ন্যায়ের দাবিতে এবার কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে রাতভর বিক্ষোভ
মেয়েদের নেতৃত্বে সারা রাত ধরে প্রতিবাদ। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতার কেন্দ্রস্থন ধর্মতলায় সারারাত ধরে প্রতিবাদ হলো।
আন্দোলনের রোববার
কলকাতায় সেপ্টেম্বরের প্রথম রোববার হয়ে উঠল আন্দোলনের রোববার। একাধিক প্রতিবাদ মিছিল বের হলো। তবে সবচেয়ে বড় মিছিল হলো কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত। আর ধর্মতলায় সারা রাত জাগলেন মিছিলকারীরা। নারীদের নেতৃত্বে আবার কলকাতার রাতদখল করলেন আন্দোলনকারীরা।
'আমরা তিলোত্তমা'
এ’দিনের সবচেয়ে নজরকাড়া মিছিল ছিল ‘আমরা তিলোত্তমা’র প্রতিবাদ। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে এবং ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বিচার চেয়ে ‘আমরা তিলোত্তমা’র ব্যানারে হওয়া প্রতিবাদ মিছিলে কার্যত থমকে গিয়েছিল মধ্য কলকাতার বড় অংশ।
মিছিলে তারকারাও
কলেজ স্কোয়্যার থেকে শুরু হয় মিছিল। তার পর বউবাজার হয়ে বিকেলে মিছিল পৌঁছয় ধর্মতলায়। মিছিলে বিভিন্ন বয়স, বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গেই পা মিলিয়েছিলেন টলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের একাংশ। মিছিলে দেখা যায় অপর্ণা সেন, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, উষসী চক্রবর্তী, অপরাজিতা আঢ্য, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, সোহিনী সরকার প্রমুখকে।
ছিল পড়ুয়ারাও
মিছিলে ছোটদের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। টলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পাশাপাশি ছিলেন রূপান্তরকামী মানুষেরাও।
ন্যায়ের দাবি নিয়ে
মিছিল থেকে স্লোগান উঠল, “দফা এক, দাবি এক, সব দোষী শাস্তি পাক।” বারবার শোনা গিয়েছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান। তা ছাড়াও প্রতিবাদ মিছিল থেকে ‘প্রীতিলতার এই মাটিতে ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’-এর মতো স্লোগান ভেসে এসেছে।
সাধারণ মানুষের সঙ্গে
সাধারণের ভিড়ে মিশে স্লোগান দিতে দেখা যায় স্বস্তিকা, সোহিনী, বিদীপ্তা, চৈতি ঘোষালদেরও। টলি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রত্যেকেই জানান, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলনকে টলানো যাবে না।
চিত্রপরিচালকও সামিল
ছিলেন চিত্রপরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। আরজি করের ঘটনায় প্রথম থেকেই তাকে সোচ্চার দেখা গিয়েছে।
স্বস্তিকার বক্তব্য
ধর্মতলার অবস্থান মঞ্চ থেকে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই সরকার আমাদের সরকার। আমরাই এই সরকারকে এনেছি। আরজি করের ঘটনার বিচার তো আমরা এই সরকারের কাছেই চাইব। বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা রয়েছে।”
মিছিলের দাবি
মিছিল শেষের পর একগুচ্ছ দাবি তুলে ধরেন উদ্যোক্তারা। সেখানে আরজি করের ঘটনায় দ্রুত বিচারের পাশাপাশি ওই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে অপসারণ করার দাবিও জানানো হয়েছে।
রাতভর বিক্ষোভ
সন্ধ্যার আগেই কলেজ স্কোয়্যার থেকে ‘আমরা তিলোত্তমা’র মিছিল পৌঁছয় ধর্মতলায়। এরপরই উদ্যোক্তারা ঘোষণা করেন যে, ভোর ৪টে অবধি ধর্না অবস্থান চলবে।
বিক্ষোভ চলছে
রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে ধর্না অবস্থানে বসেন মিছিলের উদ্যোক্তাদের একাংশ। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, দেবলীনা দত্তও।
রাত জাগানিয়া বিক্ষোভ
মধ্যরাত অতিক্রান্ত। ধর্মতলার নাগরিক মঞ্চের অবস্থানকারীরা রাত জাগছেন। মুহূর্তে মুহূর্তে সুবিচারের দাবিতে উঠছে স্লোগান। রাজ্য সরকারের চার দফতর স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী ও শিশুকল্যাণ এবং পরিবহণ দফতরে পাঠানো ইমেলের জবাব না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান চলবে বলে প্রতিবাদীরা জানিয়েছেন। ধর্নামঞ্চে সাধারণের পাশাপাশি এখনও হাজির স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, ঊষসী চক্রবর্তীরা।
প্রতিবাদে মুখর
বহু কাল ধরে বহু প্রতিবাদে রাত জেগেছে ধর্মতলা। কিন্তু এমন রাত কখনও দেখেনি। দলীয় পতাকাহীন এক অনন্য ‘রাজনৈতিক’ রাত জাগার সাক্ষী হল কলকাতা। চেনা মুখ, অচেনা মুখ, যাদের প্রায় কাউকেই রাজনীতির চেনা চৌহদ্দিতে ফেলা যাবে না, তেমনই এক বিরল ‘মুখ’দর্শন হল ‘আমরা তিলোত্তমা’র ডাকে। বিক্ষোভ সকালেও চলছে।