নয় মাসের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি হলো আদালতে। ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর স্টেড দ্য ফ্রান্স ফুটবল স্টেডিয়াম-সহ প্যারিসের কাফে ও রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। ১৩০ জন মারা যান। সালাহ ছাড়া সেই হামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়জনই আত্মঘাতী হয় অথবা পুলিশের গুলিতে মারা যায়। ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করে।
সালাহ-ও নিজেকে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটাতে ব্যর্থ হয়ে সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। এছাড়া বাকি ১৯ জন সরাসরি হামলায় না থাকলেও সাহায্যকারীর ভূমিকায় ছিল। তারাও দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।
আদালত নির্দেশ দিয়েছে, সালাহকে সারা জীবন জেলে বন্দি হয়ে থাকতে হবে। সে প্যারোলে ছাড়া পাবে না।
মামলার ইতিহাস
সালাহ আব্দেসলাম হলো ৩২ বছর বয়সি ফরাসি নাগরিক। তার বিরুদ্ধে প্রচুর অপরাধের অভিযোগ আছে। অপহরণ, হত্যা, সন্ত্রাসবাদী চক্রান্তের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
-
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আইফেল টাওয়ারকে ঘিরে কর্মযজ্ঞ
ফ্রান্সের প্রতীক
১,০৬৩ ফুট উঁচু আইফেল টাওয়ার ফ্রান্সের অন্যতম প্রতীক৷ সম্ভাব্য জঙ্গি আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এর চারপাশে বেষ্টনি দেওয়ার জোরদার কাজ চলছে৷ মোটা বুলেট প্রুফ কাঁচ দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে চারপাশ৷
-
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আইফেল টাওয়ারকে ঘিরে কর্মযজ্ঞ
কাঁচে সুরক্ষা
বুলেটপ্রুফ কাঁচ ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার মোটা৷ টাওয়ারের অন্তত দু’দিকে এই কাঁচের বেড়া দেওয়া হবে– নদীর দিকের ব্রঁলি বুলেভার্ড এবং অ্যাভিনিউ গুস্তাভ আইফেল৷ এই বেষ্টনিই টাওয়ারটিকে একটি পার্ক থেকে আলাদা করছে৷
-
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আইফেল টাওয়ারকে ঘিরে কর্মযজ্ঞ
ধাতুর প্রাচীর
টাওয়ারের দুই দিক বাঁকানো ধাতুর কাঁটা দিয়ে বেড়া দেওয়া হচ্ছে৷ এই বেড়া ৩ দশমিক ২৪ মিটার উঁচু৷ .
-
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আইফেল টাওয়ারকে ঘিরে কর্মযজ্ঞ
কঠোর নিরাপত্তা বলয়
একসময় পর্যটকরা কোনও বাধা ছাড়াই সরাসরি এই অত্যাশ্চর্য আইফেল টাওয়ারের কাছে পৌঁছাতে পারতো৷ কিন্তু ২০১৫ সালের পর থেকে এসব ব্যাপারে ফ্রান্স এখন খুবই কঠোর৷ লাগাতার জঙ্গি হামলার ফলে ২৪০ জন মানুষ মারা গিয়েছেন ফ্রান্সে৷ তাই এই কঠোর নিরাপত্তা৷
-
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আইফেল টাওয়ারকে ঘিরে কর্মযজ্ঞ
নির্মাণের পথে
৩৫ মিলিয়ন ইউরোর একটি সুরক্ষা প্রকল্পের অংশ হিসেবেই আইফেল টাওয়ারের একপাশের এই বুলেট প্রুফ কাঁচের বেড়ার কাজ চলছে৷
-
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আইফেল টাওয়ারকে ঘিরে কর্মযজ্ঞ
কঠোর পাহারা
নতুন বেড়ার যে কাজ চলছে, তাতে রীতিমতো নজরদারিও চলছে৷ নিরাপত্তা বাহিনী টাওয়ার এবং সংলগ্ন এলাকা সর্বদাই পাহারা দিয়ে চলেছে৷ টাওয়ারের নিচের আঙিনাকে ২০১৬ থেকে সাময়িক বেড়া দিয়ে সুরক্ষিত রাখার কাজ চলেছে৷
-
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আইফেল টাওয়ারকে ঘিরে কর্মযজ্ঞ
উৎসাহীর চাপ
অত্যুৎসাহী পর্যটকদের নিয়েই ভয়! তাঁদের উৎসাহ যেন কখনোই এই অত্যাশ্চর্য আইফেল টাওয়ারের প্রাচীরকে ক্ষতবিক্ষত না করে! এমনিতে সবসময়ই প্রচুর ভিড়ের চাপ সামলাতে হয় এই এলাকাকে৷ এই ২০১৮তে মোট ৭ মিলিয়ন পর্যটক আইফেল টাওয়ার দেখবেন৷
-
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আইফেল টাওয়ারকে ঘিরে কর্মযজ্ঞ
নিরাপত্তার প্রাচীর
আশা করা যায়, নিরাপত্তারক্ষীদের এই প্রাচীর গঠনের কাজ জুলাইয়ের মাঝখানে শেষ হবে৷ ৩০০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে আইফেল টাওয়ার পুনর্গঠনের জন্য প্রকল্পের অংশ এটি৷ ২০২৪ সালে প্যারিসে আয়োজিত অলিম্পিকের সময় আশা করা যায় বেশিরভাগ কাজেই শেষ হয়ে যাবে৷
-
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় আইফেল টাওয়ারকে ঘিরে কর্মযজ্ঞ
গোড়ার কথা
গুস্তাভ আইফেলের নাম অনুসারে দেওয়া হয়েছে এই টাওয়ারের নাম ১৮৮৭-৮৯ সালে তাঁরই কোম্পানি এই টাওয়ারের নকশা করে এবং তৈরি করে৷ ফরাসী বিপ্লবের ১০০ তম বার্ষিকী চিহ্নিত করে এই আইফেল টাওয়ার৷
২০১৫-র হামলার পর সে ফ্রান্স ছেড়ে পালায়। ২০১৬-তে সালাহকে বেলজিয়াম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখনই একটি গুলিচালনার মামলায় তার ২০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
অন্য ১৯ জন অভিযুক্ত সালাহ-সহ ১০ জনের যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছিল। অন্য সব ধরনের সহায়তা করেছিল। এদের মধ্যে ছয়জন পলাতক। একজন তুরস্কের জেলে বন্দি। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ আছে। বাকিরা সিরিয়া ও ইরাকে গিয়ে মারা গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আদালতে শুনানি
আদালতে সরকারপক্ষের আইনজীাবীরা দাবি করেছিলেন, সালাহকে সারা জীবনের জন্য জেলে বন্দি থাকার নির্দেশ যেন দেয়া হয়। এমনকী কখনো সে যেন প্যারোলে ছাড়া না পায়।
দীর্ঘ শুনানিতে সেই ঘটনায় আহত ও বেঁচে যাওয়া মানুষরা আবেগতাড়িত কথা বলেছেন।
গত সোমবার সালাহ আদালতে বলেছেন, আমি মেনে নিচ্ছি, আমি ভুল করেছি। কিন্তু আমি হত্যাকারী নই। সরকারি আইনজীবীদের বক্তব্য, এখন শাস্তি কম করতে এসব আবেগের কথা বলছে সালাহ।
জিএইচ/এসজি (এপি, ডিপিএ, রয়টার্স)