1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রেন দুর্ঘটনা: মন্ত্রী বলছেন অন্তর্ঘাত, সিবিআই তদন্ত দাবি

৫ জুন ২০২৩

ওড়িশায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা নিয়ে সিবিআই তদন্ত চাইলো রেলবোর্ড। রেলমন্ত্রীর ইঙ্গিত, অন্তর্ঘাত হয়েছে।

https://p.dw.com/p/4SBbf
এই দুর্ঘটনার পিছনে অন্তর্ঘাত?
এই দুর্ঘটনার পিছনে অন্তর্ঘাত?ছবি: ADNAN ABIDI/REUTERS

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব প্রথমে বলেছিলেন,  ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমে গোলমালের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু রোববার সন্ধ্যায় তিনি জানালেন, এই গোলযোগের পিছনে মানুষ আছে। তাই সবদিক বিবেচনা করে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছে রেলবোর্ড। রেলমন্ত্রীর , এই কাজ যারা করেছে, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে যান্ত্রিক ত্রুটি নয়, সরাসরি অন্তর্ঘাতের কথাই বলছেন রেলমন্ত্রী। দাবি

অশ্বিনীর দাবি, ''পয়েন্ট মেশিনের সেটিং পরিবর্তন করা হয়েছিল। কারা করেছে, কীভাবে করেছে তা তদন্তের পরে বোঝা যাবে। আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, যারা এই অপরাধ করেছে, তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। ''

রোববার রেলমন্ত্রী ও রেলবোর্ডের তরফে যা বলা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট, তারা যান্ত্রিক ত্রুটির কথা থেকে সরে আসছেন। অন্তর্ঘাতের কথা বলছেন। যান্ত্রিক ত্রুটি হলে তার দায় রেলের উপরই পড়ে। অন্তর্ঘাত হলে রেল নিজের দায় অনেকটাই এড়াতে পারে বলে বিরোধী নেতারা মনে করছেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে সাবেক রেলমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্মন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন, ট্রেন যাতে দুর্ঘটনায় না পড়ে, তার জন্য কবচ সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। তার আমলে এই কাজ শুরু হয়। কিন্তু এই লাইনের ট্রেনে কবচ ব্যবস্থা ছিল না। মমতার দাবি ছিল, কবচ থাকলে এরকম দুর্ঘটনা হত না।

কিন্তু রেলমন্ত্রী ও রেলবোর্ড তারপর থেকে বারবার বোঝাবার চেষ্টা করেছে, কবচ থাকলেও এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায় না।  রেলবোর্ডের সদস্য জয়া বর্মা সিনহা বলেছেন, ''আপনার গাড়ির সামনে হঠাৎ যদি একটা বোল্ডার এসে পড়ে, তাহলে কি গাড়ি দুর্ঘটনা এড়ানো য়াবে? রেলের ক্ষেত্রেও কিছু সমংয় দুর্ঘটনা এড়ানো যায় না। কবচ থাকলেও নয়।''

তবে তিনি জানিয়েছেন, ''সিগন্যালিং ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল। তবে আরো তদন্তের পরই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে।''

কীভাবে দুর্ঘটনা হলো?

জয়া বর্মা সিনহা জানিয়েছেন, স্টেশনে চারটি লাইন আছে। দুইটি মেন লাইন। আর প্ল্যাটফর্মের দুই পাশে দুইটি লুপ লাইন। সেখানে লোহা-ভর্তি দুইটি মালগাড়ি দাঁড়িয়েছিল। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ১২৮ কিলোমিটার বেগে আসছিল। আর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস যাচ্ছিল ১২৬ কিলোমিটার বেগে। এই লাইনে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বেগে ট্রেন চলতে পারে। তাই ট্রেন দুইটি গতিসীমার মধ্যে ছিল।

সিগন্যাল ইন্টারলকিংয়ে সমস্যার জন্য করমণ্ডল মালগাড়িতে ধাক্কা মারে এবং তার উপর চড়ে যায়। প্রচুর কামরা লাইনচ্যূত হয়ে যায়। কিছু কামরা পাশের লাইনে গিয়ে পড়ে, যেখানে সুপারপাস্ট এক্সপ্রেস আসছিল। সেই কামরায় ধাক্কা কেলে সুপারফাস্ট লাইনচ্যূত হয়।

''রিপোর্ট থাকা সত্ত্বেও''

কংগ্রেসের দাবি, রিপোর্ট ও নোট থাকা সত্ত্বেও রেলমন্ত্রণালয় এখানে সিগন্য়ালিং ব্যবস্থার  দিকে নজর দেয়নি। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা রেলের একটি নোট দেখিয়ে বলেন, ''এই নোট রেলমন্ত্রীর কাছেও ছিল। তিনি যদি নোটকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতেন, তাহলে দুর্ঘটনা ঘটত না। ''

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন কাড়গের নির্দেশে সাবেক রেলপ্রতিমন্ত্রী ও বর্তমানে দলের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী ঘটনাস্থলে যান। অধীর বলেছেন, ''বন্দে ভারত চালাব, বুলেট ট্রেন চালাব, কিন্তু লাইনের রক্ষণাবেক্ষণে জোর দেব না, সুরক্ষায় জোর দেব না, তা হয় না। প্রধানমন্ত্রী শুধু পতাকা নেড়ে একের পর এক ট্রেন উদ্বোধন করে চলেছেন।''

পবন খেরার দাবি, ''২০১৭ থেকে ২০২১ পর্যন্ত এক হাজার ১২৭টি ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। সিএজি রিপোর্ট বলছে, মোদী সরকার প্রতি বছর লাইন নবীকরণের ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ কম করেছে।''

বিজেপি-র দাবি

বিজেপি-র বক্তব্য, কংগ্রেস রেলমন্ত্রীর ইস্তফা চাইছে, অথচ এই রেলমন্ত্রী দুর্ঘটনার পর সমানে ঘটনাস্থলে আচেন। সবকিছু রেকর্ড সময়ে সরানো হয়েছে। লাইন পাতা হয়েছে। এখন সেখানে ট্রেন চলছে। তারা রেলমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেছে।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এনডিটিভি)