1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নয় বছর পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবার পাকিস্তানে

১৫ অক্টোবর ২০২৪

এসসিও বৈঠকে যোগ দিতে ইসলামাবাদে গেলেন জয়শঙ্কর। প্রায় নয় বছর পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবার পাকিস্তানে।

https://p.dw.com/p/4lnqp
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
প্রায় নয় বছর পর আবার কোনো ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানে। ছবি: Florian Gaertner/AA/IMAGO

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পাকিস্তান গেছিলেন। তারপর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উত্তেজনা ও অবনতির কারণে আর কোনো ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তান যাননি। দীর্ঘদিন পর এবার এসসিও বৈঠকে যোগ দিতে পাকিস্তান গেলেন জয়শঙ্কর।

এর আগে গতবছর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন(এসসিও) বৈঠকে যোগ দিতে ভারতে এসেছিলেন। প্রায় ১২ বছর পর ভারতে পা রেখেছিলেন পাকিস্তানের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নয়

ভারতও পাকিস্তান দুই দেশই জানিয়ে দিয়েছে, জয়শঙ্কর ইসলামাবাদে এসসিও বৈঠকে যোগ দিলেও কোনো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে না। বিলাওয়ালও যখন এসেছিলেন, তখনো কোনো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়নি। 

জয়শঙ্কর আগেই জানিয়েছেন, ''এসসিও বৈঠক হলো বহুপাক্ষিক ইভেন্ট। আমি ওখানে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি না। আমি সেখানে এসসিও সদস্য দেশের প্রতিনিধি হিসাবে যাচ্ছি। আমি একজন ভদ্র ও সুশীল মানুষ। আমি সেরকমই আচরণ করব।''

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ''ভারত বা পাকিস্তান কেউই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য কোনো অনুরোধ করেনি। তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তান প্রটোকল অনুযায়ী জয়শঙ্করকে অভ্যর্থনা জানাবে।''

ইসলামাবাদে সেনা

এসসিও শীর্ষ বৈঠকের সময় কোনো ধরনের সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য ইসলামাবাদ জুড়ে সেনা নামানো হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের বহু সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইমরানের দল পিটিআই আগে বিক্ষোভের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পরে তারা জানিয়ে দেয়, এসসিও বৈঠক চলার সময় কোনো বিক্ষোভ দেখানো হবে না।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কুইয়াং।
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কুইয়াংকে স্বাগত জানাচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। ছবি: Pakistan's Prime Minister Office/AFP

এসসিও শীর্ষবৈঠকে যোগ দেয়া নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তান সরকার তিনদিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। স্কুল, কলেজ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সব বন্ধ থাকছে। সেনা ও আধা সামরিক বাহিনী রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে। পার্লামেন্ট, দূতাবাস, বৈঠকস্থল, বিদেশি অতিথিরা যেখানে আছেন, সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্ব সেনার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কুইয়াং যখন ইসলামাবাদে পা দেন, তখন নিরাপত্তা লকডাউনের মধ্যে ছিল ইসলামাবাদ। ১১ বছর পর চীনের প্রধানমন্ত্রী আবার পাকিস্তানে এলেন। এরপর চীনের প্রধানমন্ত্রী বেজিংয়ের অর্থে বানানো একটি বিমানবন্দরের উদ্বোধনও করেন।

বৈঠকে কারা থাকছেন

ইসলামাবাদের এসসিও বৈঠকে চীনের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বেলারুশ, কাজাখস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। কিরঘিজস্তানের মন্ত্রিসভার চেয়ারম্যান থাকবেন এবং ইরানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট বৈঠকে যোগ দেবেন। এছাড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করও থাকবেন।

এছাড়া বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং তুর্কেমেনিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।

আর্থিক, বাণিজ্যিক, পরিবেশগত এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। এই সংগঠন কী কাজ করেছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এসসিও শীর্ষবৈঠক উপলক্ষে শেহবাজ শরীফ নৈশভোজের আয়োজন করেছেন। জয়শঙ্কর সম্ভবত সেখানে থাকবেন।

কেন দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নয়?

সাবেক কূটনীতিক অশোক সাজ্জানহার এনডিটিভি-কে বলেছেন, ''এসসিও হলো বহুপক্ষীয় সংগঠন। এখানে রোটেশন করে সব দেশ এই বৈঠকের আয়োজন করে। ২০১৭ সালের পর থেকে ভারত এসসিও-র সব বৈঠকে যোগ দিয়েছে। কিন্তু সবসময়ই পররাষ্ট্রমন্ত্রী গেছেন। একবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী গেছিলেন। তাই জয়শঙ্করই যে এসসিও বৈঠকে যাবেন, সেটা প্রত্যাশিত।'' 

তার মতে, ''ভারত-পাক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা নিয়ে বল এখন পাকিস্তানের কোর্টে। ভারত স্পষ্ট করে বলেছে, ২০১৯ পুলওয়ামা ও তার পরে বালাকোটের পর আলোচনা ও সন্ত্রাসবাদ একসঙ্গে যেতে পারে না। কিন্তু এরপর পাকিস্তান কোনো গঠনমূলক পদক্ষেপ নেয়নি।''

তিনি জানিয়েছেন, ''৩৭০ ধারা বিলোপের পর পাকিস্তান হাইকমিশনকে প্রত্যাহার করে নেয়। ভারতও একই কাজ করে। পাকিস্তানের সঙ্গে ৩৭০ ধারার কোনো যোগ নেই।  এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ফলে সম্পর্ক ভালো করতে গেলে পাকিস্তানকে আগে পদক্ষেপ নিতে হবে।''

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)