তাঁরা বাঁচার মতো বাঁচতে জানেন
অনেকে হঠাৎই জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন, ভাবতে শুরু করেন, জীবনের সবই বুঝি অর্থহীন৷ ছবিঘরের এই মানুষগুলো তাঁদের ঠিক বিপরীত৷ বয়সে তাঁরা ‘বুড়ো’, তবে কাজে-কর্মে যে কোনো তরুণ-তরুণীকে তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো৷
১০৫ বছর বয়সে বিশ্বরেকর্ড
ফ্রান্সের রোব্যার মারশঁ-র বয়স এখন ১০৫৷সাইকেল চালিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন তিনি৷ এক ঘণ্টায় ২২ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার পেরিয়েছিন, যা এই বয়সে আর কেউ কোনোদিন পারেননি৷ তাঁর কাছে বিশ্বরেকর্ড অবশ্য নতুন কিছু নয়৷ একশ’র চেয়ে বেশি বয়সিদের মধ্যে এক ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রমের বিশ্বরেকর্ডও তাঁর দখলে৷ ২০১২ সালে এক ঘণ্টায় ২৬ দশমিক ৯২ কিলোমিটার গিয়ে যে রেকর্ডটি গড়েছিলেন, সেটি এখনো কেউ ভাঙতে পারেনি৷
সবচেয়ে বেশি বয়সি ম্যারাথনার
১০৪ বছর বয়সে ম্যারাথনে অংশ নিয়ে দৌড় শেষও করেছেন ইংল্যান্ড প্রবাসী ভারতীয় ফৌজা সিং৷ এভাবে সবচেয়ে বেশি বয়সে ম্যারাথন দৌড়ানোর বিশ্বরেকর্ডও গড়েছেন তিনি৷ শত বর্ষ পেরিয়েও ট্র্যাকে এভাবে ঝড় তোলেন বলে তাঁর নামই হয়ে গেছে, ‘টারব্যান্ড টরন্যাডো’ বা ‘পাগড়ি পরা ঘূর্ণিঝড়’৷
সবচেয়ে বেশি বয়সি ইয়োগা শিক্ষক
ফরাসি বংশোদ্ভূত ভারতীয় তাও পরশো-লিঞ্চের বয়স ৯৮ বছর৷ জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়েছেন অভিনয়, মডেলিং করে আর বলরুমে নেচে৷ কিন্তু ১৯৮২ সালে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর পর জীবনের অনেক কিছুই বদলে গেল৷ স্বামীর মৃত্যুর পর ওয়াইন ছাড়লেন, শুরু করলেন ইয়োগা শেখানো৷ ৩৪ বছর ধরে অসংখ্য মানুষকে শিখিয়েছেন যোগব্যায়াম৷ ইতিমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সি ইয়োগা শিক্ষক হিসেবে গিনেস বুকেও নাম উঠেছে তাঁর৷
‘বাপ কা বেটা’
তাঁর বাবা কেইজো মিউরা ছিলেন জাপানের বিখ্যাত স্কিয়িং শিক্ষক এবং পর্বতারোহী৷ ৭৭ বছর বয়সে কিলিমানজারোর চূড়ায় উঠে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি৷ উইচিরো মিউরা তাঁরই ছেলে৷ সে কারণে বাবার দেখানো পথে তিনি হয়েছেন পেশাদার স্কিয়ার৷ ২০০৩ সালে বাবার মতো পাহাড়ে উঠেও রেকর্ড গড়েছেন৷ ৭০ বছর বয়সে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন উইচিরো মিউরা৷ সবচেয়ে বেশি বয়সে এভারেস্টে ওঠার রেকর্ড সেটি৷
সবচেয়ে বেশি বয়সি মডেল
পোল্যান্ডের হেলেনা নোরোভিচ অভিনেত্রী থেকে হয়েছেন ফ্যাশন মডেল৷ ৮২ বছর বয়সেও উপভোগ করছেন কাজ৷ তিনিই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সি ফ্যাশন মডেল৷
শোক ভুলতে ‘বুড়ো’ বয়সে স্কুলে
নেপালের দুর্গা কামি ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতেন একদিন শিক্ষক হবেন৷ কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে লেখাপড়া করতে পারেননি৷ সেই দুঃখ ভোলার জন্য স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ছয় সন্তানের জনক এবং দশ নাতির দাদু হওয়ার পর৷ স্ত্রী মারা যাওয়ায় বড় বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন ৬৭ বছর বয়সি দুর্গা৷ এই শোক ভুলতেই স্কুলে যাওয়া শুরু৷ নাতির বয়সিদের সঙ্গে বসে দিব্যি এখন লেখাপড়া শিখছেন দুর্গা৷
বেশি বয়সে মা
ভারতের রাজো দেবী লোহান যে বয়সে মা হয়েছেন, সে বয়সে বেশির ভাগ নারী দাদি বা নানি হন৷ রাজো দেবী কত বছর বয়সে মা হয়েছেন অনুমান করতে পারবেন? ৭০ বছর বয়সে! তাঁর আগে এত বয়সে আর কেউ মা হয়েছেন বলে জানা যায়নি৷ অবশ্য সম্প্রতি আরেক ভারতীয় নারীও ছুঁয়ে ফেলেছেন তাঁকে৷ হরিয়ানা রাজ্যের দালজিন্দর কৌর-ও ৭০ বছর বয়সে মেয়ের মা হয়ে ছুঁয়েছেন সবচেয়ে বেশি বয়সে সন্তান জন্ম দেয়ার রেকর্ড৷ ছেলের নাম রেখেছেন আর্মান৷