অন্যদিকে অভিযানের নামে তৈমুর সমর্থক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের অভিযোগ করা হয়েছে৷ তবে আইভীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পুলিশ বিভিন্ন মামলার আসামি, সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করছে৷ দুই পক্ষই নির্বাচনের দিন সহিংসতারও আশঙ্কা করছে৷
শুক্রবার ছিলো নির্বাচনি প্রচারের শেষ দিন৷ প্রার্থীরা সারা দিনই মাঠে ছিলেন৷ ভোট চেয়েছেন৷ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি৷ যে যার মতো প্রচার চালিয়েছেন৷ নির্বাচন কমিশন বলছে, এপর্যন্ত প্রচার প্রচারণায় আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বড় কোনো অভিযোগ তারা পাননি৷ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয় সেজন্য তারা সব প্রস্তুতি নিয়েছেন৷
তৈমুর আলম খন্দকারের নির্বাচন সমন্বয়কারী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবিএম কামাল হোসেন শুক্রবার অভিযোগ করেন, ‘‘পুলিশ নানা অভিযানের নামে গভীর রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে৷ থানা পর্যায়ের কয়েকজন নির্বাচন সমন্বয়কারীকে আটক করা হয়েছে৷ ছাত্রদল, যুবদলের নেতা-কর্মীদের আটক করা হচ্ছে৷ এতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে৷ তারা আমাদের চাপে রাখতে চাইছে৷ আর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জে গিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ খারাপ করেছেন৷ তাদের নানা বিতর্কিত কথায় ভোটাররা ভয়ের মধ্যে আছেন৷ মাঠে নামতে দেয়া হবে না, ঘুঘু দেখেছেন ফাঁদ দেখেননি - এই ধরনের কথা খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে৷ তারা বৃহস্পতিবার রাতেও ডিসি এবং রিটানিং অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷’’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদার সিন্ডিকেট শুরু থেকেই মাঠে নেমে কালো টাকা ছাড়াচ্ছে৷ তাদের কোটি কোটি টাকা আছে৷ তারা চাইছে এই কালো টাকা দিয়ে ভোটের ফল নিজেদের পক্ষে নিতে৷’’
এই নির্বাচনে আলোচিত, সমালোচিত আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেন, তার লোকজন তো এখন আইভীর জন্য ভোট চাইছে৷ কিন্তু তারা যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের হাতি প্রতীকে ভোট দেয় আমরা কি আপত্তি করব? তিনি নির্বাচনের দিন সহিংসতার আশঙ্কাও করেন৷
এর জবাবে সেলিনা হায়াৎ আইভীর নির্বাচন সমন্বয়কারী এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘তৈমুর আলম খন্দকারের লোকজন বরং কালো টাকার খেলা শুরু করেছে৷ তার পক্ষের গডফাদার ও তার লোকজন আজ (শুক্রবার) রাতে কালো টাকা নিয়ে মাঠে নামবেন৷ তারা টাকা দিয়ে আইভীর ভোট ব্যাংক দখল করতে চাইছে৷ তারা অতীতে অনেকে কালো টাকার মালিক হয়েছেন৷ আমাদের প্রার্থী কোনো চাঁদাবাজি বা টেন্ডারবাজি করেননি৷ তার কালো টাকা আসবে কোথা থেকে?’’
তৈমুরের লোকজনকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তাদের কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না৷ যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তারা বিভিন্ন মামলার আসামি, সন্ত্রাসি, চাঁদাবাজ৷ সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থেই তাদের আটক করা হচ্ছে৷’’
তিনি আশঙ্কা করেন, ‘‘নির্বাচনের দিন গডফাদাররা বিভিন্ন কেন্দ্রে হামলা করে নির্বাচন ভন্ডুলের চেষ্টা করতে পারে৷ পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে৷’’
তার কথা, আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান এখন ঘরে বসে আছেন৷ তার লোকজন নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছেন৷ তবে এগুলো লোক দেখানো৷
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, নির্বাচনের দিন যাতে কোনো সহিংসতা না হয় তার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি কেন্দ্র ভিত্তিক গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে৷ সেখানে, পুলিশ, আর্মড পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি থাকবে৷’’
তৈমুরের লোকজনকে আটকের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘৮৯ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র একজন প্রার্থী এই অভিযোগ করছেন৷ আমরা কোনো দলীয় পরিচয় দেখে বা প্রার্থীর লোক আটক করছি না৷ যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, যারা ওয়ারেন্টের আসামি, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ তাদের আটক করছি৷’’
কালো টাকার ছড়াছড়ি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দুইজন প্রার্থীই এই অভিযোগ করছেন৷ আমরা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছি৷ যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেব৷’’
জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে পুলিশের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু হচ্ছে৷ তার তালিকাও করা হয়েছে৷ অভিযানে আওয়ামী লীগের শামীম ওসমান পন্থিরাও আটক ও তল্লাশির মুখে পড়ছেন৷
জেলা রিটার্নিং অফিসার মাহফুজা আক্তার জানান, ‘‘আলাদাভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা না করে আমরা ১৯২টি কেন্দ্রকেই বিশেষভাবে দেখছি৷ আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেইভাবেই ব্যবস্থা নিয়েছি৷ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের নেতৃত্বে পর্যাপ্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে নির্বাচনের দিন৷’’
তার কথা, ‘‘এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রার্থী বড় কোনো অভিযোগ করেননি৷ মুখে কালো টাকা, গডফাদার এগুলো শোনা গেলেও কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি৷ তার আশা নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসব মুখর হবে৷’’
মেয়র ছাড়াও ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হবে৷ নির্বাচনে ছয়জন মেয়র প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে নৌকা প্রতীকের সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং স্বতন্ত্র হাতি প্রতীকের তৈমুর আলম খন্দকারের মধ্যে৷
বিএনপি সরাসরি এই নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি৷ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তৈমুর আলম খন্দকারকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়কের পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে৷ তবে বিএনপির সদস্যপদ তার আছে৷ তাই বিএনপির নেতা-কর্মীরা তার সঙ্গে আছেন৷
অন্যদিকে সেলিনা হায়াৎ আইভী এর আগে পরপর দুইবার মেয়র নির্বাচিত হন৷ প্রথমবার স্বতন্ত্র হিসেবে শামীম ওসমানকে পরাজিত করে তিনি মেয়র হন৷ দ্বিতীয় বার নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয়ী হন৷ এবারও তিনি নৌকার প্রার্থী৷
নারায়ণগঞ্জ সিটিতে মোট ভোটার পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭৷ নির্বাচন হবে ইভিএম-এ৷ সাধারণ ভেটারদের কথা, অতীতে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে সহিংসতার নজির নেই৷ তাদের আশা, তাই এবারো উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে৷
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচন কমিশন
বাংলাদেশের প্রথম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বিচারপতি এম ইদ্রিস৷ ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই থেকে ১৯৭৭ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি ৷ ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে এই কমিশন৷ সে সময় রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। নির্বাচনে ২৯৩ আসন জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। জাসদ ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাঁচটি আসন পায়।
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
নুরুল ইসলাম কমিশন
বিচারপতি একেএম নুরুল ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্ব পালন করা সিইসি৷ ১৯৭৭ সালের ৮ জুলাই যখন দায়িত্ব নেন, তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান৷ প্রায় আট বছর দায়িত্ব পালনের পর অব্যাহতি নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি৷ ৷ ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন হয় তার তত্ত্বাবধানে। বিএনপি পায় ২০৭ আসন, আবদুল মালেক উকিলের আওয়ামী লীগ ৩৯ আসন৷
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
তিন রাষ্ট্রপতির কমিশন
পরপর দুই সামরিক শাসকের অধীনে সিইসির দায়িত্ব পালন করেছেন নুরুল ইসলাম৷ ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জিয়াউর রহমান নিহত হলে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার ১৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ‘সামরিক অভ্যুত্থানে’ ক্ষমতায় আসেন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। পরবর্তীতে এরশাদের সরকারে আইনমন্ত্রী ও পরে উপ রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন নুরুল ইসলাম৷
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
মসউদ কমিশন
