পোল্যান্ড এবং বেলারুশ সীমান্তে কার্যত প্রাণের সঙ্গে লড়াই করছেন হাজার হাজার শরণার্থী। প্রবল ঠান্ডার মধ্যে কোনোরকমে শেল্টার তৈরি করে আছেন তারা। খাবার নেই, জলের সংকট। কীভাবে তাদের সামান্য সুবিধা দেওয়া যায়, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। এই পরিস্থিতিতে ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, যে শরণার্থীরা দেশে ফিরে যেতে চাইবেন, ইরাকের প্রশসান তাদের ফিরিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
বস্তুত,বেলারুশসীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন যে শরণার্থীরা, তাদের অধিকাংশই ইরাকের মানুষ। এদের মধ্যে একটি বড় অংশ কুর্দ। এছাড়াও সিরিয়া এবং আফগানিস্তানের মানুষও আছেন। ইরাকের বক্তব্য, সব শরণার্থী ফিরে যেতে চান না। যারা চান, ইরাক তাদের ফেরানোর সমস্ত ব্যবস্থা করে দেবে। দ্রুত বেলারুশে বিমান পাঠিয়ে শরণার্থীদের ফেরানোর ব্যবস্থা হবে বলে জানিয়েছে তারা।
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল
পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল নেমেছে৷ তাদের বেশিরভাগই এসেছেন মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও আফগানিস্তান থেকে৷
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
অভিযোগ
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিযোগ, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেলারুশে আসতে উৎসাহ জুগিয়েছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো৷ কারণ বেলারুশের মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সে দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইইউ৷ সেজন্য লুকাশেঙ্কো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপে পাঠাতে চাইছেন বলে অভিযোগ ইইউর৷
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
পরিকল্পনাকারী পুটিন?
বেলারুশের প্রধান সমর্থক রাশিয়া৷ তাই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন লুকাশেঙ্কোকে দিয়ে ইউরোপ সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল নামিয়েছেন বলে মঙ্গলবার অভিযোগ করেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাটেওশ মোরাভিয়েৎস্কি৷ সংসদে তিনি বলেন, ‘‘লুকাশেঙ্কো যে ‘হামলা’ চালিয়েছেন তার মূল পরিকল্পনাকারী মস্কোতে আছেন, পরিকল্পক হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট পুটিন৷’’
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
পুটিনকে ম্যার্কেলের ফোন
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিনকে ফোন করে সমস্যার সমাধান করতে বেলারুশের উপর চাপ দেয়ার আহ্বান জানান৷ তিনি সীমান্তে বিরাজমান পরিস্থিতিকে অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন৷
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য
লুকাশেঙ্কো ‘বিবেকবর্জিতভাবে’ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পোল্যান্ড সীমান্তে পাঠাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে জার্মানি৷ বেলারুশের উপর নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, ‘‘লুকাশেঙ্কোর বুঝতে হবে যে, তার হিসাব কাজ করছে না৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ব্ল্যাকমেইল করা যায় না৷’’
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য
মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক ‘অ্যাডভেঞ্চারের’ কারণে মানুষ দেশ ছাড়ছে বলে অভিযোগ করেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ৷ তিনি বলেন, তুরস্ক থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা যেন ইউরোপে ঢুকতে না পারে সেজন্য তুরস্ককে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে ইউরোপ৷ বেলারুশ কেন সেটা পাবে না সেই প্রশ্ন তোলেন লাভরভ৷
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
আরও নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা
ইইউর কূটনীতিকরা এএফপি ও রয়টার্সকে জানিয়েছেন বেলারুশের উপর আরও নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷ এবার বেলারুশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৩০ ব্যক্তি ও সংস্থা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারে৷
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
সীমান্তে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে পোল্যান্ড
পোল্যান্ড ও বেলারুশ জানিয়েছে, প্রায় তিন থেকে চার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী পোল্যান্ডে প্রবেশের চেষ্টা করছে৷ তারা যেন সফল না হয় সেজন্য সীমান্তে সেনা সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫ হাজার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিওশ বোয়াশচাক৷
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
প্রচণ্ড ঠাণ্ডা
অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এখন যেখানে আছেন সেখানে তাপমাত্রা রাতে শূন্যের নীচে চলে যায়৷ এই অবস্থায় আগুন ধরিয়ে ঠাণ্ডার সঙ্গে লড়াইয়ের চেষ্টা করছেন তারা৷
-
অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢলের জন্য পুটিনের সমালোচনা
বেশিরভাগই কুর্দি?
বেলারুশের বর্ডার গার্ড জানিয়েছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগই কুর্দি৷ তাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ বলে জানিয়েছে তারা৷ এছাড়া অনেক গর্ভবতী নারী ও নবজাতকও আছেন বলে জানানো হয়েছে৷
শরণার্থীরা আদৌ ফিরতে চান কি না, সে প্রশ্ন অবশ্য বার বার সামনে আসছে। বস্তুত, সীমান্তের এই অবস্থা হওয়ার পরেও হাজার হাজার শরণার্থী সীমান্তে এসে পৌঁছচ্ছেন। পোল্যান্ডে ঢোকার চেষ্টা করছেন তারা।
এই পরিস্থিতিতে বেলারুশের জাতীয় বিমান সংস্থা জানিয়েছে, দুবাই থেকে মিনস্কগামী বিমানে ইরাক, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের নাগরিকদের উঠতে দেওয়া হবে না। পরে সেই তালিকায় আফগানদের নামও যুক্ত করা হয়। ইরাকের জাতীয় বিমান সংস্থাও জানিয়ে দিয়েছে, আপাতত বাগদাদ থেকে মিনস্কে কোনো বিমান যাবে না। তবে মিনস্ক থেকে বাগদাদে বিমান আসবে। সেখানে শরণার্থীরা চাইলে উঠে পড়তে পারেন। বিমানের সময়ও বলে দেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনের সূত্র ডিডাব্লিউকে জানিয়েছে, বেলারুশের প্রশাসনও শরণার্থীদের দেশে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। তবে হাজার হাজার শরণার্থী এখনো দেশে ফিরতে চান না।
এদিকে পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সোমবার ব্রাসেলসে ইউরোপের একাধিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে বেলারুশের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেলারুশকে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা। তবে কোন কোন বিষয়ে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)