মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ওয়েব সিরিজের শুটিং করছেন পরিচালক প্রকাশ ঝা। তার ওয়েব সিরিজের নাম 'আশ্রম'। তৃতীয় সিজনের শুটিং চলছে এখন। রোববার শুটিং সেটে পৌঁছে যায় বজরং দলের কর্মীরা। সেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে তারা। দুই-একজনকে মারধরও করা হয়। এরপর সরাসরি সেটে ঢুকে পড়ে পরিচালকের মুখে কালি লাগিয়ে দেয় তারা। ওয়েব সিরিজের অন্যতম প্রধান চরিত্র ববি দেওলকেও খুঁজছিল বজরং দল কর্মীরা। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পরে বজরং দল জানায়, ওয়েব সিরিজটি নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু সিরিজের নাম নিয়ে তাদের আপত্তি আছে। প্রকাশ ঝাকে ওই নাম বদলাতে হবে।
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
মালিতে ধ্বংসলীলা
এক সময় মালির টিমবাকটু শহরের অন্য নাম ছিল ‘মরুদ্যানের মুক্তা’৷ সেই শহরের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করেই চলেছে সেখানকার ইসলামি জঙ্গি সংগঠন৷ ২০১২ সালে শহরটিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর থেকে মুসলমানদের গড়া অনেক স্থাপত্য নিদর্শনও ধ্বংস করেছে তারা৷ সম্প্রতি শহরটিকে জঙ্গিদের কবল থেকে পুরোপুরি মুক্ত করার দাবি করেছে মালির সেনাবাহিনী৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
সন্ত্রাসপ্রীতি এবং জ্ঞানভীতি
শুধু স্থাপনা বা গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নিদর্শনই নয়, অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাণ্ডুলিপিও ধ্বংস করেছে জঙ্গিরা৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
তথাকথিত আইএস-এর হামলা
সিরিয়ার পালমিরা শহরের প্রায় ২,০০০ বছরের পুরনো স্থাপনাগুলোও রেহাই পায়নি৷ সে দেশে চলছে তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর ধ্বংসযজ্ঞ৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
পালমিরার মন্দির ধ্বংস
এক সময় সিরিয়ার হোমস নগরীর এই স্থাপনাটিকে নিয়ে গর্ব করত সিরিয়া৷ এটি এক সময় ছিল মন্দির৷ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রাচীন এই উপসনালয় দেখে পর্যটকরা মুগ্ধ হতেন৷ আইএস-এর হামলায় স্থাপনাটি এখন ক্ষতবিক্ষত৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
ধ্বংস যখন প্রচারণার হাতিয়ার
ধর্মীয় সম্প্রীতি, সাংস্কৃতিক সহাবস্থানকে হুমকির মুখে দাঁড় করানোর চেষ্টায় আইএস অক্লান্ত৷ নৃশংসতা, বর্বরতা ক্রমেই আইএস-এর প্রচারণার হাতিয়ার হয়ে উঠছে৷ এভাবে পেট্রল ঢেলে স্থাপনা পোড়ালে সংবাদমাধ্যম লুফে নেয় খবর, খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে তথাকথিত জঙ্গিরাও পেয়ে যায় তাদের কাঙ্খিত প্রচার৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
আয়ের উৎস
সিরিয়া ও ইরাকের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ শুধু ধ্বংসই করে না, অনেক সময় কদর বুঝে সেগুলো চোরাপথে চড়াদামে বিক্রিও করে আইএস৷ প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছ থেকেও অমূল্য সম্পদ কেড়ে নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ আছে আইএস-এর বিরুদ্ধে৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
আফগানিস্তানে তালেবান বর্বরতা
আফগানিস্তানের এই বৌদ্ধ মন্দিরটিকে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের স্বীকৃতি দিয়েছিল ইউনেস্কো৷ ২০০১ সালে হামলা চালিয়ে এটি প্রায় ধ্বংস করে দেয় তালেবান৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
আফ্রিকায় হামলার শিকার মসজিদ
