নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন খালেদা?
প্রশ্নের মুখে খালেদার নির্বাচনে অংশগ্রহণ
বাংলাদেশের সংবিধনের ৬৬(১) অনুচ্ছেদে সংসদ নির্বাচনে অযোগ্যতার ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘‘তিনি যদি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে৷''
আইনজীবীরা বলছেন, যেহেতু খালেদা জিয়ার ৫ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে, তিনি আইনত আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না৷
তবে বিচারিক আদালতের রায় যদি আপিল আদালত স্থগিত করে আপিলের জন্য গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য এই অনুচ্ছেদ বাধা নয়৷ সেক্ষেত্রে তিনি জামিনও পেতে পারেন৷
এরই মধ্যে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘আমরা আগামী সপ্তাহে আপিল দায়েরের আশা করছি৷''
তারেক রহমান চালাবেন দল?
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সিনিয়র নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন যে, খালেদা জিয়ার অবর্তমানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করবেন তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমান৷
আদালত থেকে বের হয়ে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এমন কথা জানিয়েছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ৷
তারেক রহমান এখন চিকিৎসার সুবিধার্থে সেন্ট্রাল লন্ডনের এডমন্টনে সপরিবারে বসবাস করছেন৷
তার বিরুদ্ধে একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত৷
শুক্র ও শনিবার বিএনপির বিক্ষোভ
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টি ফোর ডট কমের খবর অনুযায়ী, রায় ঘোষণার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর এর প্রতিবাদে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে শুক্র ও শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘দেশনেত্রী খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, নির্দেশ দিয়ে বলেছেন কোনো রকমের কোনো হঠকারী কর্মসূচি দেয়া যাবে না, কোনো রকমের সহিংস কর্মসূচি দেয়া যাবে না৷ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে হবে, বিক্ষোভ করতে হবে৷ এই কথাটা বরাবরই বলেছেন তিনি৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘সেজন্য দেশনেত্রীর নির্দেশে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারাদেশে জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে৷ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও নিয়মাতান্ত্রিক কর্মসূচি হবে৷ পরদিন শনিবারও সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে৷''
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়৷
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অন্যান্য মামলা
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ছাড়াও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি বিচারাধীন৷ গত ১ ফেব্রুয়ারি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য থাকলেও তা আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেন আদালত৷
১ ফেব্রুয়ারি মামলার সরকারি কৌসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল গণমাধ্যমকে জানান, এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ায় নগরীতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিশেষ আদালত-৫ মামলার যুক্তি-তর্কের তারিখ পিছিয়ে দেন৷
২০১০ সালের ৮ আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলাটি করে দুদক৷ অভিযোগ, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকার অবৈধ লেনদেন হয়েছে৷
মামলার অপর অভিযুক্তরা হলেন, বিএনপি নেতা হারিস চৌধুরী এবং মনিরুল ইসলাম খান৷ অভিযুক্তদের মধ্যে হারিস চৌধুরী পলাতক রয়েছেন৷
এছাড়া, খালেদা জিয়ার বিরদ্ধে আরো ১৪টি মামলার বিচার শুরুর জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে৷
জেডএ/এসিবি
বন্ধু, আপনার কী মনে হয়? খালেদা জিয়া কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন? লিখুন নীচের ঘরে৷