1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

থাই সরকারের সমালোচনায় ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০

থাইল্যান্ডে কর্মরত মিয়ানমার, কম্বোডিয়া এবং লাওসের প্রায় ৩০ লাখ অভিবাসী শ্রমিক দিন কাটাচ্ছেন চরম উৎকণ্ঠায়৷

https://p.dw.com/p/M9kf
বাংলাদেশ, মিয়ানমার ইত্যাদি অনেক দেশ থেকে রুজি-রুটির খোঁজে মানুষ থাইল্যান্ডে যানছবি: picture-alliance/ dpa

থাই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্য জাতীয়তার সনদপত্র দেখিয়ে নাম নিবন্ধন করতে হবে অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকদের৷ মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' (এইচআরডব্লিউ) বলছে, এর ফলে নিপীড়ন ও দেশে ফেরতের ঝুঁকিতে পড়ছে শ্রমিকরা৷

থাইল্যান্ডে কর্মরত মিয়ানমার, কম্বোডিয়া এবং লাওসের প্রায় ৩০ লাখ অভিবাসী শ্রমিক দিন কাটাচ্ছেন চরম উৎকণ্ঠায়৷ অবৈধ অভিবাসী ঠেকানো এবং দেশের শ্রমবাজারে একটি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে থাই সরকার সম্প্রতি জানিয়েছে, এই দেশ তিনটির যে শ্রমিকরা নিজ নিজ জাতীয়তার সনদপত্র দেখাতে পারবে তাদের সবাইকে নতুন করে নাম নিবন্ধন করে থাইল্যান্ডে অবস্থান এবং কাজের অনুমতি দেবে সরকার৷ আর যারা তা পারবে না তাদের থাইল্যন্ড থেকে বেরিয়ে যেতে হবে৷

কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে থাই সরকারের এই সময়সীমার তীব্র সমালোচনা করেছে৷ সংগঠনটি বলছে, এই জাতীয়তার সনদ যাচাই প্রক্রিয়া খুবই ব্যয়বহুল, জটিল এবং অত্যন্ত বাজে ব্যবস্থাপনায় চলছে৷ তাই অনেক অভিবাসী শ্রমিকই এতে অংশ নিচ্ছে না৷ ফলে এমনিতেই নিপীড়নের শিকার এবং ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশ তিনটির শ্রমিকরা নতুন করে আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে৷

মিয়ানমার, কম্বোযডিয়া ও লাওসের ৮২ জন অভিবাসী শ্রমিকের সাক্ষাৎকারসহ প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' জানায়, এই শ্রমিকরা হত্যাকাণ্ড, আটকাবস্থায় নিপীড়ন, চাঁদাবাজি, যৌন হয়রানি এমনকি বাধ্যতামূলক শ্রমেরও শিকার হচ্ছে৷ এতে আরও বলা হয় অনেক শ্রমিকই দুর্নীতিবাজ সরকারি চাকুরে, পুলিশ এবং সুযোগসন্ধানী নিয়োগকর্তাদের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন৷

এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' এর থাই বিশেষজ্ঞ সুনাই ফাসুক বলেন, ‘‘থাইল্যান্ডে বসবাসকারী লাখ লাখ অভিবাসী বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে নির্যাতন, বিনা কারণে আটকাবস্থা, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরণের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন৷''

থাই সরকারের এ কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘অভিবাসী শ্রমিকদের মানুষ বলে গণ্য করা উচিৎ, কেবলমাত্র সম্পদ হিসেবে নয়৷''

২৮ ফেব্রুয়ারি সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত খুব কম শ্রমিকই এই নিবন্ধন প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে গেছে৷ সরকারি তথ্যের বরাত দিয়ে সংগঠনটি জানিয়েছে, এ যাবৎ নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে মাত্র ২ লাখ অভিবাসী শ্রমিক৷ আর কমবেশি মাত্র ৪৫ হাজারেরর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে৷

‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' এর ১২৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এই সময়সীমা বাড়ানোসহ অভিবাসীদের সংকট নিরসনে অন্যান্য বিষয়ের প্রতি নজর দেওয়ার জন্যই সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়৷ তাদের দাবি নিবন্ধনের এই নতুন নথি কোনো কাজে আসবে না যদি সুযোগসন্ধানী নিয়োগকর্তা এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের হাতে শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ করা না যায়৷

প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ, সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক