‘বিএসএফ যেখানে পয়সা পায় না, সেখানে চোরাচালান হয় না’
সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর দুর্নীতি ও বিচারহীনতা দায়ী বলে মনে করেন ভারতের মানবাধিকারকর্মী কিরিটি রায়৷ এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকার থেকে প্রতিবাদ না জানানোরও কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি৷
সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে ২০১১ সালে বিজিবি-বিএসএফ চুক্তি করে৷ বিভিন্ন সময় দুই দেশের সরকারি পর্যায়ের বৈঠক থেকেও প্রতিশ্রুতি আসে৷ তারপরও কেন একের পর এক সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটে চলছে?
এই নিয়ে ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ ইউটিউব টকশোতে আলোচনায় অংশ নেন বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সচিব কিরিটি রায়৷ সীমান্তে হত্যার বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে যত মানুষ মারা যায় তার আশি শতাংশই ভারতীয়, বিশ শতাংশ বাংলাদেশি৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০১০ পর্যন্ত এক হাজার মানুষকে বিএসএফ হত্যা করেছে৷
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ থেকে বছরে গড়ে দেড়শো জন মারা যাচ্ছেন এই সীমান্তে৷ তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় আইনে গরু পাচারকারী, চোরা চালানকারী কাউকে মারার এখতিয়ার নেই, চড় মারার এখতিয়ারও বিএসএফ এর নেই৷ বিএসএফ অ্যাক্ট ১৯৬৮ এ নেই৷’’
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
১০০ কোটি ডলার ঋণ ও ১৪ প্রকল্প
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার একবছর পর ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ভারত সফরে যান৷ সেসময় ১০০ কোটি ডলারের এলওসি বা ঋণরেখা অনুমোদন করে ভারত৷ এই অর্থে জনপরিবহন, সড়ক, রেলপথ সেতু আর অভ্যন্তরীন নৌপথের ১৪ টি প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি হয়৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
বন্দী বিনিময়
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তি হয়৷ ২০১১ সালের ১৩ই জানুয়ারি তা কার্যকর হয়৷ চুক্তি অনুযায়ী কোনো দেশের নাগরিক অন্য দেশে সাজাপ্রাপ্ত হলে তাকে অনুরোধক্রমে ফেরত পাঠাতে পারবে৷ তবে এর আগেই অনুপ চেটিয়াসহ ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদি নেতাদের গ্রেপ্তার করে দেশটিতে পাঠানো হয় বলে গণমাধ্যমে খবর বেরোয়৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
ছিটমহল বিনিময়
২০১৫ সালের জুন মাসে ভারত-বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুমোদন হয়৷ যার মাধ্যমে ২০১৫ সালের জুলাইতে দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত ছিটমহল বিনিময় হয়৷ ভারতের ১১১টি ছিটমহল যুক্ত হয় বাংলাদেশের সাথে৷ একইভাবে ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলও হয়ে যায় ভারতের অংশ৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
নদীর পানি বন্টন
বাংলাদেশের ভারতের অভিন্ন নদীর সংখ্যা ৫৪ টি৷ এর মধ্যে শুধু গঙ্গা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি আছে৷ যদিও পানি বন্টনের ক্ষেত্রে এই চুক্তি ভারত মানছে না বলে অভিযোগ আছে৷ অন্যদিকে পাঁচ দশক ধরে তিস্তা চুক্তির চেষ্টা চললেও তা সম্ভব হচ্ছে না দেশটির উদাসীনতার কারণে৷ যার ফলে এখন একতরফাভাবে নদীটির পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
ভারসাম্যহীন বাণিজ্য
১৯৭২ সালে প্রথম বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়৷ ২০১৫ সালে স্বাক্ষর হয় এ বিষয়ে নতুন চুক্তি৷ এর আওতায় দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত হাটসহ আরো কিছু বাণিজ্য সম্পর্কিত চুক্তি হয়েছে৷ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের আকার ছিল ৯১৪ কোটি ডলার৷ যার সিংগভাগই ভারতের অনুকূলে৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
উন্নয়ন সহযোগিতার কাঠামো
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে একটি উন্নয়ন সহযোগিতাবিষয়ক কাঠামোগত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ যার মধ্যে আছে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পানি সম্পদ; বিদ্যুৎ; শিক্ষা, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ইত্যাদি৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধি
এই চুক্তি সম্পর্কে ভারতীয় দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘‘দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এক দেশ অন্য দেশের ভূখণ্ড থেকে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও রক্ষার লক্ষ্যে এ চুক্তি হয়েছে৷ ভারত ও বাংলাদেশ একে অপরকে ‘সবচেয়ে পছন্দের দেশ’-এর মর্যাদা দিয়েছে৷’’
