1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুস

১৪ নভেম্বর ২০১১

প্রতি বছর দুটি জার্মান সংস্থা স্টিফটেরফ্যারবান্ড এবং ডিএএডি জার্মানির সবচেয়ে সফল বিশ্ববিদ্যালয়টিকে পুরস্কৃত করে৷ এবছর ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল হোখশুলে' নামের এই পুরস্কার পেল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুস৷

https://p.dw.com/p/13A7d
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুসের ছাত্রছাত্রীরাছবি: BTU Cottbus

এ মাসের সাত তারিখে বার্লিনে টেকনিক্যাল ইউনির্ভাসিটি কটবুসের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষকতা ছাড়াও জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ের ব়্যাংকিং-এ বেশ এগিয়ে টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুস৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী অন্য আরেকটি দেশে যাচ্ছে সেমেস্টার এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে৷ অন্তত ১৫ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী হচ্ছে বিদেশি৷এর পাশাপাশি রয়েছে শিক্ষাদানের উঁচুমান৷ প্রতিটি সেমেস্টারে প্রায় ৪০ শতাংশ ক্লাশ নেয়া হয় ইংরেজিতে৷ ‘শিক্ষকতার আন্তর্জাতিক মাত্রা' এই শ্লোগান নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুস৷ এই বছর ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিল৷ তবে শেষ পর্যন্ত টিকেছে মাত্র পাঁচটি৷ এবং জিতেছে মাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয়৷

চীনের এক ছাত্র জানাল: ‘‘আমি চীন থেকে এসেছি৷ কেন আমি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুসে পড়াশোনা করছি? কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়টি তার স্থাপত্য বিভাগের জন্য সুনাম কুড়িয়েছে৷''

আফ্রিকার এক ছাত্রীর মন্তব্য: ‘‘আমি এসেছি ক্যামেরুন থেকে৷ আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল টেকনলজি নিয়ে পড়াশোনা করছি৷'' আর একজন ছাত্র জানাল: ‘‘আমি এসেছি ইউক্রেন থেকে৷ আমি মেশিন তৈরির বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছি৷''

Brandenburgische Technische Universität Cottbus Flash-Galerie
নানা দেশের ছাত্রছাত্রীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেছবি: Jochen Schöttner

ইন্টারনেটের সাহায্যে টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুস পরিচিতি পেয়েছে জার্মানির গণ্ডি ছাড়িয়ে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে৷ এছাড়া বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীরাও নিজেদের দেশে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে পরিচিত করছে৷ ইঞ্জিনিয়ারিং বা টেকনলজি কেউ পড়তে চাইলে সাবই এক বাক্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বলছে৷ অথচ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুসের বয়স মাত্র কুড়ি বছর৷ শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রীদের আকৃষ্ট করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি৷ পড়াশোনা, গবেষণা, ক্যাম্পাস লাইফ, গ্রুপ স্টাডিজ – কোন কিছুতেই পিছিয়ে নেই বিশ্ববিদ্যালয়টি৷ এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে প্রায় সাত হাজার ছাত্র-ছাত্রী৷ এবং প্রতি দশজনের মধ্যে একজন বিদেশি ৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অফিসের দায়িত্বে রয়েছেন নিনা ভোলফাইল৷ তিনি বলেন: ‘‘টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুসের জন্য আন্তর্জাতিক মান ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, প্রয়োজনীয়৷ এটাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল বৈশিষ্ট্য৷ আমরা শুরু থেকেই ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মত বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছি৷ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় আটটি বিষয় পুরোপুরি ইংরেজি মাধ্যমে পড়া যায়৷ এবং প্রায় এক তৃতীয়াংশ ছাত্র-ছাত্রীই এই বিষয়গুলো নিয়ে পড়াশোনা করছে৷''

বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে নিনা ভোলফাইল যোগাযোগ রাখেন৷ ভর্তির জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ আর যে সব বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী জার্মান জানে না তাদের বিভিন্ন জার্মান ভাষা শিক্ষার কোর্সেও ভর্তির ব্যাপারে সাহায্য করে থাকেন তিনি৷ তবে সেই কোর্সে শুধু জার্মান ভাষাই শেখানো হয় না৷ জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়ম-নীতিও শেখানো হয়৷ ‘জার্মান ভাষা শিক্ষা' বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন ইয়োখেন শটনার৷ তিনি বলেন: ‘‘ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার এক সংস্কৃতির জন্য প্রস্তুত করাও আমাদের লক্ষ্য৷ যেমন ধরুন তারা গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে খোলামেলা পরিবেশে কাজ করবে, সহযোগী হবে বিভিন্ন প্রকল্পে৷ তর্কবিতর্কের মধ্য দিয়ে কীভাবে তারা জ্ঞানের চর্চা করবে, সেটা তারা শিখবে৷ অর্থাৎ শিক্ষক হলেন এক সহযোগী যিনি সাহায্য সমর্থন যোগাবেন এবং ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞানের ভাণ্ডারটাকে আবিষ্কার করতে দেবেন৷''

তবে এশিয়ার ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ছাত্র-ছাত্রী ছাড়াও কটবুসের সাধারণ মানুষও এগিয়ে এসেছে৷ যে কাউকে প্রশ্ন করলেই উত্তর মেলে৷ সবাই সবার কাছ থেকে কিছু না কিছু শিখতে পারে৷ ছাত্র-ছাত্রীদের সানন্দে সাহায্য করে পথচারীরা, সাধারণ মানুষরা৷ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুস'এর প্রেসিডেন্ট ভালথার ক্রিস্টফ সিমেরলি জানান: ‘‘আমাদের দর্শনটাকে এক কথায় বলা যায় - আমরা হলাম একটি ল্যাবরেটরির মত৷ আর এই ল্যাবরেটরিতে আমদের কাজ হলো আঞ্চলিক সমস্যাগুলোর এমন সমাধান খুঁজে বের করা যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রযুক্ত হতে পারে৷''

টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কটবুস নগর সংস্কার, আবর্জনা কমানোর মত বিষয় নিয়েও গবেষণা করছে৷ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ডিসপোজাল বিষয়টির চাহিদা বাড়ছে, লক্ষ্য রাখা হয়েছে সেদিকে৷ এর পাশাপাশি রয়েছে, আবহাওয়া ও পরিবেশ নিয়ে গবেষণা, জ্বালানি শক্তির পরিমিত ব্যবহার মত বিষয়৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক