প্রতিবাদ নিয়ে প্রস্তুতি কুমোরটুলির
দুর্গাপুজো আর কয়েকটা দিন বাকি। কুমোরটুলিতে চেনা ভিড় নেই। আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদের ঢল নেমেছে। তাতে সুর মিলিয়ে ঢিমেতালে প্রস্তুতি কলকাতার কুমারপাড়ায়।
মৃৎশিল্পীরাও বিচার চান
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের বিচার চায় জনতা। কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরাও তার বাইরে নন। বিচারের দাবিতে তারাও পথে হেঁটেছেন। বিচারের দীর্ঘ প্রক্রিয়া তাদেরও বলতে বাধ্য করেছে, আর কবে? আর কবে বিচার হবে?
বিক্রিবাটা কম
কাশ ও শিউলি ফুলের সঙ্গে ক্যালেন্ডারে পুজো প্রায় এসে গিয়েছে। কলকাতার কুমোরপাড়ায় রূপ পাচ্ছেন দশভুজা। তবে অনেক প্রতিমা এখনো বিক্রি হয়নি। সেই চেনা উৎসাহ, উদ্যম এবার চোখে পড়ছে না।
টুকটাক বায়না
বিশ্বকর্মা পুজোর আগেপরে সব প্রতিমার বায়না হয়ে যায়। এবার সেটা হয়নি। এখনো বায়না আসছে। বায়না করা প্রতিমার কাজ দেখতে অনেক উদ্যোক্তা আসেন। থিমের প্রতিমার কাজ প্রায় সারা হয়ে যায়। কিন্তু এবার সব হচ্ছে ধীর গতিতে।
ভিড় নেই
ফি বছর পুজোর আগে প্রতিমা নির্মাণ দেখতে ভিড় উপচে পড়ে। ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। শিল্পী বঙ্কিম পাল বলেন, "ভিড়ের চাপে আমাদের কাজেও অসুবিধা হত। এবার তা হচ্ছে না। সেই আগ্রহ নেই।" সরগরম থাকা কুমোরপাড়া যেন ঝিমোচ্ছে!
পুজো ও প্রতিবাদ
কয়েকটি পুজো কমিটি সরকারি অনুদান ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে অধিকাংশ পুজো কমিটি এ নিয়ে কোনো বার্তা দেয়নি। টালা বারোয়ারির অভিষেক ভট্টাচার্য ডিডাব্লিউকে বলেন, "পুজো পুজোর মতই হবে। প্রতিবাদ পথে হচ্ছে, আমরা সেখানে আছি।"
অভয়া ক্লিনিক
মৃৎশিল্পী উন্নয়ন সমিতি চলতি পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ মিছিল করেছে। তাদের কার্যালয়ে বসেছে অভয়া ক্লিনিক। নিহত তরুণী চিকিৎসকের স্মরণে রোগী দেখছেন ডাক্তারবাবুরা।
ক্রেতার অপেক্ষা
বিক্রেতারা সাজিয়ে রেখেছেন পসরা। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা বেশ কম। রাস্তার ধারে কেউ কেউ দাঁড়িয়ে প্রতিমার সামগ্রী নিয়ে। মৃৎশিল্পী কাকলি পাল বলেন, "পুজোর মাসখানেক আগেই আমার সব প্রতিমার বায়না-বিক্রি হয়ে যায়। এবার সব বিক্রি হয়নি।"
প্রতিবাদের সাক্ষ্য
কুমোরটুলির পাশ দিয়ে গিয়েছে রবীন্দ্র সরণি। পথের ধারে প্রতিবাদের চিহ্ন, বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর। শিল্পী মিন্টু পাল বলেন, "মানুষ হিসেবে সকলেরই এই অপরাধের প্রতিবাদ করা উচিত। আমরা পেশার কথা মাথায় রেখেও করেছি।"
শোলার পাড়া
কুমোরটুলি শুধু মৃৎশিল্পী নয়, শোলা ও সজ্জাশিল্পীদের আস্তানা। তাদের ব্যবসাও এবার ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা। রঞ্জিত সরকার, গৌতম দাসের মতো অনেক শিল্পী কাজে ব্যস্ত, কিন্তু তারা ঠিকঠাক ক্রেতা পাবেন তো?
আশঙ্কার মধ্যে
ইদানিং মিছিলে মাঝেমধ্যে যান চলাচল থমকে যাচ্ছে। পুজোর মধ্যেও চলতে পারে প্রতিবাদ, এমন সম্ভাবনা দেখছেন শিল্পী থেকে উদ্যোক্তারা। এতে প্রতিমা পরিবহনে সমস্যা হতে পারে। মণ্ডপে কমতে পারে দর্শক।