ধর্মতলায় 'আমরণ অনশন' জুনিয়র ডাক্তারদের
ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলের সামনে অস্থায়ী ভাবে মঞ্চ তৈরি করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ‘আমরণ’ অনশনে ছয় ডাক্তার।
কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে
শুক্রবার রাতে সংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তারেরা ঘোষণা করেছিলেন, কর্মবিরতি তুলে নিলেও যত দিন পর্যন্ত না তাদের সব দাবি পূরণ হচ্ছে, তত দিন অবস্থান চালিয়ে যাবেন। একই সঙ্গে এও জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে দাবি না মানলে তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করবেন।
দাবি মানা হলো না, অনশন শুরু
শনিবার রাতে ঘোষণা করা হল, সেদিন থেকেই আমরণ অনশনে বসবেন তারা। জানালেন, তারা কাজে ফিরছেন কিন্তু খাবার খাবেন না। জানানো হলো, অনশনে বসছেন ছয় জন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্য আচার্যকে।
কারা অনশনে
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, স্নিগ্ধা হাজরা, তনয়া পাঁজা, এসএসকেএমের অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা এবং এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের পুলস্ত্য আচার্য।
যুক্ত হলো আরজি কর
প্রথমে আরজি করের কেউ এই অনশনে ছিলেন না। রবিবার সন্ধ্যায় অনশনে যোগ দেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘দাবি পূরণ না হলে বা মৃত্যু না হলে অনশন চলবে। যাঁরা অনশনে বসছেন, তাঁরা নিজেদের উপর আত্মবিশ্বাসী। তবে তাঁদের কিছু হলে দায় রাজ্য সরকারের। ছবিতে দেখা যাচ্ছে জুনিয়র ডাক্তার তনয়া পাঁজাকে।
সাধারণ মানুষের সমর্থন
জুনিয়র ডাক্তার সাহস জোগাতে শহর বা শহরতলির বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে জরো হচ্ছেন মানুষ। ডানকুনি থেকে এসেছেন কুমকুম গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর প্রতিবেশী। তাঁদের আবাসনের ছেলে অনুষ্টুপ অনশনে শামিল।
আসছেন তারকারাও
মনোবল বাড়াতে উপস্থিত হয়েছেন চিত্রতারকা বাদশা মৈত্র।
পুজোর বেড়ানো বাতিল করে
পুজোয় সপরিবার বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল টালিগঞ্জের বিজয়েন্দ্র চক্রবর্তীর। জয়নগর কুলতলির ধর্ষণ আর জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন, এই দুই ঘটনার পর বেড়ানো বাতিল করে অনশন মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন পোস্টার হাতে।
সিনিয়র ডাক্তাররাও আসছেন
আর জি কর থেকেই ১৯৮০ সালে ডাক্তারি পাশ করেছিলেন শিবপ্রসাদ রায় চৌধুরী। সন্তানের বয়সিরা অনশনে বসেছে। বাড়িতে বসে থাকতে পারলেন না। বললেন, “ সরকারি তরফে একজন সেক্রেটারি লেভেলের কেউ এসে অন্তত কথা বলতে পারতেন। বড় হৃদয়হীন এই সরকার।”
প্রশাসনের বাধা
এই মঞ্চ বাঁধতেও বাধা দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। যে ডেকোরেটরের লোকজন এই মঞ্চ বাঁধতে এসেছিলেন, তাঁদের হুমকি দিয়ে দরিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর। এরপর আন্দোলনকারীরা নিজেরাই মঞ্চ বেঁধে নেন। জানালের ডাক্তার সোহম পাল। অনশনকারীরা ছাড়াও মঞ্চে রয়েছেন অসংখ্য জুনিয়র ডাক্তার। সোহম তাঁদেরই একজন।
বায়ো টয়লেটেও বাধা
বায়ো টয়লেট বসাতেও দেওয়া হয়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। উলুবেরিয়া মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার ঊর্মিমালা ভট্টাচার্য বললেন, “আমরা সরকারকে দিতে বলছি না, আমাদের সিনিয়রেরাই আমাদের জন্য বায়ো টয়লেট-এর বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন, কিন্তু এখানকার পুলিশ সেই অস্থায়ী টয়লেট নামাতে দেয়নি গাড়ি থেকে।”
নিজেরাই বানালেন
জুনিয়র ডাক্তাররা তারপর নিজেরাই বায়ো টয়লেট বানান। ধর্মতলায় অনশন মঞ্চের কাছে কয়েকজন এই বায়ো টয়লেট তৈরির কাজে ব্যস্ত।
কথা বলে
অনশনকারী ডাক্তারদের শারীরিক পরীক্ষা চলছে ধর্মতলার মঞ্চে। কেউ বসে আছেন। কেউ ঘুমোচ্ছেন। কেউ বাকিদের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে অনশনকারী এসএসকেএমের জুনিয়র ডাক্তার অর্ণব মুখোপাধ্যায়কে।
প্রতীকী মূর্তি
সিনিয়র ডাক্তারেরাও অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রবিবার জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্সের তরফে তা ঘোষণা করা হয়েছে। রিলে অনশন করবেন তাঁরা। জুনিয়রদের পাশে দাঁড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। কবে থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে, তা আলোচনার মাধ্যমে স্থির করা হবে। ছবিতে অনশন মঞ্চে বসানো নির্যাতিতার প্রতীকী মূর্তি।
প্রচুর পুলিশ
পুলিশ চিকিৎসকদের জানিয়েছিল, ওখানে বসা যাবে না। কিন্তু চিকিৎসকরা ততক্ষণে বিক্ষোভ শুরু করে দিয়েছেন। এরপর অনশনের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের তরফে কেউ যোগাযোগ করেনি।