পশ্চিম আফ্রিকার প্রথম ভাসমান সোলার প্যানেল
২১ আগস্ট ২০২৪ঘানার পশ্চিমে ব্ল্যাক ভল্টা নদীর উপর বসানো এই সোলার প্যানেলের আকার প্রায় পাঁচটি ফুটবল মাঠের সমান৷
একটি ভাসমান অবকাঠামোর উপর প্যানেলগুলো বসানো আছে৷ ঐ অবকাঠামোর উপর হাঁটার পথও আছে৷ আমি যে এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, সেটা দেখতে পাচ্ছেন৷ রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতিদিন পরিদর্শনের জন্য আমরা এই পথ ব্যবহার করি, যেমনটা এখন আমার টিম করছে৷ আমরা প্রতিদিন পিভি মডিউল ঠিক আছে কিনা, তার ঠিক আছে কিনা, তা দেখি৷
ভূমিতে থাকা প্যানেলের চেয়ে ভাসমান সোলার প্যানেলের কিছু সুবিধা আছে৷ এগুলো জায়গা কম নেয়, আর একটি আরেকটির চেয়ে অল্প দূরত্বে বসানো যায়৷
ভাসমান সোলার প্যানেল উপর ও নিচ থেকে পাওয়া আলো দিয়ে শক্তি উৎপাদন করে৷
ভাসমান সোলার প্যানেল থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়৷ কাছের ওয়েঞ্চি শহরের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের জন্য এটি যথেষ্ট বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
ভাসমান সোলার প্যানেল, বুই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ভূমিতে স্থাপিত সোলার প্যানেলের কারণে হাজার হাজার বাড়িতে সবুজ জ্বালানি দেওয়া সম্ভব৷
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে অনেক নারীও কাজ করছেন, যেটা আগে মূলত পুরুষদের কাজের জায়গা বলে বিবেচিত ছিল৷
প্রকৌশলী ডেবোরাহ আডজেই বলেন, ‘‘এখানে কাজ করায় আমার অনেক সুবিধা হয়েছে৷ পুরুষ প্রাধান্য এই কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে পেরে আমি খুশি৷ কর্তৃপক্ষের কৌশলের কারণে মেয়েদের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে৷ এখানে কাউকে বুলিয়িং করা হয় না, কেউ নিজেকে উপেক্ষিত মনে করে না৷ এখানে এমন পরিবেশ বিদ্যমান যেখানে সবার কথা শোনা হয়৷ এখানে যৌন হয়রানি সহ্য করা হয় না, কারণ এখানকার নিয়মকানুন খুব কড়া৷''
বুই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ ২০১৩ সালে শেষ হয়েছিল৷ তবে এটি নিয়ে বিতর্কও ছিল৷ এর বাঁধের কারণে পাশের জাতীয় উদ্যানের এক-পঞ্চমাংশ ও উর্বর কৃষিজমি বন্যায় ডুবে গিয়েছিল৷
বাতোর আকানইয়াক্রোম গ্রামসহ আট সম্প্রদায়ের এক হাজারের বেশি মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়েছিল৷ ফলে তাদের জীবিকা নির্বাহে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল৷ অবশ্য কিছু মানুষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল৷
ক্ষতিপূরণ পাওয়া নারী ফ্রান্সিসকা আকাতোর জানান, ‘‘তারা আমাদের জিজ্ঞেস করেছিল আমরা কী কাজ শিখতে চাই৷ একেকজন একেকটার কথা বলেছে৷ আমি সেলাই বেছে নিয়েছি৷ তারা আমাকে মেশিন কিনে দিয়েছে, প্রশিক্ষণের খরচ দিয়েছে৷ আমার প্রশিক্ষণ প্রায় শেষ৷ শিগগিরই আয় করা শুরু করবো৷''
বাঁধের নিচু এলাকায় বাস করা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে৷
বাঁধের কারণে যে আশেপাশের মানুষ ও তাদের জীবনে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ তবে জল ও সৌর বিদ্যুতের কারণে ঘানায় জ্বালানি উৎপাদন বাড়ছে ও দেশটিতে জীবাশ্ব জ্বালানির ব্যবহার কমছে৷ এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে চাহিদার মাত্র এক শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে৷ ২০৩০ সালের মধ্যে সংখ্যাটি ১০ শতাংশ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে৷
ম্যাক্সওয়েল সুক, লুকাস লট্যার্সব্যার্গার/জেডএইচ