle/dpa/picture-alliance

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের নিষ্পত্তি করতে সুইজারল্যান্ডে সরাসরি ভোটারদের রায় জানার চল রয়েছে৷ রবিবারের এক গণভোটে এমনই কিছু প্রশ্ন রাখা হয়েছিল৷ তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল ইইউ-র সঙ্গে সম্পর্কের ভবিষ্যতকে কেন্দ্র করে৷ সে দেশের কট্টর দক্ষিণপন্থি এসভিপি দল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ওণভোট সুইজারল্যান্ডের মধ্যে মানুষের অবাধ চলাচল বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়ে ভোটারদের সমর্থনের আশা করেছিল৷ তাদের যুক্তি, দেশ বিদেশি নাগরিকে ভরে যাচ্ছে৷ জনসংখ্যা বাড়ার কারণে আবাসন থেকে শুরু করে সামাজিক কল্যাণ কাঠামোর উপর চাপও বাড়ছে৷ উল্লেখ্য, বছরে গড়ে প্রায় ৭৫,০০০ ইইউ নাগরিক সুইজারল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন৷ দেশের জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশই এখন বিদেশি৷

সুইজারল্যান্ডের ভোটাররা অবশ্য দক্ষিণপন্থি দলের এমন উদ্যোগের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন৷ রবিবার ৬১ দশমিক ৭ শতাংশ ভোটার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেন৷ বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায়ও এমন পূর্বাভাষ পাওয়া গিয়েছিল৷ ইইউ-র সঙ্গে চুক্তি বাতিল হলে দক্ষ কর্মীর অভাব দেখা দেবে এবং সুইজারল্যান্ডের সম্পদে টান পড়বে বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মনে করেন৷

ইইউ-র সঙ্গে সহযোগিতাকে কেন্দ্র করে গণভোটের আগেও বাধার মুখে পড়েছিল দেশের সবচেয়ে বড় দল এসভিপি৷ সরকার, সংসদ, শ্রমিক ও মালিক সংগঠন এবং অন্য সব রাজনৈতিক দল সেই উদ্যোগের বিরোধিতা করে৷ ফলে সংবিধান সংশোধন করে অভিবাসনের বিষয়টি শুধুমাত্র জাতীয় পর্যায়ে সীমিত রাখার প্রচেষ্টা বিফল হলো৷ দেশের একটা বড় অংশের আশঙ্কা, শুধু মানুষের অবাধ চলাচলের নিয়ম বাতিল করলে ইইউ-র সঙ্গে সার্বিক সম্পর্কের ক্ষতি হবে, যার পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে এক বিশেষ শর্তের আওতায় সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সহযোগী বাকি বোঝাপড়াগুলিও বাতিল করতে পারে৷

ভোটারদের এই রায়ের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা আরো নিবিড় হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ নাগরিক অধিকারের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতার কাঠামো আরও মজবুত করতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা আরও গতি পাবে৷ ইইউ সে দেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন বোঝাপড়াগুলিকে একটি চুক্তির অন্তর্গত করার চেষ্টা চালাচ্ছে৷ এর ফলে অবশ্য অতীতে সুইজারল্যান্ড যে সব ছাড় আদায় করতে পেরেছিল, সেগুলি হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে৷ তাই সে দেশের সরকারও এ বিষয়ে দরকষাকষি করছে৷ ২০১৪ সালে এসভিপি দলেরই উদ্যোগে অন্য এক গণভোটে মানুষ সামান্য ব্যবধানে প্রস্তাবের পক্ষে রায় দেওয়ায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বড় ধাক্কা খায়৷ সে যাত্রায় সম্পর্ক মেরামত করতে বেশ কয়েক বছর সময় লেগেছিল৷

রবিবারের গণভোটের ফলাফল ঘোষণা করার পর ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন দ্বিপাক্ষিত সম্পর্ক আরও জোরালো ও গভীর করে তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন৷ ইইউ সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল এক টুইট বার্তায় সুইজারল্যান্ডের গণভোটের রায়কে স্বাগত জানিয়ে লেখেন, ‘‘সুইস জনগণ স্পষ্ট বার্তা পাঠায়েছে৷ আমাদের সামনে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে৷’’

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)