মসজিদও অনেকক্ষেত্রে তথাকথিত ধর্মীয় উন্মত্ততার শিকার৷ ২০১৫ সালে মুসলমানদের উপাসনালয়ের ওপর সবচেয়ে বেশি হামলার খবর আসে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকান থেকে৷ খ্রিষ্টান-মুসলিম দাঙ্গায় সেখানে অন্তত ৪১৭টি মসজিদ আংশিক অথবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে বলেও দাবি করা হয়৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
গির্জায় হামলা
ইসলামি জঙ্গিরা আফ্রিকা অঞ্চলে গির্জাতেও প্রায়সময়ে হামলা চালায়৷ হামলায় হতাহতের ঘটনাও ঘটে৷ ওপরের ছবিটিতে কেনিয়ার এক গির্জায় হামলার পরের দৃশ্য৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
ভারতের ইতিহাসের কালো অধ্যায়
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের ইতিহাসের ‘কালো দিন’৷ ভারতের উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার বাবরি মসজিদে সেদিনই হামলা চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে হিন্দু মৌলবাদীরা৷ মুঘল সম্রাট বাবরের নামে গড়া সুপ্রাচীন এই মসজিদের ওপর হামলার ঘটনা ভারতের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে৷
-
ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ ও ঐতিহাসিক স্থাপনায় হামলা
বাংলাদেশে প্রতিবছরই মন্দিরে হামলা
বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মূলত একাত্তরের মুক্তযুদ্ধের সময় থেকেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুরা হামলা, নির্যাতনের শিকার৷ তবে মন্দিরে মুর্তি ভাঙা, মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের অসংখ্য ঘটনা ঘটে প্রতিবছর৷ বৌদ্ধ মন্দিরেও হামলা হয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হামলার কারণ ধর্মীয় উগ্রতা৷ সারা বিশ্বে ধর্মের নামে ধর্মীয় উপাসনালয় বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ওপর হামলা থামবে কবে?
লেখক: পেটার হিলে/এসিবি
মূলত ভণ্ড বাবাজিদের নিয়ে তৈরি ওই সিরিজ। একটি আশ্রমে সেই ভণ্ডামি হয়। ফলে ছবির নামও আশ্রম। বজরং দলের কর্মীদের বক্তব্য, আশ্রম শব্দটির সঙ্গে প্রাচীন ভারতের সংস্কৃতি জড়িয়ে। মুনিঋষিরা আশ্রমে থাকতেন। সেই থেকে এদেশের সংস্কৃতির সঙ্গে আশ্রমের যোগ। বিষয়টিকে পবিত্র মনে করেন হিন্দু জনমানস। আশ্রমের সঙ্গে ভণ্ডামি, দুর্নীতি জড়িয়ে সেই সংস্কৃতির অপমান এবং অবমাননা করছেন প্রকাশ। বজরং দলের দাবি, ঘটনার পরে প্রকাশ তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সিরিজের নাম বদলাতেও রাজি হয়েছেন। যদিও প্রকাশ ঝা এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। বজরং দলের দাবি ঠিক কি না, তা জানা যায়নি।
ভারতের একাধিক আশ্রম নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে। ওশো-র আশ্রম, বাবা রামরহিমের আশ্রমের অপকীর্তি প্রকাশ্যে এসেছে। আরো বহু আশ্রমে অনৈতিক কাজকর্ম হয় বলে অভিযোগ শোনা গেছে। এ নিয়ে এর আগেও নানা লেখালেখি হয়েছে। ছবি এবং ওয়েব সিরিজও তৈরি হয়েছে। সেক্রেড গেমস একই ধরনের বিষয় নিয়ে তৈরি হয়েছিল। যা রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। সেক্রেড গেমস নিয়েও সরব হয়েছিল বজরং দল। এবার প্রকাশ ঝায়ের মতো বিশিষ্ট পরিচালকের মুখে তারা কালি লাগিয়ে দিল।
প্রশ্ন উঠছে, কী করে সেট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারল ওই কর্মীরা? কেন পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিল না? কেন প্রকাশের সেটে যথেষ্ট নিরাপত্তা ছিল না? রোববারের ঘটনা নিয়ে ভারতীয় সংস্কৃতি জগতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)