1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারে সামুদ্রিক উদ্ভিদ

৪ মার্চ ২০১৯

মানুষের পুষ্টি, বিশেষ করে প্রোটিনের চাহিদা মেটানো মানুষের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ৷ সমুদ্রের নীচে অ্যালজি সেই চাহিদা পূরণ করতে পারে৷ একটি কোম্পানি গবেষণাগারে বড় আকারে অ্যালজি চাষ করে সেই লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3EOlE
Algen
ছবি: picture-alliance/OKAPIA KG, Germany

কাচের ছোট চোঙার মধ্যে ক্লোরেলা নামের মাইক্রো-অ্যালজি বেড়ে উঠছে৷ সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতির জন্য মিঠা পানি, পুষ্টি, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও সূর্যের আলো প্রয়োজন৷ ইয়োর্গ উলমান এ ক্ষেত্রে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করছেন৷ গত ৭ বছর ধরে তিনি রোকেট ক্ল্যোৎসে কোম্পানির প্রধান৷ ইয়োর্গ বলেন, ‘‘এখানে ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও প্রায় ৬ লক্ষ লিটার পরিমাণ কাচের চোঙা রয়েছে৷ তার সাহায্যে মার্চ থেকে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মরসুমে আমরা ৩০ থেকে ৬০ টন বায়োমাস উৎপাদন করতে পারি৷''

প্রায় ১ দশমিক ২ হেক্টর এলাকায় ৫০ টন অ্যালজি বায়োমাস উৎপাদিত হচ্ছে৷ সেই আয়তনের জমিতে বড়জোর ৭ থেকে ৮ টন গম উৎপাদন করা সম্ভব৷ তাছাড়া ক্লোরেলা অ্যালজির মধ্যে প্রোটিনের অনুপাত ৫০ শতাংশেরও বেশি৷ ডিম ও মাংসেও এমনটা পাওয়া যায় না৷ অন্য প্রজাতির অ্যালজিরও চাহিদা রয়েছে৷ ইয়োর্গ উলমান বলেন, ‘‘এর মধ্যে আমরা প্রায় ১২টি প্রজাতির মাইক্রো-অ্যালজি উৎপাদন করছি৷  তার একটা বড় অংশ পাউডার বা অন্য রূপে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ আমরা খাদ্য ও কসমেটিক শিল্পের কাছে কাঁচামালও বিক্রি করি৷ প্রাণীদের খোরাকেও তা ব্যবহার করা হয়৷ গোটা বিশ্বেই আমাদের বাজার ছড়িয়ে রয়েছে৷ ইউরোপে বিক্রি করছি৷ উত্তর অ্যামেরিকায় ক্যানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এশিয়া মহাদেশেও আমরা রপ্তানি করি৷''

গবেষণাগারই কোম্পানির প্রাণকেন্দ্র৷ সেখানে অনেক প্রজাতির অ্যালজির নমুনা রাখা আছে৷ প্রায় ৬৫ বছর ধরে অ্যালজি ও খাদ্য নিয়ে গবেষণা চলছে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানতে পারে, যে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ প্রোটিনের অভাবে ভুগছে৷ ফলে তখন থেকেই স্পিরুলিনা বা ক্লোরেলার মতো উচ্চ মাত্রার প্রোটিন-সমৃদ্ধ অ্যালজির পরীক্ষা শুরু হয়েছে৷ রোকেট ক্ল্যোৎসে কোম্পানির কর্ণধার ইয়োর্গ উলমান বলেন, ‘‘এই গবেষণাগারে বলতে গেলে প্রথমবার অ্যালজি চাষ হচ্ছে৷ ক্ষুদ্র এককোষী চারা থেকে প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে৷ দিনে একবার সেটি ২ থেকে ১৬টি কোষে বিভক্ত হয়ে পড়ছে৷ আমরা অভাবনীয় এই বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করছি৷ গবেষণাগারে ধারাবাহিকভাবে পরিমাণ বাড়িয়ে চলাই আমাদের লক্ষ্য৷ নির্দিষ্ট পরিমাণ উৎপাদন সম্ভব হলে গ্রিনহাউসে গিয়ে উৎপাদন শুরু করাই লক্ষ্য৷''

তবে সব প্রজাতির অ্যালজির বৃদ্ধি এত দ্রুত হয় না৷ ফলে বড় আকারে সেগুলির উৎপাদন সম্ভব নয়৷ জুরিখ বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলেক্সান্ডার মাটিস ও তাঁর সহকর্মীরা সে ক্ষেত্রেও উন্নতি আনতে চান৷ আলেক্সান্ডার বলেন, ‘‘বর্তমানে অত্যন্ত ধীর গতিতে অ্যালজির বৃদ্ধি ঘটছে৷ চাষের শেষে যে পরিমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তা খুবই কম৷ ফলে মাইক্রো-অ্যালজির উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যয় খুব বেশি হচ্ছে৷''

অ্যালজি থেকে তৈরি হয় বিদ্যুৎ

হাই ভোল্টেজ পাল্স সিমুলেশন পদ্ধতির মাধ্যমে গবেষকরা অ্যালজির বৃদ্ধির গতি বাড়ানোর চেষ্টা করছেন৷  অ্যালজির মধ্যে বিশাল সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে৷ আলেক্সান্ডার মাটিস মনে করেন, ‘‘মাইক্রো-অ্যালজি থেকে আমরা মাংসের বিকল্প পদার্থ তৈরি করতে পারি৷ অ্যালজির প্রোটিন আমরা মাংসের মতো কাঠামোয় আনতে পারি৷ উদ্ভিদজাত প্রোটিন খাদ্য তৈরি করে মাংসের চাহিদা কমিয়ে আনতে পারি৷''

রোকেট ক্ল্যোৎসে কোম্পানি কয়েক লক্ষ ইউরো মূল্যের অ্যালজি বিক্রি করতে চায়৷ চাহিদা এর মধ্যেই এত বেড়ে গেছে, যে নতুন এক উৎপাদনকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে৷ পরীক্ষামূলক উৎপাদন প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে৷

লিৎস হরোভিৎস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান