1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশইন্দোনেশিয়া

পরিবেশ বাঁচিয়ে পাম অয়েল ব্যবহার নিয়ে ভাবনাচিন্তা

২০ মে ২০২২

পাম অয়েলের বিপুল চাহিদা পরিবেশের উপর চাপ ফেলছে৷ ফলে আরও দক্ষতার সঙ্গে এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে এই তেল উৎপাদনের নানা পথ খুঁজছেন বিশেষজ্ঞরা৷ এমনকি কৃত্রিম বিকল্প ব্যবহারের কথাও ভাবা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4Bdei
 Bali Tropische Landschaft
ছবি: Oleksandr Rupeta/Getty Images

অরণ্য নিধন জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ৷ গাছ ও জমির কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধারণক্ষমতা হ্রাসও এমন বিপর্যয়ের জন্য দায়ী৷ মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলেনা ভারকি বলেন, ‘‘পাম অয়েলের জন্য গাছ কাটার একটা বড় অংশ পিট এলাকায় ঘটছে৷ এমন জলাভূমি অভিনব, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও উচ্চ মাত্রার কার্বনসম্পন্ন ইকোসিস্টেম৷''

এমন সব প্রভাবের কারণে অনেকেই যে পাম অয়েল উৎপাদনের বিরোধী, তা মোটেই বিস্ময়কর নয়৷ তবে বিষয়টি অত সহজও নয়৷ কারণ অয়েল পাম থেকে বিশাল মুনাফা হয়৷ পাম অয়েল প্লান্টেশনে প্রত্যেক বর্গ মিটার অংশে গড়ে এত পরিমাণ তেল পাওয়া যায়, যা গোটা প্লান্টেশন এলাকায় রেপসিড ও সয়াবিন তেল উৎপাদনের সমান৷ পাম অয়েলের বিকল্প সৃষ্টি করতে হলে অনেক বেশি জমির প্রয়োজন হবে৷

অয়েল পাম গাছের এমন গুণের কারণে সেটি বাজারে সবচেয়ে সস্তার উদ্ভিদজাত তেল৷ অয়েল পাম সবচেয়ে কার্যকর তেলের গাছ হওয়ায় ২০৫০ সাল পর্যন্ত এর চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যাবে৷ পাম অয়েলের বিপুল চাহিদা সামলাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো একটি পথ হতে পারে৷

একাধিক গবেষণার ফল অনুযায়ী আরও ভালো কৃষি পদ্ধতি প্রয়োগ করলে ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েল উৎপাদন ষাট শতাংশ বাড়ানো যেতে পারে৷ যেমন আরও উন্নত মানের সার এ ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে৷ পাম পাতা ছড়িয়ে রাখাও আরেকটি কৌশল৷ এভাবে বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ার গতি কমানোর পাশাপাশি প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিক্ষয়েরও মোকাবিলা করা যায়৷

সুনির্দিষ্ট প্রজনন বা জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি নতুন ও উন্নত প্রজাতির গাছও সহায়তা করতে পারে৷ যেমন ‘বামন পাম' অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের বলে সহজে চাষ করা যায়৷ তাছাড়া একই আয়তনের জমিতে আরও বেশি চারাগাছ লাগানো যায়৷

পরিবেশ বাঁচাতে কৃত্রিম পাম তেল?

চাষের মাত্রা বাড়ালেও পরিবেশের ক্ষতি হয় বটে, কিন্তু তা সত্ত্বেও রেন ফরেস্টের গাছ কাটার থেকে এই বিকল্প অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য৷ তবে গাছ কাটা বন্ধ ও উৎপাদনশীলতা বাড়লেও বর্তমানে ব্যবহৃত জমি কাজে লাগিয়ে পাম অয়েলের বিপুল চাহিদা মেটানো হয়তো সম্ভব হবে না৷

তাহলে অয়েল পাম গাছ ছাড়াই পাম অয়েল উৎপাদন করলে কেমন হয়? বায়োকেমিস্ট্রি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্রিস চাক মনে করেন, ‘‘এক ধরনের ইস্ট তেলের ক্ষুদ্র বিন্দু সৃষ্টি করতে পারে৷ পাম অয়েলের বিকল্প হিসেবে সেটি সুবিধা বয়ে আনতে পারে৷ আমরা হুবহু সেই একই তেল সৃষ্টি করতে পারি৷''

মূল্যের দিক দিয়ে খাঁটি পাম অয়েলের সঙ্গে কখনো প্রতিযোগিতায় দাঁড়াতে না পারলেও এই তেল ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে ক্রিস চাক মনে করেন৷ তার জন্য  হয়তো কয়েক বছর, এমনকি কয়েক দশক অপেক্ষা করতে হবে৷

বিস্ময়কর গুণাগুণ থাকা সত্ত্বেও পাম অয়েলকে ঘিরে সমস্যার শেষ নেই৷ অয়েল পাম অন্যান্য গাছের তুলনায় অনেক বেশি তেল উৎপাদন করলেও মূল সমস্যা হলো, কোন প্রক্রিয়ায় পাম অয়েল উৎপাদন করা হচ্ছে৷

উন্নতির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে৷ বর্তমান প্লান্টেশনে আরও বেশি তেল উৎপাদন থেকে শুরু করে একেবারে নতুন প্রযুক্তির কল্যাণে বাড়তি তেল সৃষ্টি করা যেতে পারে৷ তবে এমন সব উদ্যোগের ফলে হয়তো আমাদের বিভিন্ন পণ্যের জন্য বেশি দাম গুনতে হবে৷ আমাদের পৃথিবীর মূল্যের তুলনায় অবশ্য সেই বাড়তি দাম মোটেই বেশি মনে হবে না৷

আডাম লেভি/এসবি