1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাতিল কাপড় দিয়ে ফ্যাশন

২৮ আগস্ট ২০২০

আধুনিক জীবনযাত্রা মানেই বিশাল পরিমাণ বর্জ্য, জঞ্জাল, আবর্জনা সৃষ্টি করা৷ এক ফ্যাশন ডিজাইনার শুধু নামী ব্র্যান্ডের বাতিল কাপড় জুড়ে অভিনব সৃষ্টির কাজে মেতে উঠেছেন৷ তিনি গোটা শিল্পক্ষেত্রের মনোভাব বদলের চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/3hcKE
ছবি: DW

ওভারকোটের উপকরণের একাধিক উৎস৷ সেলিন, প্রাদা, কেলভিন ক্লাইন ও রাফ সিমন্সের মতো নামী ডিজাইনারদের সৃষ্টিকর্ম জুড়ে সেটি তৈরি করা হয়েছে৷ ডিজাইনার হিসেবে ডুরান ল্যানটিংকের অভিনব আইডিয়া৷

পুনর্ব্যবহার না করলে শেষ পর্যন্ত জঞ্জালের স্তূপে সেই কাপড়ের স্থান হতো৷ ডুরান ল্যানটিংক বলেন, ‘‘একেবারে নতুন করে কাপড় তৈরি করা কখনোই আমার কাছে আকর্ষণীয় ছিল না৷ কম বয়সে পুরানো কাপড় কাটতাম৷’’

২০১৮ সালে একটি ডিজাইন তাঁকে খ্যাতি এনে দিয়েছিল৷ অ্যামেরিকার সোল ধারার গায়িকা জানেল মোনায়ের জন্য তিনি তথাকথিত ‘ভ্যাজাইনা প্যান্টস’ সৃষ্টি করেছিলেন৷’’

বাতিল কাপড়ের অভিনব ব্যবহার

সংগীতশিল্পী বিলি এলিশ-এর জন্য কাজ করে ডুরান বিশেষভাবে গর্বিত৷ কারহার্ট নামের ফ্যাশন ব্র্যান্ডের দুটি কিল্টেড জ্যাকেট কেটে একটি ওভারকোট তৈরি করেন তিনি৷ এক শুটিংয়ের সময়ে এলিশ সেটি পরার কারণে সেই ওভারকোটের দাম কয়েক হাজার ইউরো ছুঁয়েছে৷ ডুরান বলেন, ‘‘তিনি সত্যি অনুপ্রেরণা জোগান৷ সেটা ভালো, কারণ তরুণ প্রজন্মের কাছে তাঁর কণ্ঠ আকর্ষণীয়৷ তিনি সচেতনভাবে ডিজাইন নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেন৷ পুনর্ব্যবহৃত ও আপসাইকেল করা উপাদান ব্যবহারে উৎসাহ দিয়ে তিনি ভালোই করছেন৷’’

সেটাই ডুরান ল্যানটিংকের জীবনদর্শন৷ গোটা বিশ্বের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের প্রায় দশ শতাংশের জন্য ফ্যাশন শিল্প দায়ী হওয়ায় তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ৷ সে কারণে তিনি নিজের সৃষ্টিকর্মের জন্য পুরোপুরি শুধু রিসাইকেল করা উপাদান ব্যবহার করেন৷ ফ্যাশন স্টোর থেকে বিনামূল্যেই তিনি সেগুলি পান৷ ডুরান বলেন, ‘‘ফ্যাশনের চিরায়ত প্রণালীর প্রতি আমার বিশ্বাস নেই, কখনোই ছিল না৷ যেমন গুচি ও লুই ভিতোঁ প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় আমার কাছে দুটির মেলবন্ধন ঘটানো অত্যন্ত জরুরি ছিল৷ যে যেন এলভিএমএইচ ও কেরিং-এর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মতো৷ তবে এখন আর মূল ফ্যাশন লেবেল বা নাম উল্লেখ না করে আমার নিজস্ব নান্দনিক রীতি সৃষ্টি করা আরও জরুরি হয়ে উঠেছে৷’’

আবর্জনা দিয়ে ফ্যাশন পণ্য তৈরি হচ্ছে

ডুরান বলেন, এমন মনোভাব সত্ত্বেও বেশিরভাগ ফ্যাশন ব্র্যান্ড তাঁর কাজের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে৷ তিনি এমন সব উপাদানের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটান, প্রথম নজরে যা বেমানান লাগে৷ সেই অমিল থেকেই তিনি প্রেরণা পান৷ আমস্টারডামের বিখ্যাত সান্ডবার্গ ইনস্টিটিউটের ছাত্র হিসেবে তিনি প্রথম এমন কোলাজ তৈরির কাজ শুরু করেন৷ ডুরান ল্যানটিংক মনে করেন, ‘‘শুনতে একটু নাটকীয় মনে হলেও এটাই আমার অস্তিত্বের মূলমন্ত্র৷ এই সব বইয়ের মধ্যেই আমার জীবনের প্রতিফলন দেখা যায়৷ আমার সব বিশ্বাস সেখানে স্থান পেয়েছে৷ এটা সত্যি আমার বাইবেলের মতো৷’’

বর্তমানে তিনি নামকরা ফ্যাশন ইভেন্টে নিজের সৃষ্টিকর্ম তুলে ধরেন৷ ২০১৯ সালে আমস্টারডাম ফ্যাশন উইকে যেমনটা করেছিলেন৷ বিলাসবহুল ফ্যাশনের জগতেও টেকসই প্রক্রিয়ার বিষয়টি বর্তমানে গুরুত্ব পাচ্ছে৷ কিন্তু ডুরানের প্রত্যাশা অনেক বেশি৷ তাঁর মতে, ‘‘তারা যত পারে বিক্রির চেষ্টা করে৷ আমার কাছে শিল্পের শাখা হিসেবে ফ্যাশন আরও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই আমি সেই পরিবর্তন দেখতে চাই৷’’

ভ্রমণে ব্যস্ত না থাকলে ডুরান নিজের টিমের সঙ্গে মিলে মাসে বড়জোর ৬০টি জামাকাপড় তৈরি করেন৷ তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে অদূর ভবিষ্যতে উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চলছে৷

ডুরান ল্যানটিংকের মাথায় আরও একটি আইডিয়া ঘুরছে৷ তিনি কোনো উপাদান ছাড়াই জামাকাপড় ডিজাইন করতে চান৷ হলোগ্রাম প্রযুক্তির কল্যাণে শুধু আলোর সাহায্যে পরিধানকে নতুন মাত্রা দেবার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে চান তিনি৷

মারিনা স্ট্রাউস/এসবি