ড. মুহাম্মদ ইউনূস: ‘গরিবের ব্যাংকার’ থেকে সরকারপ্রধান
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস৷ ‘গরিবের ব্যাংকার’ হিসেবে পরিচিত ড. ইউনূসের জীবনের নানা কথা থাকছে ছবিঘরে৷
জন্ম
১৯৪০ সালে চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জন্মগ্রহণ করেন৷
সবচেয়ে বড় প্রভাব মায়ের
সহায়তার জন্য বাড়ির দরজায় কড়া নাড়া সবাইকে তার মায়ের সাহায্য করার বিষয়টি তার জীবনে সবচেয়ে বড় প্রভাব রেখেছে বলে জানান ড. ইউনূস৷
পড়ালেখা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়ালেখা শেষে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গিয়েছিলেন৷ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশে ফেরত গিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন ড. ইউনূস৷
মানুষকে সাহায্য করার অনুপ্রেরণা
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হলে ড. ইউনূস কিছু করতে উদ্যোগী হন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার চারদিকে দারিদ্র্য ছিল৷ আমি এ থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখতে পারিনি৷ এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে অর্থনীতির তত্ত্ব পড়ানো আমার কাছে কঠিন মনে হয়েছিল... আমার চারপাশের মানুষদের আমি সহায়তা করতে চেয়েছিলাম৷’’
গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা
গরিব মানুষকে ঋণ দেওয়ার কয়েক বছরের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষে ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠান করেন ড. ইউনূস৷ ২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকের গ্রাহকের সংখ্যা ৯০ লাখের বেশি৷ এর মধ্যে ৯৭ শতাংশের বেশি নারী৷
নোবেল জয়
ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ২০০৬ সালে ড. ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান৷
রাজনীতির চেষ্টা ও সরে আসা
২০০৭ সালে ‘নাগরিক শক্তি’ নামে একটি দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন ড. ইউনূস৷ তবে এর কয়েকদিন পর দল গঠনের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসেন৷ সেইসময় জাতির উদ্দেশ্যে লেখা এক চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘যাদেরকে সঙ্গে পেলে দল গঠন করে জনগণের সামনে সবল ও উজ্জ্বল বিকল্প রাখা সম্ভব হতো তাদের আমি পাচ্ছি না৷ আর যারা রাজনৈতিক দলে আছেন তারা দল ছেড়ে আসবেন না৷’’
গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়া
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনার আক্রোশের শিকার হতে হয় নোবেল জয়ী এই অর্থনীতিবিদকে৷ গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ এছাড়া তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলাও করা হয়৷
সামাজিক ব্যবসা ও উদ্যোক্তা তৈরির আন্দোলন
মাইক্রোসফটের বিল গেটস এবং মুহাম্মদ ইউনূস সামাজিক ব্যবসার উপায়গুলোকে বিশ্বব্যাপী কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন৷
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম
২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ড. ইউনূসকে দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম’ প্রদান করেন৷
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা
২০২৪ সালের ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস৷