ফিরে গেলেন প্রণব
৬ মার্চ ২০১৩‘‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মতাদর্শগত সংঘাত মিটিয়ে ফেলতে হবে আলোচনার মাধ্যমে৷ যাতে সংখ্যালঘুসহ সব সম্প্রদায়ের জানমালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত থাকে৷'' তিনদিনের বাংলাদেশ সফর শেষে দিল্লি ফেরার পথে বিমানে বসেই এ কথা জানালেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ দুপাতার এক বিবৃতির অন্তর্নিহিত অর্থ, বাংলাদেশে মৌলবাদী শক্তির তাণ্ডবে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার অভিঘাত ভারতে যাতে না পড়ে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার৷
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বিষয়টি পরোক্ষভাবে তুলে বলেছিলেন যে, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ, শক্তিশালী ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ শুধু ভারতের নয়, এই অঞ্চলের সমগ্র জনগণের স্বার্থের অনুকূল৷ তাই সাম্প্রদায়িক শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে যে কোনো মূল্যে৷
শাহবাগ-আন্দোলন বা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা না করার বিষয়ে তিনি সরাসরি কোন মন্তব্য না করলেও এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান লুকানো থাকেনি৷ শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের চেতনায় উদ্দীপ্ত অ-সাম্প্রদায়িক আন্দোলনের জয়ের লক্ষ্যেই ভারতবাসীর সৌহার্দ্যের প্রতিনিধিত্ব করেছেন রাষ্ট্রপতি৷
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রেক্ষিতে ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘উত্তপ্ত পরিস্থিতি সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতি তাঁর প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশকে বেছে নিলেন, তার কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে একটা রাজনৈতিক তথা স্ট্র্যাটিজিক জায়গা তো ভারতের আছে৷ সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলা৷ সেটাকে প্রণববাবু কাজে লাগাতে চেষ্টা করেন৷ পরোক্ষ হলেও ধর্মনিরপেক্ষতা জন্য যাঁরা লড়াই করছেন, তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানো৷''
উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় আরও মনে করেন, ‘‘বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা না করার কারণ অন্য৷ আগামী নির্বাচনে বিএনপি এবং জামায়াত প্রচার করবে শাহবাগ আন্দোলন ভারতের মদৎপুষ্ট৷ ভারতের মদৎপুষ্ট এই আন্দোলন ইসলামকে বিপন্ন করে তুলবে৷ ভারত-বিরোধী অবস্থান থেকে আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো৷ কাজেই আন্দোলন চলাকালীন তিনি দেখা করতে পারেন না৷''