বিচারপতি চৌধুরী এটিএম মসউদ দায়িত্ব নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি৷ তিনি পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করেন ১৯৯০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি৷ এরশাদের আমলে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুটো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এই কমিশনের অধীনে৷ তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আট দলীয় জোট গেলেও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সাত দলীয় জোট তা বর্জন করে। চতুর্থ জাতীয় নির্বাচন দুই জোটই বর্জন করে৷
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
সুলতান কমিশন
বিচারপতি সুলতান হোসেন খান ১৯৯০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ তবে মাত্র ১০ মাস দায়িত্বে থেকে কোনো জাতীয় নির্বাচন না করেই ২৪ ডিসেম্বর সরে যেতে বাধ্য হন এরশাদের নিয়োগ পাওয়া এই সিইসি৷ গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হলে প্রধান দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক মতৈক্যে অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ৷ এরপর তিনি ইসি পুনর্গঠন করেন৷
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
রউফ কমিশন
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথম তিন সদস্যের ইসি পায় বাংলাদেশ। বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ সিইসি হিসেবে নিযু্ক্ত হন৷ ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে তার কমিশন৷ তিনি ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন৷ রউফ কমিশন নির্বাচনি আইনে ব্যাপক সংস্কার আনে, জারি করা হয় নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ। ১৯৯৪ সালে মাগুরা উপ নির্বাচন নিয়ে বিতর্কিত হন সিইসি রউফ।
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
সাদেক কমিশন
বিচারপতি একেএম সাদেক সিইসি পদে নিযুক্ত হন ১৯৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল৷ ১৯৯৬ সালে এই কমিশনের অধীনেই হয় বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলো ভোট বর্জন করে। বিএনপি পায় ২৭৮ আসন৷ দেড় মাস মেয়াদী সংসদের একমাত্র অধিবেশনে ত্রয়োদশ সংশোধনে সংবিধানে যুক্ত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা৷ এই ইসিই নির্বাচনি আচরণবিধি চালু করে৷
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
হেনা কমিশন
১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে অস্থিরতার মধ্যে সাবেক আমলা মোহাম্মদ আবু হেনা ১৯৯৬ সালের ৯ এপ্রিল সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ এই প্রথম কোনো আমলা এই পদে নিয়োগ পান৷ তার অধীনে ১৯৯৬ সালের জুনে সপ্তম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ দলীয় সরকারের অধীনে ১৯৯৯ সালে টাঙ্গাইল (সখিপুর-বাসাইল) উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির জন্য সমালোচিত হয় তার কমিশন৷ নির্বাচনের গেজেট না করেই ২০০০ সালের ৮ মে দায়িত্ব ছাড়েন আবু হেনা৷
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
সাঈদ কমিশন
রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মেয়াদপূর্তির পর আওয়ামী লীগ সরকার ওই দায়িত্বে আনে একানব্বইয়ের নির্বচনের সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে থাকা শাহাবুদ্দিন আহমেদকে। আবু হেনা সরে যাওয়ার পর সিইসি হন সাবেক আমলা এম এ সাঈদ৷ বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সাঈদ কমিশনের অধীনেই ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন হয়।
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
আজিজ কমিশন
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত কমিশনগুলোর একটি আজিজ কমিশন৷ বিচারপতি এমএ আজিজ ২০০৫ সালের ২২ মে সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷ ব্যাপক রাজনৈতিক টানাপড়েনের সময় ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নবম জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন৷ পরে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দীন আহমদ তফসিল বাতিল করেন৷ ২১ জানুয়ারি কোনো জাতীয় নির্বাচন আয়োজন না করেই পদত্যাগ করেন এম এ আজিজ৷
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
শামসুল হুদা কমিশন
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এমএ আজিজের উত্তরসূরী হন এটিএম শামসুল হুদা৷ তার কমিশন ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে৷ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন হয় ওই কমিশনের সময়েই। সংলাপ করে নির্বাচনি আইন সংস্কার করা হয়। চালু হয় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের নিয়ম ও ইভিএম। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০, বিএনপি ৩০ ও জাতীয় পার্টি ২৭ আসন পায়।
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
রকিবুদ্দিন কমিশন
ইসি পুনর্গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের পর সার্চ কমিটি গঠন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। ২০১২ সালের ০৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেন সাবেক আমলা কাজী রকিবুদ্দিন আহমদ৷ সংসদে বাতিল হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা৷ ক্ষমতাসীন দলের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়৷ বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের বর্জন করা নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন৷
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
নুরুল হুদা কমিশন
এবারও সংলাপ আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবুল হামিদ৷ সিইসি করা হয় সাবেক আমলা কে এম নুরুল হুদাকে৷ দ্বাদশ ইসির যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের নতুন কার্যালয় নির্বাচন ভবনে। তার অধীনে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ পাওয়ায় যায়৷ বর্তমান কমিশনের মেয়াদ রয়েছে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
-
এক নজরে সব নির্বাচন কমিশন
এরপর কে?
সংবিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন করার কথা থাকলেও তা এবারও করা হয়নি৷ ফলে আবারও রাষ্ট্রপতি মো. আবুল হামিদ রাজনৈতিক দলগুলোকে এ নিয়ে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন৷ তবে এই সংলাপের আহ্বানকে ‘অর্থহীন’ উল্লেখ করে তাতে যোগ না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি, বাসদ, সিপিবিসহ বেশ কয়েকটি দল৷