বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ: ইউরোপের কোথায়, কী অবস্থা?
১২ মে ২০২৪জার্মানির বিরোধী দল সিডিইউ সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ভবিষ্যতে তারা ক্ষমতায় গেলে তরুণদের জন্য এক বছরের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ কিংবা সামাজিক সেবা খাতে কাজ করা বাধ্যতামূলক করতে আইন তৈরির চেষ্টা করবে৷
২০১১ সাল পর্যন্ত জার্মানিতে এই ব্যবস্থা চালু ছিল৷
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ও জার্মান সামরিক বাহিনীতে কর্মীর অভাবের কারণে সিডিইউ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস বলেছেন, এই গ্রীষ্মের মধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত নিতে চান যে, বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ কিছুটা হলেও ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি প্রস্তাব করবেন কিনা৷ এক্ষেত্রে তিনি সুইডেনে চালু থাকা ব্যবস্থা মূল্যায়ন করে দেখছেন৷
২০১০ সালে সুইডেন বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা স্থগিত করেছিল৷ পরে ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখলের পর সেটি আবার চালু করে৷ ফলে বয়স ১৮ হলে সব সুইডিশ তরুণ-তরুণীদের অ্যাসেসমেন্ট বা মূল্যায়নের জন্য উপস্থিত হতে হয়৷ তাদের মধ্যে একটি অংশকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়৷ প্রতিবছর ৫ থেকে ১০ শতাংশ পুরুষ ও নারী সামরিক প্রশিক্ষণ নেন৷ তাদের মধ্যে যারা সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহ দেখান তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়৷
সুইডেনে অ্যাসেসমেন্ট বা মূল্যায়নে উপস্থিত হওয়া বাধ্যতামূলক, তবে সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার বিষয়টি ঐচ্ছিক৷ ২০২৩ সালে সুইডেন কমিউনিটি সেবাও বাধ্যতামূলক করেছে৷
ডেনমার্ক, নরওয়ে
ডেনমার্কে ১৮ বছরের পর থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক, তবে সেটা শুধু ছেলেদের জন্য প্রযোজ্য৷ অবশ্য ২০২৬ সাল থেকে মেয়েদেরও সেটা করতে হবে৷ এছাড়া সামরিক প্রশিক্ষণের মেয়াদ চার থেকে বেড়ে হবে ১১ মাস৷
নরওয়েতে ২০১৬ সাল থেকে ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য উপস্থিত হতে হচ্ছে৷ এরপর তাদের মেডিকেল পরীক্ষা করে দেখা হয়, তারা যোগ্য কিনা৷ তবে খুব অল্পসংখ্যক ছেলেমেয়েকে কাজ করার জন্য ডাকা হয়৷
অস্ট্রিয়া
দেশটিতে সামরিক প্রশিক্ষণ সবসময় বাধ্যতামূলক আছে৷ শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে সে দেশের পুরুষদের ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সের মধ্যে কোনো একসময় ছয় মাসের সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হয়৷
যারা নৈতিক কারণে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে চান না তারা নয় মাসের জন্য কমিউনিটি সেবা করতে পারেন৷
তুরস্ক
২০ থেকে ৪১ বছর বয়সি সব পুরুষের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক৷ প্রশিক্ষণের মেয়াদ অন্তত ছয় মাস৷ কেউ প্রশিক্ষণ না নিতে চাইলে জরিমানা এমনকি জেলেও যেতে হতে পারে৷
আবার কেউ পাঁচ হাজার ইউরো দিয়ে প্রশিক্ষণের মেয়াদ এক মাস কমাতে পারে৷
গ্রিস
১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সি পুরুষদের সর্বোচ্চ ১২ মাসের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক৷ তবে স্থান ও ইউনিট অনুযায়ী ব্যতিক্রম আছে৷
লাটভিয়া
বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে৷ ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সি পুরুষদের সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে হতে পারে৷ সেখানে প্রশিক্ষণের মেয়াদ সর্বোচ্চ ১১ মাস হতে পারে৷ মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের বিষয়টা ঐচ্ছিক৷
স্টেফানি হ্যোপনার/জেডএইচ