প্রবল বায়ুদূষণ নিয়ে আলোর উৎসবে দিল্লি
দিল্লিতে দিওয়ালি মানে একদিকে যেমন আলোর উৎসব, অন্যদিকে ভয়ংকর দূষণ। প্রতিবছর একই অবস্থা হয় দিল্লির।
আলোর মালায়
দিওয়ালি হলো আলোর উৎসব। তাই দিওয়ালির কয়েকদিন আগে থেকেই আলোয় আলোয় সেজে ওঠে দিল্লি। রাতে এক মোহময়ী রূপ নেয় ভারতের এই রাজধানী শহর। অধিকাংশ বাড়িতে, বাজারে, সরকারি ভবনে থাকে আলোর মালা। আলোকিত দিল্লিকে দেখতে ভালো লাগে।
বাড়ি সাজানোর ফুল
দিওয়ালিতে অনেকেই ফুল-মালায় বাড়ি সাজান। নানা ধরনের ঘর সাজানোর জিনিসও তারা ব্যবহার করেন। আলো ছাড়াও তাই ফুল ও অন্য ঘর সাজানোর জিনিসের চাহিদা তুঙ্গে থাকে।
দূষণের ধোঁয়া-ধুলোয়
আবার দিল্লির এই আলোর নিচেই আছে অন্ধকার। ধোঁয়া-ধুলো-দূষণের অন্ধকার। দিল্লিতে দিওয়ালি মানে দমবন্ধ করা দূষণ। বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই-এর গড় ছিল ৩২৯। আবহাওয়াবিদদের পরিভাষায় যা খুবই খারাপ। আনন্দ বিহারে একিউআই ছিল ৪১৯ এবং জাহাঙ্গিরপুরিতে ৩৯৫, যা হলো মারাত্মক।
বাড়ছে অসুখ
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দিল্লির এই আবহাওয়ার ফলে মানুষের শ্বাসকষ্টজনিত অসুবিধা হবে। সর্দি-কাশি-জ্বর হতে পারে। কিছুদিন ধরে দিল্লিতে অনেকেই ভাইরাল জ্বরে কাবু হয়ে পড়ছেন। এই জ্বর বেশ কয়েকদিন ধরে চলছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের মধ্যে অন্যতম এই দিল্লির অবস্থা আগের মতোই খারাপ।
সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনা
কয়েকদিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট এই দূষণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার, কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা সরকারের প্রবল সমালোচনা করেছে। সর্বোচ্চ আদালত মনে করছে, খড় পোড়ানো নিয়ে তারা লোকদেখানো পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিছু কৃষককে সামান্য জরিমানা করছে। বাকিদের ছেড়ে দিচ্ছে। মানুষের দূষণ-মুক্ত পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার লংঘিত হচ্ছে।
অসচেতন মানুষ
দিল্লিতে রাত হলেই কানে আসছে বাজি ফাটানোর আওয়াজ। অথচ, বাজি ফাটানোর উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা আছে। তা সত্ত্বেও দেদার বাজি ফাটছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তাকে উপেক্ষা করে অসচেতন মানুষ বাজি ফাটাচ্ছে।
তবু আলোয় ভরা দিল্লি
এই দূষণকে উপেক্ষা করে দিল্লি এখন দিওয়ালির আলোয় আলোকময়। বিভিন্ন দোকানে এখনো বিক্রি হচ্ছে আলো। শেষ মুহূর্তে কেনার জন্য। আগে শুধু প্রদীপ জ্বালানো হত। মোমবাতি জ্বলত। এখন তার জায়গা করে নিয়েছে বৈচিত্রময় এলইডি বাল্ব।
প্রদীপও টিকে আছে
তবে মাটির প্রদীপ এখনো টিকে আছে। কিছু মানুষ মাটির প্রদীপে তেল দিয়ে আলো জ্বালাতে ভালোবাসেন। প্রদীপের ভিতর মোমবাতি লাগানোরও চল হয়েছে। তাই প্রদীপ যে একেবারে চলে গেছে এমন নয়।
দিওয়ালি বাজার
দিল্লিতে নানা জায়গায় বসে দিওয়ালি বাজার। সেখানে ঘর সাজানোর নানান জিনিস পাওয়া যায়। পাওয়া যায় উপহার দেয়ার জিনিস। দিল্লিতে দিওয়ালিতে উপহার দেয়ার একটা চল আছে। তাই দিওয়ালি বাজারও জমজমাট হয়। তবে এখন ই-কমার্সের যুগে অবশ্য অনেকেই ঘরে বসে জিনিস আনিয়ে নেন।
আলোর এই ঝরনাধারায়
দিল্লির একটি আবাসনের দৃশ্য। আলোর ঝরনাধারা বইছে যেন। অনেক বাজারই এভাবে সেজে ওঠে রাজধানীতে।
খাবার জিনিসও
দিওয়ালি মানে তো দেদার খাওয়া-দাওয়া। তাই দিল্লির প্রতিটি বাজারে নানান ধরনের নোনতা খাবার বিক্রি হচ্ছে।
সাজাব যতনে
অনেকেই দিওয়ালিতে বাড়ি সুন্দর করে সাজান। দিওয়ালির সময় সেই ঘর সাজানোর জিনিসে দোকান ভরে যায়। ।
আলোর চাহিদা তুঙ্গে
তবে এই সময় সবচেয়ে বেশি থাকে আলোর চাহিদা। দিল্লিতে প্রতিটি পাড়ায় তাই বিভিন্ন ধরনের আলো নিয়ে অস্থায়ী দোকান বসে যায়।