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
বাংলাদেশ ভারতের পণ্য পরিবহন
দুই দেশের মধ্যে হওয়া বাণিজ্য চুক্তি অনুযায়ী এক দেশ আরেক দেশের জল, স্থল ও রেলপথ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য ট্রানজিটের সুবিধা নিতে পারে৷ ২০১৬ সালে মাশুলের বিনিময়ে ভারতকে আশুগঞ্জ নৌ বন্দর দিয়ে বহুমাত্রিক ট্রানজিট সুবিধা দেয় বাংলাদেশ৷ সড়কপথে ট্রানজিট দিতে ২০১৫ সালে আখাউড়া অগরতলা সীমান্ত দিয়ে পরীক্ষামূলক চালান পাঠানো হয়৷ যা পরবর্তীতে নিয়মিত হয়নি৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
ভারতের রেল যাবে বাংলাদেশ হয়ে
আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে কোলকাতা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে শিলিগুড়ি যাবে৷ ২০১১ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় এ বিষয়ক একটি চুক্তি হয়৷ চুক্তি অনুযায়ী এজন্য দুই দেশকে তাদের অংশের রেলপথ নির্মাণ করতে হবে৷ বাংলাদেশ অংশের সাত কিলোমিটার রেলপথ আগামী বছরে জুন মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
সাবরুমের মানুষে জন্য ফেনীর পানি
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে সাতটি সমঝোতা সই ও চুক্তি হয়েছে৷ একটি সমঝোতার আওতায় ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে ভারত৷ ওই পানি তারা ত্রিপুরার সাবরুম শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করবে৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
বন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহন
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করে ভারত আটটি রুটে তার উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোদে পণ্য আনা নেয়া করতে পারবে৷ এজন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা পদ্ধতি কী হবে, তা নির্ধারণে একটি সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সফরে৷
ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি
চুক্তি থাকলেও হত্যা থেমে নেই
সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে ২০১১ সালে বিজিবি-বিএসএফ একটি চুক্তি করে৷ নেয়া হয় সীমান্ত পারাপারে অস্ত্র ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত৷ তবে সীমান্তে দেশটির আচরণে তার প্রতিফলন নেই৷ গত ১০ বছরে ২৯৪ বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ৷
আলোচনায় অংশ নেওয়া আরেক অতিথি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জেনারেল সেক্রেটারি সায়ন্তন বসুর দাবি, ‘‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ছয়মাস, একবছর পরপর এই ধরনের ঘটনা ঘটে৷ তখন খবরের কাগজে, পত্রপত্রিকায় আসে এটা আর হবে না৷ কিন্তু কেন হয় তার কারণ এমন নয় ভারত সরকারের কথা বিএসএফ শোনে না বা বিএসএফ নিজের ইচ্ছেয় করে৷ অনেক সময় পরিস্থিতির কারণে হয়৷... কারণ ভারত বাংলাদেশের সীমানা অনেক কারণে খুব উত্তেজনাপূর্ণ থাকে৷’’
তার দাবি, যারা মারা যাচ্ছেন তারা চোরাচালানের জন্যই মারা যাচ্ছেন৷ বিএসএফ সেখানেই গুলি করছে যেখানে তারা আক্রান্ত হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘বিএসএফ এবং বিডিআর (বিজিবি) উভয় সংস্থায়ই চোরাচালানকে কেন্দ্র করে টাকা পয়সার লেনদেন হয়৷ বিএসএফও সেখান থেকে মুক্ত নয়, বিজিবিও মুক্ত নয়৷ তবে সেটাই একমাত্র সীমান্তে গুলি চালানোর কারণ নয়৷’’
তার এই যুক্তি মানতে নারাজ কিরিটি রায়৷ পাল্টা যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘একটা গরু রাজস্থান থেকে যেটা আসে, হরিয়ানা থেকে যেটা আসে সেটা আকাশ দিয়ে উড়ে আসে না৷ বনগাঁ বর্ডার বলছি, হিঙ্গল বর্ডার বলছি আর একদম কুচবিহার লালমনিরহাটের উল্টোদিকে, কুড়িগ্রামের উল্টোদিকে দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ দিয়ে গরুগুলো যায় কী করে? কতগুলো জেলা, কতগুলো প্রদেশ, কতগুলো থানার উপর দিয়ে গরুগুলো আসে? এবং তারা প্রত্যেকে টাকা পায়৷ জেনে রাখুন প্রত্যেকে টাকা পায়৷ এটা একটা বিশাল ....৷ বাংলাদেশ থেকে একটি ১৬ বছরের মেয়ে সে দিল্লিতে বা মুম্বাইতে রেড লাইট এরিয়ায় এমনি এমনি যায় না৷ অনেক টাকা পয়সা এখানে লেনদেন হয়৷ সেসব ভাগবাটোয়ারা সবার মধ্যেই আছে এবং পতাকাহীনভাবেই আছে৷’’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘‘বিএসএফের অধিকাংশ মানুষ একটি করাপ্ট ফোর্স৷ বিএসএফ যেখানে পয়সা পায় না যেখানে বিএসএফ দৃঢ়, সেখানে কোনো চোরাচালান হয় না৷ চোরাচালান হয় সেখানেই যেখানে বিএসএফ পয়সা পায়৷’’
সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারত সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশের সরকারের দায় রয়েছে বলেও মনে করেন কিরিটি রায়৷ ‘‘বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যতই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বলুক প্রকৃতপক্ষে ভারতের এই প্রবলেমটা সীমান্তে সেটা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ সোচ্চার, মিডিয়া সোচ্চার৷ কিন্তু বাংলাদেশ সরকার প্রতিবাদ এক ফোঁটাও করছে না,’’ বলেন তিনি৷
পশ্চিমবঙ্গে সীমান্তে বিএসএফ-এর বিভিন্ন অন্যায় কর্মকাণ্ড নিয়ে দুই হাজার ২০০ এর মতো অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, সেগুলোর তদন্ত হয় না, এফআইআর হয় না৷ আবার তদন্ত হলেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না৷ সীমান্তের এই সমস্যা সমাধানে সরকারের সদিচ্ছা ও জবাবদিহিতা গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিমত তার৷ অন্যদিকে সায়ন্তন বসু মনে করেন, ‘‘বিএসএফ এরপাঁচজন অফিসার খারাপ করছে বলে সবাই খারাপ নয়৷’’ তার মতে, ‘‘ভারত দেশের সরকার ভারতের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে বাধ্য৷..একশো বছরেও এই সমস্যার সমাধান হবে না, যদি চোরাচালান বন্ধ না হয়৷'' যদিও একে ভারতের জন্য লজ্জার বলে সবশেষে উল্লেখ করেন কিরিটি রায়৷
এফএস/এআই
বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই মরছে
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিসংখ্যান
২০১৯ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সংসদকে জানান, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন৷
বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই মরছে
বছরওয়ারি সংখ্যা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তখন আরো জানান, ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫, ২০১১ সালে ২৪, ২০১২ সালে ২৪, ২০১৩ সালে ১৮, ২০১৪ সালে ২৪, ২০১৫ সালে ৩৮, ২০১৬ সালে ২৫, ২০১৭ সালে ১৭ এবং ২০১৮ সালে তিনজন হত্যার শিকার হন৷
বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই মরছে
শেষ দুই বছর
বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বিএসএফ গুলি করে ৪৩ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করে৷ আর ২০২০ সালে ৪২ জন গুলিতে প্রাণ হারান৷ এছাড়া নির্যাতনে মারা যান ছয় জন৷
বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই মরছে
ভারতীয় নাগরিক হত্যা
ভারতের মানবাধিকার সংস্থা ‘বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ’ (সংক্ষেপে মাসুম) বলছে, ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত তারা পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ-এর হাতে নিহত অন্তত ১০৫টি হত্যার তদন্ত করেছে৷ প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত আরো বেশি বলে মনে করে মাসুম৷
বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই মরছে
নির্দেশের পরও হত্যা বন্ধ হয়নি
সীমান্ত হত্যা নিয়ে দশ বছর আগে ‘ট্রিগার হ্যাপি’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল এইচআরডাব্লিউ৷ এর প্রতিক্রিয়ায় তখন ভারত সরকার বলেছিল, তারা অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার রুখতে বিএসএফকে প্রাণঘাতী অস্ত্রের পরিবর্তে রাবার বুলেট ব্যবহারের নির্দেশ দেবে৷ কিন্তু ঐ নির্দেশের পরও হত্যা, নির্যাতন বন্ধ হয়নি বলে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন এইচআরডাব্লিউর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি৷
বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই মরছে
‘ভারত সরকারের ব্যর্থতা দায়ী’
দোষী নিরাপত্তা কর্মীদের বিচারের আওতায় আনতে ভারত সরকারের ব্যর্থতার কারণে সীমান্তের হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষেরা নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে ঐ বিবৃতিতে মন্তব্য করেছেন মীনাক্ষী গাঙ্গুলি৷ ছবিতে পশ্চিমবঙ্গের এক বাজারে ট্রাকে গরু তুলতে দেখা যাচ্ছে৷ এভাবে গরুগুলো সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হবে৷ ছবিটি ২০১২ সালে তোলা৷
বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই মরছে
ভারতকে তদন্তের আহ্বান
এইচআরডাব্লিউ ৯ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে নতুন করে ওঠা হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷
বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই মরছে
আলোচিত হত্যা
২০১১ সালের জানুয়ারিতে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারানো ১৫ বছর বয়সি বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুনের কাঁটাতারে ঝুলে থাকা লাশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল৷ ২০১৩ ও ২০১৫ সালে বিএসএফের বিশেষ আদালতে দুই দফা বিচার হয়৷ এরপর বিএসএফের অভিযুক্ত কনস্টেবলকে খালাস দেয়া হয়৷ এ মামলায় নতুন তদন্ত শুরুর একটি আবেদন এখন ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে আছে৷