1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘দ্য লিটল মারমেইড'খ্যাত আন্ডারসনকে নিয়ে জাদুঘর

২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

বিখ্যাত রূপকথা লেখক হান্স ক্রিস্টিয়ান আন্ডারসন ডেনমার্কের ওডেনজে শহরে জন্মেছিলেন৷ তার জীবনের কাজ তুলে ধরতে গত জুন মাসে ওডেনজেতে একটি নতুন মিউজিয়াম উদ্বোধন করা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/40mp5
DW Sendung Euromaxx | KW 27 | Hans Christian Andersen
ছবি: DW

ওডেনজের একেবারে কেন্দ্রে শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত সন্তান হান্স ক্রিস্টিয়ান আন্ডারসনকে নিয়ে একটি মিউজিয়াম গড়ে তোলা হয়েছে৷ নতুন এই মিউজিয়ামের বেশিরভাগ অংশ আছে মাটির নীচে৷ মাটির উপরেও আছে কিছুটা৷ সেখানে গেলে দর্শকরা আন্ডারসনের বিভিন্ন রূপকথার দৃশ্য নিজেদের মতো করে উপভোগ করতে পারবেন৷

মিউজিয়ামের প্রধান হেনরিক ল্যুবকা জাদুঘরের মারমেইড এরিয়া সম্পর্কে বলেন, ‘‘এখানে (মারমেইড এরিয়া ) আপনি আসতে পারেন৷ এসে পাথরের উপর শুয়ে থাকতে পারেন, আবার আকাশের দিকেও তাকিয়ে থাকতে পারে৷ অন্য মারমেইডরা ঐ জায়গার সৌন্দর্য সম্পর্কে কী গল্প করছে, তা শুনতে পারেন৷ সুন্দর মৎস্যনারীদের গানও শুনতে পারেন৷ আর আকাশ যেন আপনার নিজের স্বপ্ন পূরণের ক্যানভাস - আপনি সেদিকে তাকিয়ে আপনার ইচ্ছার কথা ভাবতে পারেন, ঠিক যেমনটা ছোট্ট মারমেইড ওখানে জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখেছিল৷

ডেনমার্কের রানি দ্বিতীয় মারগ্রেটে গত জুন মাসে এই মিউজিয়াম উদ্বোধন করেন, যদিও কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি৷

হান্স ক্রিস্টিয়ান আন্ডারসনের রূপকথা, মোটিফ ও বিভিন্ন চরিত্র, যেমন ‘দ্য নাইটেঙ্গেল', ‘দ্য প্রিন্সেস অ্যান্ড দ্য পি' কিংবা ‘দ্য লিটল গার্ল উইথ দ্য সালফার স্টিকস' এখনো বিশ্বের সব বয়সের মানুষকে অনুপ্রেরণা দেয়৷

হেনরিক ল্যুবকা প্রায় দশ বছর এই প্রকল্পে আর্টিস্টিক ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করছেন৷

তিনি এমন এক মিউজিয়াম গড়ে তুলেতে চেয়েছেন, যেখানে একটি রূপকথার বাগান থাকবে, থাকবে আধুনিক স্থাপত্য আর হান্স ক্রিস্টিয়ান আন্ডারসনের বিভিন্ন কাজ৷

ঐতিহাসিক শহর ওডেনজের একেবারে কেন্দ্রে নতুন এই মিউজিয়াম গড়ে তোলা হয়েছে৷

মাটির তলায় রূপকথার মিউজিয়াম!

হেনরিক ল্যুবকা বলেন, ‘‘আমরা এমন এক মিউজিয়াম গড়ে তুলতে চেয়েছি যেন সেটা আন্ডারসন যেভাবে গল্পগুলো বলতে চেয়েছেন তার সঙ্গে খাপ খায়৷ তাই আমরা তার সৃষ্টির মূল্য, তার সাহিত্য লেখার কৌশল, এগুলো মাথায় রেখে কাজ করেছি৷ তিনি কীভাবে তার গল্পগুলো বলেছেন, এবং আমরা কীভাবে তার গল্পগুলো সাহিত্যের পাতা থেকে অন্যরকম অভিজ্ঞতায় নিতে পারি, তা বিবেচনা করেছি৷''

নতুন মিউজিয়ামের ডিজাইনের জন্য সারা বিশ্ব থেকে আবেদন চাওয়া হয়েছিল৷ পরে জাপানের বিখ্যাত ‘কেঙ্গো কুমা অ্যান্ড এসোসিয়েটস'কে কাজ দেয়া হয়৷ কারণ তাদের ডিজাইনটি হান্স ক্রিস্টিয়ান আন্ডারসনের খোলা ন্যারেটিভ স্টাইলের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সংঙ্গতিপূর্ণ ছিল৷

এই ডিজাইন বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছেন জাপানি স্থপতি ইয়ুকি ইকেগুচি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা বৃত্তাকার ডিজাইন বেছে নিয়েছি, কারণ, আমরা চেয়েছি এটা একটা চেনের মতো কাজ করবে৷ অর্থাৎ সবকিছুকে একসঙ্গে জুড়ে রাখবে৷ মাটির উপর ও নীচে থাকা মিউজিয়ামের বিভিন্ন অংশকে এক করে রাখবে৷ এতে বাস্তবতা ও ফ্যান্টাসি, দুটি বিষয়ই ফুটে উঠবে৷''

সাড়ে পাঁচ হাজার বর্গমিটারের মিউজিয়ামের বেশিরভাগই মাটির নীচে৷ আর রূপকথার বাগানটি মাটির উপর বানানো হচ্ছে৷ স্টিল, কাচ আর কাঠ দিয়ে বানানো বৃত্তাকার কাঠামো পুরো মিউজিয়াম জুড়ে রয়েছে৷ স্থাপত্য আর প্রকৃতি এখানে মিলেমিশে আছে৷ এভাবে দর্শকদের স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে৷

ইয়ুকি ইকেগুচি বলেন, ‘‘এমন আকার ও সিকোয়েন্সের স্থাপত্য নির্মাণ করতে পেরে আমি খুব খুশি৷ যখন আমি কোনো এক জায়গায় দাঁড়াই তখন আমার কাছে অনেক বিস্ময় ধরা দেয়৷ পরিকল্পনার সময় আমি জানতাম যে, মিউজিয়ামের ভেতর অনেক ভালো জায়গা আছে৷ কিন্তু তারপরও এসব জায়গার মধ্যে অপ্রত্যাশিতভাবে ভালো কিছুর দেখা আমি পাই, যে কারণে আমি খুব খুশি৷''

একটা পেঁচানো করিডোর মিউজিয়ামেরউপর আর নীচকে যুক্ত করেছে৷ হেনরিক ল্যুবকা বলেন, ‘‘ঢালু পথ অনেকটা আন্ডারসনের জীবনের মেটাফোরের মতো৷ যখন আপনি নীচে নামতে থাকেন তখন যেন আপনি তার জীবনের মধ্যে প্রবেশ করতে থাকেন৷ একসময় আপনি নির্দিষ্ট থিম নিয়ে তৈরি জায়গায় ঢুকে পড়েন৷ এভাবে আপনি নিজের জীবন থেকে দূরে সরে গিয়ে রূপকথার জগতে চলে যান৷''

এ বছরের মধ্যেই মিউজিয়ামের কাজ পুরো শেষ হবার কথা৷ অর্থাৎ একটা সুখী সমাপ্তির আশা করা হচ্ছে৷

প্রেচ, লিন্ডবার্গ/জেডএইচ