1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশলাতিন আমেরিকা

ধারণের বদলে নির্গমন ঘটাচ্ছে অ্যামাজন অরণ্য

১২ মার্চ ২০২৪

পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে পরিচিত রেইন ফরেস্ট আজ হুমকির মুখে৷ বিশেষ করে অ্যামাজন অরণ্য বহুকাল কার্বন ধারণ করার পর এবার নির্গমনের উৎস হয়ে উঠেছে৷ গবেষকরা সেই মারাত্মক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/4dRRt
২০২৩ সালে তীব্র গরমে অ্যামাজনজুড়ে তিন হাজারের মতো দাবানলের ঘটনা ঘটেছে
অ্যামাজনের কার্বন নিঃসরণের উৎসে পরিণত হওয়ার পেছনে বন নিধন এবং দাবানলকেই দায়ী করছেন গবেষকেরাছবি: Gustavo Basso/DW

আমাদের গ্রহের উত্তাপ কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সীমিত রাখার উদ্যোগে অ্যামাজন জঙ্গল অপরিহার্য৷ অ্যামাজন সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ অক্সিজেন সৃষ্টি করছে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধারণ করছে৷

কিন্তু দাবানল ও বন নিধনের কারণে অ্যামাজনের সেই ক্ষমতা কমে চলেছে৷ সাম্প্রতিক এক গবেষণায় নতুন এক বাস্তব উঠে এসেছে৷ লুচিয়ানা গাটি জাতীয় মহাকাশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষক ও রিপোর্টের প্রধান লেখক৷

২০২১ সালে ব্রিটেনের নেচার পত্রিকায় দশ বছরের গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে৷ তাতে জানা গেল, যে ইতিহাসে এই প্রথম অ্যামাজন এলাকা গ্রিনহাউস গ্যাসের উৎসে পরিণত হয়েছে৷

লুচিয়ানা ও তাঁর টিম ২০১০ সাল থেকে অ্যামাজন এলাকায় কার্বনের মাত্রা পরিমাপ করছেন৷ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলে ৪,৫০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত ভার্টিকাল বা উল্লম্ব উড়ালের মাধ্যমে গবেষকরা চারটি ভিন্ন জায়গায় বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করছেন৷

অ্যামাজন জঙ্গল কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন করছে না ধারণ করছে, সেটা জানতে এই টিম দুটি পদ্ধতি কাজে লাগাচ্ছে৷ প্রথম পদ্ধতিতে অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে অ্যামাজন অববাহিকায় আসা কার্বনের পরিমাণ পরীক্ষা করা হচ্ছে৷

বার্বাডস, আসেনসিয়ন দ্বীপ ও কেপ টাউনে অবস্থিত আন্তর্জাতিক পরিমাপ কেন্দ্রের দৌলতে এই টিম বাতাসে বস্তুকণার পরিমাণ নিখুঁতভাবে পরিমাপ করতে পারে৷

সেই অংকের সঙ্গে নিজস্ব পরিমাপের ফল তুলনা করা হয়৷ সংখ্যাটা বেশি হলে বোঝা যায়, যে অ্যামাজন ধারণের বদলে বেশি কার্বন নির্গমন করেছে৷ কম হলে এর বিপরীতটাই নির্ধারণ করা হয়৷ শুনতে সহজ মনে হলেও বিষয়টি কিন্তু বেশ জটিল৷

বদলে যাচ্ছে অ্যামাজন

একাধিক সম্ভাবনা সেই ফলের উপর প্রভাব রাখতে পারে৷ যেমন ঠিক কত দিন ধরে সেই বাতাস আকাশে ভাসছিল, অথবা সেই বাতাসের ঘনত্ব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷

কিন্তু সেই ফল এতই বিস্ময়কর ছিল, যে গবেষকরা ভেবেছিলেন যে তাঁদের মডেল বা পদ্ধতি সম্ভবত ভুল ছিলো৷ লুচিয়ানা গাটি বলেন, ‘‘সবার আগে নিজের নিশ্চিত হওয়া দরকার ছিল৷ তখন ‘ইয়ারলি ভার্টিকাল প্রোফাইল' নামের এক টুল তৈরি করলাম৷ কোনো মডেল বা পদ্ধতি নয়, বরং সেটা শুধু এক পরিমাপ ছিল৷ অর্থাৎ বায়ুমণ্ডলে যা আছে৷ আমার মতে, ভূ-পৃষ্ঠের কাছে এলে ঘনত্ব বেড়ে গেলে তার অর্থ, সেই ভূ-পৃষ্ঠ কার্বন-ডাই-অক্সাইডের উৎস৷ কনসেনট্রেশন কমে যাওয়ার অর্থ, ভূ-পৃষ্ঠ সিংক বা নীচের দিকে কিছুটা গভীর৷ অর্থাৎ বাৎসরিক ভার্টিকাল প্রোফাইল সৃষ্টি করলে এবং তার ফল ইতিবাচক হলে, একশো শতাংশ নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে অ্যামাজন অবশ্যই সিওটু-র উৎস৷''

গবেষকরা দেখিয়ে দিয়েছেন, যে আগের মতোই অ্যামাজন এলাকার অবহেলা চলছে৷ আমাদের যুগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, অর্থাৎ জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধানসূত্র সন্ধানের বদলে আমরা বরং সমস্যারই অংশ হয়ে উঠেছি৷

বন নিধন ও দাবানল অ্যামাজনের উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলছে৷ সেই সব প্রক্রিয়াই কার্বন নির্গমনের উৎস৷

সের্দার ভারদার/এসবি