1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তেল ভরতে বেঁকে বসেছেন জার্মানির গাড়ি চালকরা

৯ মার্চ ২০১১

গাড়ির তেলে প্রাকৃতিক উপাদান ইথানল’এর ব্যবহার বাড়ানোর পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে গোটা জার্মানি এখন উত্তাল৷ গাড়িচালক, পেট্রল পাম্প, পেট্রল কোম্পানি, সরকার সহ সব পক্ষই এই সংকটের কবলে পড়েছে৷

https://p.dw.com/p/10WCY
ই-টেন নিয়ে গবেষণা এখনো চলছেছবি: picture-alliance/dpa

পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমাতে গোটা বিশ্ব জুড়ে চলছে নানা রকমের উদ্যোগ৷ যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়ন গাড়ির দূষণ কমাতে সদস্য দেশগুলির জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছে৷ একদিকে বিকল্প জ্বালানীর ব্যবহার বাড়ানো, অন্যদিকে পেট্রোলিয়ামের মধ্যে প্রাকৃতিক উপাদনের ব্যবহার আরও বাড়ানোই এই পরিকল্পনার লক্ষ্য৷ মোটকথা, বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী একাধিক পথে বায়ু দূষণ কমাতে চায় ইইউ৷ কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে পরিকল্পনার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে, যেমনটা এখন জার্মানিতে দেখা যাচ্ছে৷

Flash-Galerie Familienunternehmen Deutschland BMW
শখের গাড়িতে অচেনা-অজানা তেল ভরতে কেউই রাজি ননছবি: AP

চলতি মাসের শুরু থেকে জার্মানির পেট্রল পাম্পে চালু করা হয়েছে ১০ শতাংশ ইথানল মিশ্রিত পেট্রল, যার পোশাকি নাম ই-টেন৷ এই তেল গাড়ির ইঞ্জিনের জন্য কতটা উপযুক্ত, কোনো ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে কি না, সে বিষয়ে চরম বিভ্রান্তি বিরাজ করছে৷ কোন কোম্পানির কোন মডেলের গাড়ি এই তেল ব্যবহার করতে পারে, কোনটা পারে না, তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়৷ জার্মান সরকার এই তেলের বিক্রি বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে, এমনকি নির্দিষ্ট মাত্রার বিক্রি না হলে পেট্রল পাম্পের জন্য জরিমানাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে৷ পেট্রোলিয়াম কোম্পানিগুলিও সেই নির্দেশ অনুযায়ী ই-টেন উৎপাদন করছে৷ কিন্তু সাধারণ চালক নিজের গাড়িতে অচেনা অজানা এই তেল ঢালতে চাইছেন না৷ এমনকি নিরুপায় হয়ে তারা বেশি অক্টেনের অনেক দামী তেল ভরছেন৷ এই অবস্থায় পেট্রল পাম্প ও পেট্রল কোম্পানিগুলির মাথায় হাত৷ সব পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছে৷ সংকটের সমাধানের লক্ষ্যে সরকার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের শীর্ষ প্রতিনিধিদের নিয়ে এক বৈঠক ডেকেছিল৷ কিন্তু তাতেও কোনো ফল পাওয়া যায় নি৷

Iran Benzin Rationierung
অনেকেই বাধ্য হয়ে বেছে নিচ্ছে দামি তেলছবি: ISNA

এত বড় এক পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি যে নেওয়া হয় নি, সেবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ ই-টেন তেল ভরে গাড়ির ক্ষতি হলে কে তার দায় নেবে, তাও কেউ বলতে পারছে না৷ এমনকি এই তেলের ব্যবহারের ফলে আদৌ পরিবেশ দূষণ কমবে কি না, কয়েক জন বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক নেতা সেবিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন৷ সরকারের সমালোচনা করে তারা বলছেন, গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলি ও অন্যান্য মহলের লবির চাপের মুখে নতি স্বীকার করে সরকার শুধু একটি পথই বেছে নিয়েছে, আর তা হলো সাধারণ ভোক্তাদের উপর এমন এক অবাস্তব নিয়ম চাপিয়ে দেওয়া৷ জ্বালানির সাশ্রয় করে, নির্মাতাদের এমন গাড়ি তৈরির জন্য চাপ দেওয়া এবং কর নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই সব গাড়ির মালিকদের উৎসাহ দিলে দূষণ কমবে বলে তাদের অভিমত৷ সেইসঙ্গে গাড়ির গতির উর্দ্ধসীমা আরও কমালেও দূষণ কমে যাবে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্দেশিকায় উল্লিখিত সব পথ অনুসরণ করলে আজ জার্মান সরকারকে এমন সংকটে পড়তে হতো না বলে মনে করেন সমালোচকরা৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা