পেট্রাপোল সীমান্ত খুললেও ব্যবসা হচ্ছে ধীর গতিতে
২৬ জুলাই ২০২৪গত এক সপ্তাহ পশ্চিমবঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পেট্রাপোলে হাজারখানেক ট্রাক দাঁড়িয়েছিল। সবজি, মাছ, ওষুধ-সহ নানারকম পণ্য নিয়ে ট্রাকগুলি দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় সীমান্তে। বাংলাদেশে ট্রাকগুলি ঢুকতে পাড়ছিল না। গত বুধবার থেকে তা আবার বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করেছে। কিন্তু আগের মতো নয়।
বৃহস্পতিবার পেট্রাপোলের ক্লিয়ারিং এজেন্ট সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের দিক থেকে বাংলাদেশে রপ্তানির ট্রাক ঢুকেছে ৩৭২টি মতো। আর আমদানির ট্রাক ঢুকেছে ৪৫টি।''
সাধারণ সময়ে শুধুমাত্র পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে দিনে গড়ে ৪০০-র বেশি ট্রাক ঢোকে। সময় সময় তা ৫০০ ছাড়িয়ে যায়। আর বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢোকে ১৫০ থেকে ২২০ টি ট্রাক। সীমান্তের ব্য়বসায়ীরা আশা করছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাণিজ্য় আবার আগের মতো জায়গায় পৌঁছাবে।
কেন এই পরিস্থিতি
বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে সরকার গোটা দেশে কার্ফিউ চালু করে। একইসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। ফলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে ব্য়বসায়ীদের বাণিজ্য় হয়, তাদের মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে লরির চালান আসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সমস্ত ট্রাক সীমান্তে আটকে পড়ে।
বিএসএফ এবং ব্য়বসায়ীদের বক্তব্য়, আরেকটি বিষয়ও সে সময় মাথায় রাখতে হচ্ছিল। ট্রাক এবং চালকদের নিরাপত্তা। ট্রাক চালকেরা যাতে আক্রান্ত না হন, সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছিল। ফলে প্রায় পাঁচদিন সীমান্ত কার্যত বন্ধ ছিল। খুব বেশি লরি পারাপার করতে পারেনি। বুধবার থেকে পরিস্থিতির সামান্য় উন্নতি হয়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা অল্প অল্প করে চালু হয়েছে। কার্ফিউও শিথিল করা হয়েছে। ফলে দুই দেশের ব্য়বসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। ধীরে ধীরে চালান আসতে শুরু করেছে। সে কারণেই কিছু ট্রাক সীমান্ত পার করতে পেরেছে।
তবে নিরাপত্তা নিয়ে এখনো চিন্তিত ব্য়বসায়ীরা। যে ট্রাকগুলি বাংলাদেশে ঢুকছে, তারা যাতে নিরাপদে নির্দিষ্ট স্থানে জিনিস রেখে ফিরে আসতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রশাসন আশ্বাস দেওয়ার পরেই লরিগুলি ছাড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কার্তিক।
ডয়চে ভেলেকে স্থানীয় ব্য়বসায়ীরা জানিয়েছেন, নতুন করে পরিস্থিতি খারাপ না হলে আগামী সপ্তাহ থেকে ব্য়বসা আবার আগের মতো হবে বলে তারা মনে করছেন। বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে সিংহভাগ বাণিজ্য হয় ভারত-বাংলাদেশের। এছাড়াও উত্তরবঙ্গে হিলি সীমান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখানেও আংশিক বাণিজ্য শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। আসাম এবং ত্রিপুরা দিয়েও ধীরে ধীরে ট্রাক যাতায়াত করতে শুরু করছে। সিলেটে আন্দোলনের প্রভাব খুব বেশি পড়েনি বলে আসামের কাছাড় সীমান্ত তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক।