বাড়ছে ই-বর্জ্য, সতর্ক করলো জাতিসংঘ
ইলেকট্রনিক্স বর্জ্যের পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। খুব সামান্য বর্জ্যই পুর্নব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের।
জাতিসংঘের রিপোর্ট
জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন এবং গবেষণা সংস্থা ইউএআইটিএআর যৌথভাবে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ই-বর্জ্য থেকে এক ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসছে। খুব সামান্য পরিমাণ বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করা হচ্ছে।
বর্জ্যের পরিমাণ
২০২২ সালে গোটা বিশ্বে ৬২ মিলিয়ন অর্থাৎ, ছয় কোটি ২০ লাখ টন ই-বর্জ্য তৈরি হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই বর্জ্যের পরিমাণ আট কোটি টনে পৌঁছাতে পারে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
মোবাইল-কম্পিউটার
সবচেয়ে বেশি ই-বর্জ্য তৈরি হচ্ছে ফেলে দেয়া মোবাইল, কম্পিউটার, টেলিভিশন সেটের মতো নিত্য ব্যবহার্য জিনিস থেকে। যার মধ্যে পারদ ব্যবহার করা হয়। প্রকৃতির জন্য এই পারদ অত্যন্ত বিপজ্জনক।
প্লাস্টিক এবং পারদ
জাতিসংঘ জানাচ্ছে, প্রতি বছর ৪৫ হাজার টন প্লাস্টিক পাওয়া যায় এই ই-বর্জ্য থেকে। যা পুনর্ব্যবহার করা যায় না। অন্যদিকে পারদের পরিমাণ ৫৮ টন। এই পারদ মিশে যাচ্ছে মাটিতে। যা থেকে ভয়াবহ বিপর্যয় হতে পারে।
মাত্র ২২ শতাংশের পুনর্ব্যবহার
প্রতি বছর মোট যা ই-বর্জ্য তৈরি হচ্ছে, তার মাত্র ২২ শতাংশ পুনর্ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকিটা হয় পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে অথবা খোলা জমিতে ফেলে দেয়া হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে ই-বর্জ্যের পাহাড়।
ব্যক্তির ই-বর্জ্য
আধুনিক উন্নত দেশে একজন ব্যক্তি বছরে সাত দশমিক আট কিলোগ্রাম ই-বর্জ্য তৈরি করছেন বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
বর্জ্য যাচ্ছে অনুন্নত অথবা উন্নতশীল দেশে
সব চেয়ে বেশি ই-বর্জ্য তৈরি করছে উন্নত দেশ। কিন্তু বর্জ্য জাহাজে করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশে। সেখানে সামান্য পরিমাণ বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকি বর্জ্য অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে জমানো অথবা পোড়ানো হচ্ছে। যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের শারীরিক সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
ব্যাটারি, হিট পাম্প, সোলার প্যানেল
বিকল্প শক্তির জন্য এখন ব্যাটারির পরিমাণ বেড়েছে। তৈরি হচ্ছে সোলার প্যানেল, যেখান থেকে সৌর বিদ্যুৎ তৈরি করা হচ্ছে। আছে হিট পাম্প। কিন্তু এই ধরনের জিনিস থেকে যে ই-বর্জ্য তৈরি হচ্ছে এবং হবে তা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সরকার এবং বাণিজ্যিক সংস্থার দায়িত্ব
সরকার যদি কড়া পদক্ষেপ না করে এবং বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি যদি যথেষ্ট দায়িত্বশীল না হয়, তা হলে ই-বর্জ্যের পরিমাণ কমানো সম্ভব হবে না। বরং উত্তরোত্তর তা বাড়তে থাকবে। এমনই অভিমত বিশেষজ্ঞদের।