প্রসঙ্গ: ন্যূনতম মজুরি
১ নভেম্বর ২০১৩বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি এখন ৩,০০০ টাকা৷ তাজরীন ফ্যাশানস-এ আগুন এবং রানা প্লাজা ধসে শ্রমিক নিহত হওয়ার পর, চরম সমালোচনার মুখে পড়ে এই শিল্প৷ বিশেষ করে শ্রমিক নিরাপত্তা এবং মজুরি নিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে পোশাক শিল্প৷
সরকার শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে মজুরি বোর্ড গঠন করে৷ মজুরি বোর্ড গঠন করার পর, মালিকরা ন্যূনতম মজুরি মাত্র ৬০০ টাকা বাড়িয়ে ৩,৬০০ টাকা করার প্রস্তাব করেন৷ কিন্তু শ্রমিকরা দাবি করেন ৮,০০০ টাকা৷ এ নিয়ে কয়েকটি বৈঠকে আলোচনা হলেও সমঝোতা হয়নি৷ বৃহস্পতিবার এই ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত হওয়ার কথা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত তা হয়নি৷ বিজিএমইএ-র সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান যে, তারা সর্বোচ্চ ৪.৫০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি দিতে সম্মত হয়েছেন৷ এর বেশি তাদের পক্ষে আর দেয়া সম্ভব নয়৷ তিনি বলেন, তারা দক্ষ শ্রমিকদের ভালো বেতন দিতে চান এবং তা দেনও৷ তাঁর কথায়, অনেকের ধারণা পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের মজুরি কম৷ কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় অন্য চিত্র৷ দক্ষ শ্রমিকরা ভালো বেতন পান৷ ন্যূনতম মজুরি প্রাথমিকভাবে কাজ নেয়া অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য৷
এদিকে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম রনি ডয়চে ভেলেকে জানান, মালিকপক্ষ বৈঠকে কোনো যুক্তি ছাড়াই একগুঁয়েমি করছে৷ তাঁরা শ্রমিকদের যে ন্যূনতম মজুরি দিতে চান, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করতে হবে৷ তাঁরা দেখেছেন যে, একজন শ্রমিকের খাবার এবং বাসা ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে কোনোভাবেই ৮,০০০ টাকার নীচে চলে না৷ তবুও তাঁরা যৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে মজুরি নির্ধারণে রাজি আছেন৷ কিন্তু মালিক পক্ষের অযৌক্তিক প্রস্তাব তাঁরা কিছুতেই মেনে নেবেন না৷ ৪ঠা নভেম্বর সোমবার যদি গ্রহণযোগ্য মজুরি নির্ধারণ না করা হয়, তাহলে পোশাক শ্রমিকরা তাঁদের দাবি আদায়ে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন৷
ওদিকে মজুরি বোর্ডের সভায় নিরপেক্ষ প্রতিনিধি ন্যূনতম মজুরি ৫,০০০ টাকা করার প্রস্তাব করেন৷ তবে সেই প্রস্তাবও গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানান শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম৷
মজুরি বোর্ডের বৃহস্পতিবারের বৈঠকের সময় শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন মজুরি বোর্ডের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন৷ তাঁরা ন্যূনতম মজুরি ৮,০০০ টাকা করার দাবি জানান৷ অন্যথায়, তাঁরা কঠোর আন্দোলনে যাবার হুমকি দেন৷